v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-08-25 14:37:14    
নারীদেরকে শিক্ষাদান ও যত্ন করা এইডস প্রতিরোধ করার চাবিকাঠি

cri
    সারা বিশ্বে ৪ কোটি এইডসের ভাইরাসবহনকারী দের মধ্যে অর্ধেক হলেন নারী । নারীরা সহজে এইডসের ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কারণ অনেক । কিন্তু এর এক প্রধান কারণ হল রক্ষাবিহীন যৌন আচরণ । ১৬তম আন্তর্জাতিক এইডস সম্মেলন সম্প্রতি কানাডার টরেন্টো শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলেনে অংশগ্রহণকারীরা পরপর উল্লেখ করেছেন যে,নারীদের শিক্ষাদান ও যত্ন করা এবং নারীদের অবস্থান উন্নত করা কার্যকরভাবে এইডস প্রতিরোধকরার চাবিকাঠি ।

    সম্মেলনে কানাডীয়ান এক্শন চিকিত্সা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান লুইস বিন্টার উল্লেখ করেছেন, সাবা বিশ্বের এইডস রোগ প্রতিরোধমুলক নীতিতে যুব নারীদের শিক্ষাদান করার কথা অন্তর্ভূক্ত থাকতে হবে ।

    নিজেরা সম্ভবত এইডস রোগে আক্রান্ত হওয়ার বিপদে রয়েছে বলে কিছু নারী জানলেও লিঙ্গের বৈষম্য, অসম অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থানের কারণে যৌনজীবনে পুরুষের তুলনায় নারীরা দুর্বলঅবস্থানে আছেন। তাদের স্বয়ংভাবে আত্মরক্ষারপদ্ধতি বেছে নেয়ার অধিকার নেই ।

    লুইস বিন্টার যে "আত্মরক্ষার অধিকার" কথাটা বলেছেন তার অর্থ হল এই যে, যৌন তত্পরতার সময়ে কিছু নারী নিজেদের যৌন সাথীকে কন্ডম ব্যবহার করার অনুরোধ করতে পারেন না বলে যৌন-স্পর্শে নারীরা এইডসের ভাইরাসে আক্রান্ত হন । সারা বিশ্বে এইডস ছড়িয়ে পড়ার প্রক্রিয়ায় এই অবস্থা অত্যন্ত ব্যাপক। যার ফলে এইডসরোগীর মায়ের কাছ থেকে বহু নবাগত শিশুরাও এইডসরোগে আক্রান্ত হয় ।

     সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনের তহবিল সংস্থা বরাবরই বিশ্বের অনুন্নত দেশগুলোর কাছে এইডস প্রতিরোধমূলক ওষুধ ও প্রাসঙ্গিক সমর্থন দিয়ে আসছে । ক্লিন্টনও মনে করেন যে, এইডস প্রতিরোধ করার এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল নারীদেরকে ক্ষমতাদান করা ।

    তিনি বলেছেন , এটা একটা ক্ষমতার সমস্যা । বিশেষ করে আফ্রিকান দেশগুলোতে নারীদের ক্ষমতা যত বেশি হবে এইডস প্রতিরোধমূলক শিক্ষাদান প্রকল্প ততই কাযকর হবে এবং যার ফলে এসব দেশে এইডসে আক্রান্ত হওয়ার হার ততই কমতে পারে ।

    বর্তমানে নারী এইডসরোগীর সংখ্যা সারা বিশ্বের এইডসরোগী ও ভাইরাসবহনকারীর মোট সংখ্যার অর্ধেকে দাঁড়িয়েছে । বিশ্বে যুবতী নারী ও কমবয়সী মেয়েদের এইডসে আক্রান্ত হওয়ার হার সমবয়সী পুরুষদের চেয়ে সাড়ে তিন গুণ বেশি । চার ভাগের তিন ভাগ নারী রোগীরা হলেন ১৫ থেকে ২৪ পর্যন্ত যুবতী নারী ।

    শেরী যুক্তরাষ্ট্রের এক এইডসরোগী । কোনো আত্মরক্ষমূলকব্যবস্থা না নেয়ার কারণে তিনি এইডসরোগে আক্রান্ত হন । তার পর তিনি অন্যান্যকে এইডসের ভাইরাস ছড়িয়ে দেয়ার এক উত্সে পরিণত হন। এ সম্পর্কে তিনি বলেছেন,আমি এইডস রোগে আক্রান্ত হয়েছি কথাটা শুনে আমি ব্যাপারটার সত্যতা স্বীকার করতে চাই না । আমি অন্যের সঙ্গে যৌন তত্পরতা বজায় রেখেছি । আমি একজন এইডসরোগী এই সত্যতা আমি কমপক্ষে অর্ধেক যৌন সাথীর কাছে গোপন রেখেছি ।

    এইডসের ভাইরাস প্রতিরোধে নারীদের সাবভৌমত্ব জোরদার করা এবং কাযকরভাবে ভাইরাসের বিস্তার রোধ করার জন্যে বিভিন্ন দেশের বৈজ্ঞানিক মহল একধরণের মাইক্র-জীবানু নাশক ওষুধ তৈরীর কাজ নিয়ে গবেষণা করে যাচ্ছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মানদন্ড অনুযায়ী মাইক্র-জীবানু নাশ করার সঙ্গে সঙ্গে এই ওষুধের গর্ভনিবারণের শক্তিও থাকতে হবে । কিন্তু এপর্যন্ত এ ধরণের ওষুধের গবেষণায় তেমন অগ্রগতি হয়নি ।

    বিশ্বে প্রথম ধনি, যুক্তরাষ্ট্রের মাইক্র সফ্ট ওয়েল কোম্পানির প্রেসিডেন্ট বিল গেটস দীর্ঘকাল ধরে এইডস প্রতিরোধে আর্থিক সহায়তা করে আসছেন । তিনি সম্মেলনে বলেছেন, বৈজ্ঞানিকরা এক্ষেত্রের গবেষণা দ্রুততর করবেন বলে আশা করি । তিনি এখাতে অর্থ বরাদ্দ প্রসঙ্গে বলেছেন , এই ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক গবেষণার উদ্ভাবনে তিনি আরও বেশি অর্থবিনিয়োগ করবেন ।

    তিনি বলেছেন, এইডস রোগ নারীদের উপর ছড়িয়ে পড়াকে রোধ করার জন্যে বৈজ্ঞানিক মহল যততাড়াতাড়ি সম্ভব নারীদের ব্যবহার্যমাইক্র জীবাণু নাশক ওষুধ বা খাওয়ার ওষুধ তৈরী করবেন বলে আমরা আহবান জানাই । আমরা আশা করি, এ ধরণের ওষুধ এইডস রোধে এক নতুন অগ্রগতি নিয়ে আসবে। বিশেষ করে নিজদের জীবন বাঁচানোর জন্যে কন্ডম ব্যবহার করা নারীদের যৌন-সাথীর অনুমোদন পাওয়া একান্ত প্রয়োজন নেই ।

    বলাবাহুল্য,এইডস প্রতিরোধ করতে চাইলে নানা ধরণের প্রচেষ্টা দরকার। যেমন বৈজ্ঞানিক গবেষণা উন্নত করা ,এইডস সম্পর্কে সমাজের জ্ঞানবোধ জোরদার করা এবং এইডসরোগীদের প্রতি বৈষম্য দূরীকরণ করা প্রভৃতি সমস্যা এই সব প্রচেষ্টার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে হবে । এটা একটা অত্যন্ত জটিল ও কঠিন প্রক্রিয়া । জাতিসংঘের আফ্রিকায় এইডস বিষয়ক বিশেষদূত স্টিফেন লিউইস মনে করেন যে,নারীরা সত্যিকারভাবে তত্পর হয়ে উঠে দাঁড়ালেই কেবল মানবজাতি এইডসের সৃষ্ট বিপদকে পরাজিত করতে পারবে ।

    তিনি বলেছেন, আমি মনে করি ,এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল এই যে, সারা বিশ্বের নারীদের প্রতিনিধিত্ব করার এক নারী সংস্থা প্রতিষ্ঠা করা । আফ্রিকা হোক , শিল্পোন্নত দেশ হোক, এই সংস্থাকে জাতিসংঘের নামে কাজ করতে হবে ।যদি নারীরা ততপর হয়ে না উঠেন, তাহলে আমরা কোনদিনই এইডস পরাজিত করতে সক্ষম হব না ।