v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-08-21 14:13:21    
ইরান এ সময়ে বিরাট সামরিক মহড়া করছে কেন

cri

    ইরানের সামরিক মহল গত ১৯ আগস্ট থেকে সারা দেশে ৫ সপ্তাহব্যাপী স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীর বিরাট সামরিক মহড়া শুরু করেছে । ইরানের জাতীয় টেলিভিশনের খবরে প্রকাশ , ২০ আগস্ট মহড়ায় ইরানী বাহিনী পরীক্ষামূলকভাবে ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ৮০ থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরপাল্লার রণকৌশলগত রকেট নিক্ষেপ করেছে । ইরানী বাহিনী ভূমি থেকে জাহাজে নিক্ষেপযোগ্য রকেটও পরীক্ষামূলকভাবে উত্ক্ষেপন করবে । তাহলে ইরান কেন এ সময়ে বিরাটাকার সামরিক মহড়ার আয়োজন করেছে ?

    ইরানের সামরিক মহলের মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজা আশটিয়ানি বলেছেন , এবারের সামরিক মহড়ার লক্ষ্য হচ্ছে ইরানের সবচেয়ে নতুন আত্মরক্ষার ধারণা তুলে ধরা । তিনি আরো বলেন , যেহেতু এই অঞ্চলে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে ,সেহেতু ইরানকে সম্ভাব্য যে কোনো হুমকীর মোকাবিলার প্রস্তুতি নিতে হবে । তিনি প্রকাশ্যে বলেছেন , ইরানের পররাষ্ট্র নীতির সংগে সমন্বয় ঘটানোর জন্যেই এই সামরিক মহড়ার আয়োজন করা হচ্ছে । ইরানের স্থল বাহিনীর সেনাপতি ব্রেগেডিয়ার মোহাম্মদ হাসান দাদ্রাসএবারের সামরিক মহড়া পরিচালনা করছেন । তিনি বলেন , এই অঞ্চলে কিছু ঘটলে ইরানের স্থল বাহিনী হুমকীর মাত্রা অনুযায়ী নিজের আত্মরক্ষামূলক সামর্থ্য বাড়িয়ে দেবে যাতে কার্যকরীভাবে ইরানের বিরুদ্ধে সব ধরণের আগ্রাসী তত্পরতা প্রতিরোধ করা যায় ।বিশ্লেষকদের মতে দুটি বিরার পটভূমিকায় ইরানের সামরিক মহল এবারের সামরিক মহড়ার আয়োজন করেছে । সুতরাং মহড়াটির লক্ষ্য ও সময়ও এই দুটি পটভূমিকার সংগে সম্পর্কিত রয়েছে ।

    প্রথমত এক সপ্তাহ আগে জাতি সংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত ১৭০১ নম্বর প্রস্তাব অনুসারে লেবানন-ইসরাইল সংঘর্ষ এক মাস চলার পর যুদ্ধ বিরতি বাস্তবায়িত হয়েছে । ইসরাইলের বিরুদ্ধে লেবাননের হিজবুল্লাহর বিজয় উদযাপন ও লেবাননের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করার জন্যে ইরানের রাজধানী তেহরানে বিশাল জনসমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে । ইরানের চোখে ইসরাইল ও লেবাননের মধ্যে এবারের যুদ্ধ বিরতির বাস্তবায়ন ইসরাইলের পরাজয় ঘোষণা করেছে । একমাসব্যাপী লেবানন-ইসরাইল সংঘাতের ফলাফলে দেখা গেছে যে , ইসরাইলের দ্বারা হিজবুল্লাহ সশস্ত্র শক্তির ওপর মোক্ষম আঘাত হানার লক্ষ্যও হাসিল হয় নি । উপরন্তু ইসরাইল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিন্দার সম্মুখীন হয়েছে ।

    আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এই যে, পরমাণু সমস্যায় ইরান প্রচন্ড চাপে পড়েছে । জাতি সংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ১৬৯৬ নম্বর প্রস্তাবে ইরানের কাছে আগামী ৩১ আগস্টের আগে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের তত্পরতা স্থগিত রাখার দাবি জানানো হয়েছে । তার ওপর ২২ আগস্ট আবার ইরানের নিজের রাখা ৬ জাতির প্রস্তাবটির আনুষ্ঠানিক জবাব দেয়ার শেষ তারিখ । ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রাণালয়ের মুখপাত্র হামিদ রেজা আসেফি ২০ আগস্ট বলেছেন , বর্তমানে ইরানের হাতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ তত্পরতা স্থগিত রাখার সময়সূচী নেই । তিনি মনে করেন যে , নিরাপত্তা পরিষদের ১৬৯৬ নম্বর প্রস্তাবের আইনগত ভিত্তির অভাব রয়েছে বলে তা গ্রহণযোগ্য নয় । তবে সংগে সংগে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন , ইরান এখনো মনে করে যে , আলোচনার মাধ্যমে ইরানের পরমাণু সমস্যা সমাধান করতে হবে ।

    ইরান বলেছে যে , সে আগামী ২২ আগস্ট ৬ জাতির প্রস্তাবটির জবাব দেবে । জাতি সংঘ মহাসচিব কফি আনান ২০ আগস্ট এক বিবৃতিতে ইরানের এই বক্তব্যে আনন্দ প্রকাশ করেছেন । তিনি আশা প্রকাশ করে বলেছেন যে, ইরান সরকার এই ঐতিহাসিক সুযোগ আকঁড়ে ধরে ৬জাতির প্রস্তাবটির ইতিবাচক জবাব দেবে । এটা আলোচনার মাধ্যমে ইরানের পরমাণু সমস্যার চূড়ান্ত নিরসনের জন্যে ভিত্তি স্থাপন করবে । তিনি বলেন , যখন মধ্যপ্রাচ্যে সংকট দেখা দিচ্ছে , তখন ইরানের পরমাণু সমস্যায় অগ্রগতি লাভ করা অত্যন্ত জরুরী । কেননা এটা সেই অঞ্চল তথা সারা পৃথিবীর শান্তি ও স্থিতিশীলতার পক্ষে কল্যানকর হবে ।