v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-08-22 15:56:54    
ছান ইয়াং জেলার সংখ্যালঘু জাতির ঐতিহ্যিক সংস্কৃতি রক্ষার প্রচেষ্টা

cri
    এ বছর চীন সরকার ঘোষণা করেছে , প্রতি বছরের জুন মাসের দ্বিতীয় শনিবার চীনের সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার দিবস । চীনে মোট ৫৬টি জাতি আছে , প্রতিটি জাতির আছে নিজস্ব বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ঐতিহ্যিক সংস্কৃতি । সম্প্রতি সি আর আইয়ের সংবাদদাতা মধ্য চীনের হু পেই প্রদেশের ছান ইয়ান থু চিয়া জাতির স্বায়তশাসিত জেলায় গিয়েছেন , সেখানে তারা থু চিয়া জাতির সংস্কৃতি সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন এবং স্থানীয় সরকারের ঐতিহ্যিক সংস্কৃতি রক্ষার ব্যবস্থা সম্বন্ধে খোঁজখবর নিয়েছেন।

    চি ছিউ মহকুমা হলো ছান ইয়াং থুচি জাতির স্বায়তশাসিত জেলার একটি ছোট মহকুমা । এই মহকুমায় প্রচলিত এক বৈশিষ্ট্যময় গানের নাম ' সাইয়েলহো '। ' সাইয়েলহো ' গান করা এই মহকুমার থুচিয়া জাতির অধিবাসীদের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের এক রীতি । পরিবারের সদস্য বা আত্মীয়স্বজনেরমৃত্যুর পর পরিবার-পরিজন ও আত্মীয়স্বজন কাঁদেন না , বরং জোরে গান ও নাচ করার মাধ্যমে মনের শোক ও স্মৃতি প্রকাশ করেন । জানা গেছে , থুচিয়া জাতি অধ্যুষিত অঞ্চলে এই রীতি প্রচলিত হওয়ার ইতিহাস কয়েক হাজার বছরের । ছান ইয়াং জেলা এক পাহাড়ী অঞ্চল , স্থানীয় অধিবাসীরা বিছিন্নভাবে বাস করেন ।

    সাইয়েলহো থু চিয়া জাতির ঐতিহ্যিক সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্বকারী তিনটি বৈশিষ্ট্যের অন্যতম । বাকি দুটি হলো লোকসংগীত ও নান সুর । থুচিয়া জাতির লোকসংগীত অনেকটা উচ্চাঙ্গ সংগীতের মতো , গানের কথাগুলো স্থানীয় অধিবাসীর জীবন প্রতিফলিত হয় , নান সুর শুনতে মিষ্টি ।

    অন্যান্য অবৈষয়িক লোকসংস্কৃতির মতো থু চিয়া জাতির সংস্কৃতির এই তিনটি বৈশিষ্ট্যময় রত্নও বিলুপ্তপ্রায় অবস্থায় ছিল । এখনও এ গুলো বিলুপ্ত হওয়ার আশংকা আছে । গ্রামের অল্পবয়সীরা শহরে কাজ করতে যান , তাই ঐতিহ্যিক সংস্কৃতি উত্তরাধিকার সূত্রে গ্রহণ করা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে । তা ছাড়া , বিভিন্ন ধরনের বহিরাগত সংস্কৃতি ও আধুনিক শিল্পকলা ঐতিহ্যিক সংস্কৃতির প্রসারকে বাধা দেয় । গ্রামবাসীর জীবনের উন্নতি ঐতিহ্যিক সংস্কৃতির পরিবেশের ক্ষতি করেছে । সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন সরকার লোকসংস্কৃতি ও শিল্পকলাকে গুরুত্ব দেয়ার অনেক ব্যবস্থা নিয়েছে । ছান ইয়ান জেলা চি ছিউসহ মোট নয়টি ঐতিহ্যিক সংস্কৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছে। সংখ্যালঘু জাতির লোকশিল্পরূপ রক্ষার জন্য সরকার অথর্বরাদ্দ করে লোকসংগীত রেকর্ডিং , চিত্রায়ন ও প্রবন্ধ লেখানো ছাড়াও পুরস্কারের ব্যবস্থাও নিয়েছে । স্থানীয় স্কুলগুলো লোকশিল্পীদের স্কুলের গানের শিক্ষক নিয়োগ করেছে । লোকশিল্প রক্ষার এই সব কার্যকর ব্যবস্থার কল্যাণে ছান ইয়ান জেলা ঐতিহ্যিক সংস্কৃতি রক্ষায় সাফল্য অর্জন করেছে । চীনের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ছান ইয়ান জেলাকে চীনের লোকশিল্প রক্ষার অগ্রনী জেলার আখ্যা দিয়েছে । কিছু দিন আগে এই জেলার ' সাইয়েলহো ' সুরকে চীনের অবস্তগত সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে ।

    লোকসংস্কৃতি ছাড়া থুচিয়া জাতির উত্পত্তিস্থান হিসেবে ছান ইয়ান জেলায় পুরাকীর্তির সংখ্যাও বেশি । বিখ্যাত সিয়ান লু সি পুরানিদর্শন তিন-চার হাজার বছর আগের ব্রোঞ্জ সংস্কৃতি প্রতিফলিত করেছে । গত শতাব্দীর শেষ দিকে এই জেলায় মাটির নীচে প্রায় দশ হাজার মাটি , পাথর , হাড় ও ব্রোঞ্জের পাত্র উদ্ধার করা হয়েছে । আমাদের সংবাদদাতা এই জেলার যাদুঘরের প্রধান মিঃ রো চিয়েন পির একটি সাক্ষাত্কার নিয়েছেন । রো চিয়েন পিং বলেছেন , আমাদের যাদুঘরে ৩৬ হাজারটি বিভিন্ন ধরনের পাত্র, হাতিয়ার ও দৈনন্দিনজীবনে ব্যবহার্য জিনিসপত্রের নমুনা আছে । ছিং চিয়াং নদীর কেহোইয়েন জলবিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের সময় এই সব পুরাকীর্তি উদ্ধার করা হয়েছে । এই সব পুরাকীর্তি থুচিয়া জাতির সাংস্কৃতিক উত্পত্তি ও রীতিনীতি গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যুগিয়েছে ।

    ছান ইয়ান জেলা চীনের হু পেই প্রদেশের পুরাকীর্তি সংরক্ষণ ক্ষেত্রে একটি অগ্রনী জেলা , হু পেই প্রদেশ চীনের প্রাচীন সংস্কৃতির অন্যতম উত্পত্তি স্থান । চীনের খৃষ্টপূর্ব অষ্টম শতাব্দী থেকে খৃষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দী পর্যন্ত ৮ শ' বছর স্থায়ী ইতিহাসে প্রাচীনকালের ছু রাজ্য এই স্থানে ব্রোঞ্জপাত্র , ল্যাক্যার পাত্র , সাহিত্য ও সংগীতসহ উজ্জ্বল সংস্কৃতি সৃষ্টি করেছে । চীনের ইতিহাসের প্রথম কবি ছু ইউয়েন ও তার রচিত ' ছুছি ' চীনের সাহিত্যের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করেছে ।

    থুচিয়া জাতি ঐতিহ্যিক সংস্কৃতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য—থুচিয়া জাতির লোকসংগীত উল্লেখযোগ্য। থুচিয়া জাতির সংস্কৃতির অন্যতম উত্পত্তি স্থান—উলোচুলি পাহাড়ের একটি রেস্তোরাঁর মালিক লিউ খাই নান অতিথিদের জন্য গানটি গেয়েছেন । এই গান একটি প্রেমের গান , গানের কথাগুলো হলোঃ বাসায় আমি একা , দুপুরে খাওয়া শেষ করে বাইরে বেড়াতে যাই । তিনবোনই আমি পছন্দ করি । বড় বোন দেখতে সুন্দর , মেঝোটি সুন্দর , ছোট মেয়ে আমার প্রিয় , আমার ভয় হয় ও আমাকে গালি দেয় ।