v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-08-17 14:51:00    
" লেবানন সরকার কেন অবিলম্বে দক্ষিণ লেবাননে সরকারী বাহিনী মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে"

cri
    ১৬ আগস্ট সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত লেবানন সরকারের এক বিশেষ সভায় ১৭ আগস্ট থেকে দক্ষিণ লেবাননে সরকারী বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এটা জাতিসংঘের ১৭০১ নম্বর প্রস্তাব কার্যকর করার এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।

    নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অনুযায়ী ইসরাইল আর হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবার পর দক্ষিণ লেবাননে ১৫ হাজার লেবাননী সরকারী সৈন্য মোতায়েন করা উচিত। এর সঙ্গে সঙ্গে জাতিসংঘও দক্ষিণ লেবাননে তার অস্থায়ী বাহিনীর কাছে অতিরিক্ত ১৫ হাজার সৈন্য পাঠাবে। দু'পক্ষ যৌথভাবে শান্তিরক্ষা এবং লেবানন-ইসরাইল যুদ্ধবিরতি তত্ত্বাবধান করার দায়িত্ব পালন করবে।

    তবে দক্ষিণ লেবাননে জাতিসংঘ ও লেবানন সরকারের অতিরিক্ত সৈন্য মোতায়েন করতে বেশ সময় লাগবে। লেবাননের সরকারি বাহিনীর সৈন্যসংখ্যা খুব সীমিত ।এই অবস্থায় লেবানন সরকার কেন অবিলম্বে দক্ষিণ লেবাননে সরকারী বাহিনী মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ?

    বিশ্লেষকদের মতে, তার কারণ প্রধানত, বর্তমান ইসরাইল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতির সুফল সুসংবদ্ধ করার জন্যই লেবানন সরকার এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। ৩৪ দিন -স্থায়ী ব্যাপক সশস্ত্র সংঘর্ষ হওয়ার পর ইসরাইল আর হিজবুল্লহ অবশেষে ১৪ আগস্ট থেকে যুদ্ধবিরতি পালন শুরু করেছে ।কিন্তু এই যুদ্ধবিরতি খুবই ভঙ্গুর(বা দুর্বল), একটু এদিক ওদিক হলেই যুদ্ধবিরতি আবার ভেঙ্গে যেতে পারে। দু'পক্ষের সংঘর্ষ আবার শুরু হতে পারে। ইসরাইল তার এই দাবিতে অবিচল যে, দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরাইল সৈন্য প্রত্যাহারের পূর্বশর্ত হলো সেখানে লেবাননের সরকারী বাহিনী আর জাতিসংঘ বাহিনীর সৈন্যশক্তি বাড়াতে হবে। ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর চিফ অব দি জেনারেল স্টাফ হালুত্জ ১৬ আগস্ট বলেছেন, আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ইসরাইলী বাহিনী লেবাননের দক্ষিণাংশ থেকে প্রত্যাহার করা হবে। কিন্তু লেবাননের সরকারী বাহিনী আর জাতিসংঘের অতিরিক্ত সৈন্য দেরীতে এলে ইসরাইলের সৈন্য প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া কয়েক মাস স্থায়ী হবে, এমনকি সৈন্য প্রত্যাহার বন্ধও হতে পারে। পক্ষান্তরে হিজবুল্লাহ জিদ করে বলছে , দখলকৃত ভূভাগে ইসরাইলী বাহিনী প্রতিরোধ করার অধিকার তার আছে। তাই ইসরাইলী সৈন্য প্রত্যাহার স্থগিত হলে যুদ্ধ আবার বেধে যেতে পারে।

    দ্বিতীয় কারণ এই যে, লেবানন সরকারের উপরোক্ত সিদ্ধান্ত হলো লেবাননের দক্ষিণাংশে তার প্রশাসনিক ক্ষমতা পুন:প্রতিষ্ঠার জন্য নেয়া এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা। দক্ষিণ লেবাননের বেশির ভাগ বাসিন্দাই শিয়া মুসলমান। শিয়াদের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে হিজবুল্লাহ বরাবরই সেখানকার ব্যাপক এলাকায় ইসরাইলী আগ্রাসন ও জবরদখল প্রতিরোধে অবিচল । ২০০০ সালে দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরাইলী সৈন্য পুরোপুরি সরিয়ে নেয়ার পর সেখানে হিজবুল্লহর শক্তি দ্রুত বেড়ে চলেছে। দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর রাজনীতি ও ক্ষমতা- কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই লেবানন সরকার অবিলম্বে দক্ষিণ লেবাননে সরকারী বাহিনী মোতায়েন করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে , তার উদ্দেশ্য সেখানে তার প্রশাসনিক ক্ষমতা যথাশিঘ্র পুন:প্রতিষ্ঠা করা, যাতে 'দেশের ভেতরে আরেকটি দেশ থাকার' পরিস্থিতি এড়ানো যায়। লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সিনিওরা বলেছেন, সরকারী সৈন্য ছাড়া দক্ষিণ লেবাননে অন্য কোনো সশস্ত্র সংস্থা বা সরকারের বহির্ভুত প্রশাসন ক্ষমতার অস্তিত্ব কোনোমতেই বরদাস্ত করা যাবে না।

    বর্তমান অবস্থা থেকে দেখতে গেলে, লেবাননী সরকারী বাহিনী মোতায়েনের উপরোক্ত লক্ষ্য বাস্তবাযন করা বেশ কঠিন। প্রথম অসুবিধা: সরকারী বাহিনীর সৈন্যের অভাব, সরঞ্জাম অনুন্নত, অভিজ্ঞতার অভাব। দ্বিতীয় অসুবিধা হলো: দক্ষিণ লেবাননে সরকারী বাহিনী মোতায়েন হলে সেখান থেকে সরে যেতে অস্বীকার করা হিজবুল্লাহ গেরিলাদের সঙ্গে তার সংঘর্ষ ঘটতে পারে। লেবাননের তথ্যমন্ত্রী আরিদি বলেছেন , সরকারী বাহিনী হিজবুল্লাহ গেরিলাদের সঙ্গে সংঘর্ষ করবে না, তবে স্থানীয় অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করবে। হিজবুল্লাহদের সঙ্গে সরকারী বাহিনীর সম্পর্ক যথাযথ রাখা এক কঠিস সমস্যা। তবুও সরকারি বাহিনী মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত এক ইতিবাচক পদক্ষেপ বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।