এখন ইন্টানেটে ব্লোগ এই শব্দ খুবই জনপ্রিয় । আমি বিশ্বাস করি অনেক শ্রোতা বন্ধুর নিজের ব্লোগও আছে । তা হল ইন্টারনেটে নিজের একটি ওয়েবসাইট , সেখানে আমরা ইচ্ছা করলে নিজের চিন্তাধারনা , নিজের গল্প সহ যে কোনো জিনিস লিখতে পারি , এটা বর্তমানের এক রকমের নতুন যোগাযোগের পদ্ধতি । চীনে কিছু কিছু বিদেশিরা চীনা ভাষা শেখার মাধ্যমে চীনা ভাষায় নিজের ব্লোগ খুলেছেন । এর মধ্যে এক বিদেশি ইন্টারনেটে খুবই জনপ্রিয় , তার নাম জন ।
ছ'বছর আগে জন যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনে এসেছেন । তার একটি চীনা নাম আছে , তা হল ভান জি । যুক্তরাষ্ট্রে তিনি চীনা ভাষা শিখতে শুরু করেছেন । পরে ভাষা বিষয়ক মাস্টার ডিগ্রী পড়ার জন্য তিনি চীনে এসেছেন । তার নিজের ওয়েবসাইট আছে , তা ছাড়া তিনি চীনা ভাষা দিয়ে নিজের জন্য চীনা ভাষায় ব্লোগ খুলেছেন । জনের সঙ্গে গল্প করার সময় যদি কেউ তাঁর মুখ না দেখে , তাহলে কেউ তাকে একজন বিদেশি মনে করবে না । ছ'বছরের চীনা জীবনের মাধ্যমে তিনি ভালো চীনা ভাষা শিখেছেন ।
জন কেন চীনা ভাষাকে এত ভালোবাসেন ? তিনি বলেন , চীনা ভাষার স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে আকর্ষণীয় ক্ষমতা আছে । চীনা ভাষা শেখা নিজের জন্যও একটি চ্যালেন্জ এবং লেখার প্রক্রিয়া খুবই মজা । চীনা ভাষা চর্চা করার জন্য তিনি এই চীনা ভাষা ব্লোগ খুলেছে ।
প্রথমে তিনি এই ব্লোগে চীনা ভাষা দিয়ে মজার মজার কিছু ছোট গল্প লিখতে চান । তবে অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি জেনেছেন যে , চীনা ভাষা দিয়ে প্রবন্ধ লেখা পড়ার চেয়ে অনেক কঠিন । খুব ব্যস্ত এবং ব্লোগে আরো বেশি নতুন প্রবন্ধ প্রকাশ করার জন্য তিনি ছোট ছোট গল্প লেখেন । তবে এই ব্লোগের মাধ্যমে তিনি অনেক চীনা ভাষা প্রেমী বন্ধু পেয়েছেন । তাদের মধ্যে বিদেশি আছে , আছে চীনারাও । তারা মাঝে মাঝে ইন্টারনেটে মত বিনিময় করেন । কিছু উষ্ণহৃদয় বন্ধু তার প্রবন্ধের কিছু ভুল শুদ্ধ করেন । এর জন্য জন খুবই আনন্দিত । তবে জন আশা করেন নিজের প্রবন্ধ ধীরে ধীরে আরো সুন্দর হবে । তিনি বলেন , আমার ব্লোগ এখনও একটু সহজ , আমার জন্য এখন বেশি বই পড়া খুবই প্রয়োজনীয় । বিশেষ করে চীনের কিছু উপনাস ইত্যাদি , তা আমার চীনা ভাষার মান উন্নয়নের জন্য সহায়ক হবে ।
রালফ পাফিক্ট একজন ব্রিটিশ যুবক । তিনিও একটি ব্লোগ স্থাপন করেছেন । ১৮ বয়সে তিনি চীনের কুয়াং চৌতে এক বছরের ইংরেজী ভাষার শিক্ষক ছিলেন । তখন থেকে তিনি চীনা ভাষা শিখতে শুরু করেছেন । এ থেকে তিনি আবিস্কার করেছেন যে তিনি চীনা ভাষা উপলব্ধি করতে খুবই ইচ্ছুক । পাফিক্ট বলেন , তিনি মনে করেন চীনা অক্ষর ও চীনা ভাষার ইতিহাস খুবই মজার । তিনি প্রত্যেক চীনা অক্ষরের পেছনের অর্থ ও গল্প জানতে চান । তাঁর চীনা ভাষা বলতে ও শুনতেও ভালো লাগে । তা ইউরোপীয় ভাষার চেয়ে একদম আলাদা ।
যদিও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রী থেকে ডক্টরেট ডিগ্রী পর্যন্ত তিনি ইংরেজী সাহিত্য পড়েন , তবে তিনি কখনও চীনা ভাষা শিখতে বন্ধ করেন নি । অনেক আগে পাফিক্ট নিজের ব্লোগ খুলেছেন । সম্প্রতি তিনি চীনা ভাষা দিয়ে লিখতে শুরু করেছেন । যদিও চীনা ভাষা দিয়ে প্রবন্ধ লেখা আগের চেয়ে বেশ কঠিন , যেমন বেশি চীনা শব্দ জানেন না , সবসময় অভিধান দেখতে হবে , চীনা ভাষার ব্যাকরণ ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারেন না , তাই মাঝে মাঝে ভুল হয় । তবে তিনি এর মাধ্যমে অনেক আনন্দ ও অগ্রগতিও অর্জন করেছেন । ব্লোগের মাধ্যমে তিনি আধুনিক চীনের উন্নয়ন ও চীনাদের চিন্তাধারণা উপলব্ধি করতে পারবেন । তিনি সবসময় ইন্টারনেটের মাধ্যমে বন্ধুদের সঙ্গে চীন ও ব্রিটেনের সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন ।
পাফিক্ট বলেন , তার জন্য চীনের সংস্কৃতি খুবই আকর্ষণীয় । এখন বিদেশে যেতে অনেক সুবিধা । অন্যান্য দেশের লেকেরা চীনে এসে ভ্রমণ করতে পারবেন । কিছু কিছু লোক তাঁর মত চীনকে দেখলে তারাও চীনকে ভালোবাসতে শুরু করবে ।
সংবাদদাতা ইন্টারনেটে খুঁজে কয়েক ডজন বিদেশিদের চীনা ভাষার ব্লোগ দেখেছে । তারা সবাই চীনা ভাষা শিখতে খুবই আগ্রহী । যদিও এসব ব্লোগের সংখ্যা বেশি নয় , তবে অনেক মানুষ তাদের সমর্থন করেন এবং সবসময় তাদের ব্লোগ দেখেন । এই সব বিদেশিদের ব্লোগ চীনা ভাষা জনপ্রিয় করার জন্যও খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে । আমরা বিশ্বাস করি ভবিষ্যতে এমন ব্লোগ আরো বেশি হবে ।
|