v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-08-22 15:43:13    
ইসরাইল কেন একটানাভাবে ফিলিস্তিনী পদস্থ কমকর্তাদের গ্রেফতার করছে

cri
    সম্প্রতি ইসরাইল একটানাভাবে ফিলিস্তিনের হামাসের স্বশাসিত সরকার বা আইন সভার বেশ কয়েকজন পদস্থ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করেছে । তাদের মধ্যে রয়েছেন ফিলিস্তিনের আইন প্রণয়ন সভার চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ আল-দওয়েক ও মহাসচিব মাহমুদ আল-রামাহী এবং স্বশাসিত সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী নাসের এল-দিন আল-শায়ের । ইসরাইল কেন এত ঔদ্ধত্যের সংগে ফিলিস্তিনের পদস্থ কমকর্তাদের গ্রেফতার করছে ?

    প্রথমত এটা হামাস সরকারের ওপর ইসরাইলের অনুসৃত আঘাত হানার নীতির এক ধারাবাহিক পদক্ষেপ । হামাস এ বছর ফিলিস্তিনের আইন প্রণয়ন সভার নির্বাচনে জয়লাভ করে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর অনমনীয় নীতিতে অটল থেকে ইসরাইল ও মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়ার মধ্যস্থতায় নিয়োজিত জাতি সংঘ , ইইউ , যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার উত্থাপিত বলপ্রয়োগ পরিত্যাগ করা ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়া এবং আগেকার সমস্ত চুক্তি মেনে নেয়ার তিনদফা নীতি প্রত্যাখ্যান করেছে । এতে ইসরাইল অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়েছে । তাই সে অনবরত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উপায়ে হামাস সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে । এসব শান্তিপূর্ণ পদক্ষেপ অকেজো হয়ে যাওয়ায় ইসরাইল আটক করা সৈনিকদের উদ্ধার করার ওজুহাতে গত ২৮ জুন থেকে সামরিক অভিযান শুরু করেছে । এই সামরিক অভিযান এখনো চলছে । এর উদ্দেশ্য হচ্ছে সবচেয়ে চরম সামরিক পদ্ধতি দিয়ে হামাস সরকারের ওপর আঘাত হানা এবং হামাস সরকারকে পিছু হটতে আর তিনদফা নীতি মেনে নিতে বাধ্য করা ।

    দ্বিতীয়ত এটা দেশের অভ্যন্তরীণ চাপ প্রশমিত করার জন্যে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্টের নেতৃত্বাধীন নতুন সরকারের নেয়া এক পদক্ষেপ । জনমত অনুযায়ী সম্প্রতি হামাসের পদস্থ কর্মকর্তাদের একটানা গ্রেফতার লেবানন - ইসরাইল সংঘর্ষের সংগে ওতপ্রোতভাবে জড়িত । একমাসব্যাপী লেবানন-ইসরাইল সংঘর্ষ চলাকালে নিরংকুশ সামরিক প্রাধান্যের অধিকারী দশ বারো হাজার ইসরাইলী বাহিনী লেবাননের কয়েক হাজার হিজবুল্লাহর সংগে পেরে ওঠে নি । হিজবুল্লাহকে নিশ্চিহ্ন করা তো দূরের কথা, এমন কি হিজবুল্লাহকে দক্ষিণ লেবানন থেকে তাড়িয়ে দেয়ার নিম্নতম রণকৌশলগত লক্ষ্যও হাসিল করতে পারে নি । সামরিক শক্তির ওপর নির্ভরশীল ইসরাইলের বাহিনীর আচরণ কোনোমতেই জনসাধারণ গ্রহণ করতে চায় না । সুতরাং ওলমার্ট সরকার আস্থার সংকটে পড়েছে । ইসরাইলের হারেটজ পত্রিকা পরিচালিত এক জনমত জরিপে জানা গেছে , ওলমার্টের গণ সমর্থনের হার সংঘর্ষের গোড়ার দিকের থাকা ৭৫ শতাংশ থেকে ৪৮ শতাংশে নেমে এসেছে । ইসরাইলী জনগণের প্রবল চাপে পড়ে ওলমার্ট সরকারের পক্ষে এক ধরণের অনমনীয় মনোভাব দেখানোর দরকার পড়েছে ।

    তৃতীয়ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়ার নতুন দফা উদ্যোগের মুখে ইসরাইলকে শক্তিশালী অবস্থানে থাকতে হবে । আরব লীগের মহাসচিব আমর মুসা গত ২০ আগস্ট এই লীগের জরুরী পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মেলনশেষে বলেছেন , আরব দেশগুলো আরব-ইসরাইল সংঘর্ষের সমস্যাকে জাতি সংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কাছে পেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । নিরাপত্তা পরিষদ যাতে আগামী সেপ্টেম্বর মাসে মধ্যপ্রাচ্য সমস্যা সংক্রান্ত বিশেষ অধিবেশন আহবান করে , সেজন্যে আরব লীগ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে । আরব বিশ্বের এই কূটনৈতিক অভিযানের মুখে ইসরাইল স্পস্টতই আশা করছে যে , ভবিষ্যতের শান্তি প্রক্রিয়ায় সে এক শক্তিশালী ও ইতিবাচক অবস্থান দখল করবে ।

    বিশ্লেষকরা মনে করেন যে , ইসরাইল যে একটানাভাবে ফিলিস্তিনের পদস্থ কর্মকর্তাদের গ্রেফতার করছে , তাতে প্রতীয়মান হয় যে, ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের সম্পর্কের সমস্যায় ওলমার্ট সরকার পুরোপুরি অনমনীয় নীতি অনুসরণ করছে । ফলে ভবিষ্যতেও মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চল সংকটে ও যুদ্ধের কালো মেঘে আচ্ছন্ন হয়ে থাকবে । বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের শান্তির সম্ভাবনা আশার চেয়ে দুরামাই বেশি ।