v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-08-16 18:03:04    
লেবানন ও ইস্রাইলের সংঘর্ষ অবসান করতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য কি?

cri

 লেবানন ও ইস্রাইলের সংঘর্ষ এক মাস চলার পর গত ১৪ আগস্ট যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। ইস্রাইল জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে লেবাননের বিরুদ্ধে সামরিক তত্পরতা বন্ধ করেছে। এতে যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বিশ্লেষকরা উল্লেখ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র নানা দিক বিবেচনা করার পর লেবানন ও ইস্রাইলের সংঘর্ষের অবসান ঘটিয়েছে।

 লেবানন ও ইস্রাইলের সংঘর্ষ শুরুর প্রথম দিকে যুক্তরাষ্ট্র একাধিক বার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে ইস্রাইলের সামরিক অভিযানকে হস্তক্ষেপ না করার মনোভাব দেখিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কনডলিজ্জা রাইস তখন বলেছেন, যুদ্ধবিরতির সময় এখনো হয় নি। অস্থায়ীভাবে যুদ্ধিবিরতি হলে তাত্পর্য নেই। জনমত মনে করে, যুক্তরাষ্ট্র ইস্রাইলের সামরিক অভিযানকে উপেক্ষা করার বাস্তব উদ্দেশ্য হচ্ছে ইস্রাইলের মাধ্যমে হিজবুল্লাহকে আঘাত করা এবং ইরান ও সিরিয়াকে ভয় দেখানো। যাতে লেবাননের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয় এবং লেবানন পাশ্চাত্য শক্তিকে সমর্থন করে। যাতে লেবানন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য গণতান্ত্রিক পরিকল্পনার কক্ষপথে অন্তর্ভুক্ত হয়। কিন্তু যুদ্ধের প্রক্রিয়া দেখে, যুক্তরাষ্ট্র ইস্রাইলের সামরিক ও রাজনৈতিক নেতাদের পরিচালনার সামর্থ্যের প্রতি আস্থা হারিয়েছে, এমনকি হতাশ হয়েছে। মার্কিন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা মনে করেন, ইস্রাইলের সামরিক রণনৈতিক লক্ষ্যবস্তু স্পষ্ট নয়, কৌশলও গোলমেলে। হিজবুল্লাহকে গুরুতর আঘাত হানার উদ্দেশ্য বাস্তবায়িততো হয়ই নি, বরং বহু নিরীহ নাগরিক হতাহত হয়েছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদি সংঘর্ষ অব্যাহতভাবে চলতে থাকে তাহলে কেবল ইস্রাইল গভীরভাবে যুদ্ধের জড়িয়ে পড়বে তা নয়, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় স্বার্থ এবং গোটা রণনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এমন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের লেবানন ও ইস্রাইলের সংঘর্ষ বন্ধ করার কারণ হচ্ছে,

 প্রথমতঃ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাবলিউ বুশ লেবানন ও ইস্রাইলের সংঘর্ষ ঘটার প্রথম দিকে ইস্রাইলকে একটি লাল লাইন এঁকে দিয়েছিলেন, অর্থাত্ সামরিক অভিযানে লেবানন সরকারকে দুর্বল করা যাবে না। বর্তমান পাশ্চাত্য পন্থী লেবানন সরকার হচ্ছে মধ্য প্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের চোখে আরেকটি সুপ্ত রণনৈতিক শক্তি। লেবানন হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র "নতুন মধ্য প্রাচ্য" প্রতিষ্ঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ দাবার ঘুঁটি। কিন্তু পরে যুক্তরাষ্ট্র উপলব্ধি করেছে যে, ইস্রাইলী বাহিনীর সামরিক অভিযান হিজবুল্লাহকে ধ্বংস করতে পারে নি, বরং হিজবুল্লাহর সমর্থনের হার অনেক বেড়েছে। লেবানন সরকারের মর্যাদা দুর্বল হয়েছে। লেবানন ও ইস্রাইলের সংঘর্ষ যুক্তরাষ্ট্রের নির্ধারিত কক্ষপথ থেকে সরে যাওয়ায় বিপদ দেখা দিয়েছে।

 দ্বিতীয়তঃ, লেবানন ও ইস্রাইলের সংঘর্ষ সমস্যায় যুক্তরাষ্ট্র ইস্রাইলের পক্ষাবলম্বন করে। এতে ইউরোপীয় দেশ বিশেষ করে ফ্রান্সের অসন্তুষ্টি দেখা দেয়। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট জ্যাক শিরাক ৯ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের "নেতিবাচক মনোভাবের" প্রতি তীব্র নিন্দা জানান। তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন যে, যদি জাতিসংঘের সিন্ধান্তের খসড়া নিয়ে ফ্রান্স যুক্তরাষ্ট্র মতৈক্যে পৌঁছতে না পারলে , ফ্রান্স এককভাবে নিরাপত্তা পরিষদের কাছে এক নতুন খসড়া প্রস্তাব দাখিল করবে। উল্লেখ্য যে, লেবাননে ফ্রান্সের ঐতিহ্যিক স্বার্থ এবং প্রভাব আছে। লেবানন সমস্যা সমাধান করতে চাইলে ফ্রান্সের সহযোগিতা ছাড়া হবে না। তাছাড়া ইরান আর ইরাক সমস্যায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউরোপীয় দেশগুলোর সমন্বয় দরকার। যদি ইস্রাইলের জন্য ইউরোপীয় দেশগুলো ক্ষুব্দ হয়, মার্কিন স্বার্থের সঙ্গে তা সংগতিপূর্ণ নয়।

 তা ছাড়া, আরো জটিল ইরানের পরমাণু সমস্যাও চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে আসছে। জাতিসংঘের ১৬৯৬ নং সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ইরানকে ৩১ আগস্টের আগে অস্থায়ীভাবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সম্পর্কিত সমস্ত তত্পরতা বন্ধ করতে হবে। ১৫ আগস্ট ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ বলেছেন, ইরান জাতিসংঘের ১৬৯৬ নং সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করবে। তিনি বলেছেন, ইরানী জনগণ "হুঁশিয়ারীর" গ্রহণ করবে না। বিশ্লেষকরা উল্লেখ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আর ইরানের নতুন দফা প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অবিলম্বে লেবানন থেকে সরে গিয়ে মনোযোগ সহকারে ইরানের মোকাবেলা দরকার।