সম্প্রতি চীনের সাবেক নেতা চিয়াং চে মিনের নির্বাচনী রচনা প্রকাশিত হয়েছে । এই নির্বাচনী রচনায় চিয়াং চে মিনের নেতৃত্বাধীন চীনের সাবেক নেতৃগোষ্ঠীর রাষ্ট্র পরিচালনার নীতির সারসংকলন করা হয়েছে । সরকারী সংস্থা, সমাজ সংগঠন ও ব্যক্তিবিশেষ সক্রিয়ভাবে চিয়াং চে মিনের নির্বাচনী রচনাবলী কিনছে । চীনের ক্ষমতাসীন পার্টি-- চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি ১৫ আগষ্ট পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত একটি সভায় সমগ্র পার্টি ও সমগ্র দেশের প্রতি এই নির্বাচনী রচনা অধ্যয়নের আহ্বান জানানো হয়েছে ।
চিয়াং চে মিন ১৯৮৯ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত চীনের শীর্ষ নেতা ছিলেন । তিনি চীনের কমিউনিষ্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক , দেশের প্রেসিডেন্ট ও কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন । তার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা প্রয়োগের ১৩ বছরে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির বিরাট পরিবর্তন ঘটেছে , চীনের সংস্কার অভিযানের দ্রুত অগ্রগতি হয়েছে । রচনাবলীর প্রায় দু শ'টি প্রবন্ধ চিয়াং চে মিন এই সময় লিখেছেন । অনেক প্রবন্ধ এই প্রথমবার প্রকাশিত হয় । প্রবন্ধগুলোতে চিয়াং চে মিনের নেতৃত্বাধীন চীনের নেতৃস্থানীয় গোষ্ঠীর রাষ্ট্রশাসন নীতি ও সৈন্যবাহিনী পরিচালনার নীতি ব্যাখ্যা করা হয়েছে ।
এই বই প্রকাশের প্রথম দিনেই প্রায় ৭০ হাজার সেট বিক্রি হয়েছে। পেইচিংয়ের সবচেয়ে বড় বই দোকানে--- সি তানের বই ভবনে বিভিন্ন বয়স ও পেশার ক্রেতারা এই বই পড়ছেন । মিঃ ওয়াং পেইচিংয়ের একটি বিদেশী শিল্পপ্রতিষ্ঠানে পরিচালনার কাজ করেন । তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন , আমি মনে করি এই বইতে চীনের কমিউনিষ্ট পার্টির সাবেক নেতৃগোষ্ঠীর শাসন দক্ষতা প্রতিফলিত হয়েছে। এই বই থেকে আমরা দেশের উন্নয়নের গতিপথ ও দেশশাসনের চিন্তাভাবনা ও পদ্ধতি শিখতে পারি ।
চিয়াং চে মিনের নেতৃত্বাধীনে চীনের বাজার অর্থনীতি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে , চীন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় অংশ নিয়েছে ,চীন আবার হংকং ও ম্যাকাও ফিরে পেয়েছে , চীনের আন্তর্জাতিক প্রভাব ক্রমেই বাড়ছে । ১৫ আগষ্ট পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত একটি সভায় ভাষণ দেয়ার সময় চীনের কমিউনিষ্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক হু চিন থাও গোটা পার্টি ও গোটা দেশের প্রতি এই রচনাবলী অধ্যয়নের আহ্বান জানিয়েছেন । তিনি বলেছেন , চিয়াং চে মিনের রচনাবলীতে যে সব ঘটনা বিশ্লেষণ করা হয়েছে , তা' সব আমরা স্বচোখে দেখেছি বা আমাদের পাশেপাশে ঘটেছে । যে সব ব্যাপার নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে , তা' আমরা দশ বারো বছর আগে করেছি বা এখন ও পরবর্তীকালে করবো । তাই এই সব কথা আমাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত । তাই পাঠকরা এই বই পড়তে পছন্দ করেন , তারা বই থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য ও শিক্ষা পাবেন ।
চিয়াং চে মিনের উত্তরাধিকারী হিসেবে হু চিন থাও চীনের কমিউনিষ্ট পার্টির অগ্রণী ভূমিকা ও গণ কল্যাণ সম্বন্ধে চিয়াং চে মিনের চিন্তার গভীর মূল্যায়ন করেছেন । তিনি বলেছেন , নতুন ঐতিহাসিক পরিস্থিতিতে চীনের কমিউনিষ্ট পার্টি চিয়াং চে মিনের এই চিন্তাধারা অনুসরণ করে উন্নয়ন তরান্বিত করার চেষ্টা করবে । হু চিন থাও বিদ্যমান সমস্যা সম্বন্ধে বলেছেন , আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ করা , পৃথিবীর বহুমুখীকরণ , অর্থনীতির বিশ্বায়ন আর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিকাশের প্রবণতার মোকাবেলা , দেশের সার্বিক শক্তি বাড়ানোর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চীনের উন্নয়ন বাড়ানোর উদ্যোগতা নিয়ন্ত্রন , চীন সমাজতন্ত্র গড়ে তোলার প্রথম পর্যায়ে রয়েছে--এই মৌলিক অবস্থা বিবেচনা করে অর্থনৈতিক গঠনকাজকে প্রাধান্য দিয়ে জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা আমাদের সামনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ।
|