v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-08-15 19:21:12    
কোইজুমির আবার ইয়াসুকুনি সমাধিতে শ্রদ্ধাতর্পনে চীন সরকারের তীব্র প্রতিবাদ

cri
    ১৫ আগষ্ট জাপানের প্রধানমন্ত্রী জুনিছিরো কোইজুমি আরেকবার দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের প্রথম শ্রেণীর যুদ্ধাপরাধীর স্মৃতি- ফলক সম্বলিত ইয়াসুকুনি সমাধিতে শ্রদ্ধাতর্পনকরেছেন । তার এই আচরণ চীনা জনগণের ভাবানুভুতিকে গুরুতরভাবে ক্ষুন্ন করেছে এবং চীন - জাপান সম্পর্কের রাজনৈতিক ভিত্তি ব্যাহত করেছে । চীন সরকার তার এ আচরণের তীব্র প্রতিবাদ জানায় ।

    ৬১ বছর আগের ১৫ আগষ্ট জাপান নিঃশর্তে আত্মসমর্পনেরকথা ঘোষণা করে । চীন ও অন্যান্য এশিয় জনগণ আক্রমন-বিরোধী সংগ্রামে বিজয় অর্জন করেন । চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিউ চিয়েন ছাও বলেছেন , জুনিছিরো কোইজুমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় , এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলো ও জাপানী জনগণের উদ্বেগ ও বিরোধীতা উপেক্ষা করে ১৫ আগষ্ট-- জাপানের পরাজয় ঘোষনার এই বিশেষ দিনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইয়াসুকুনি সমাধিতে শ্রদ্ধাতর্পন করেছেন । তা' আন্তর্জাতিক ন্যায্য অধিকারের ও মানবজাতির সভ্যতার প্রতি চ্যালেঞ্জস্বরুপ । তিনি বলেছেন , চীন হলো জাপানের সমরবাদের আগ্রাসী যুদ্ধের সবচেয়ে বড় শিকার দেশ । জাপানের আগ্রাসী যুদ্ধে চীনের অনেক নিরীহ অধিবাসী প্রাণ হারিয়েছে । তাই এই ঐতিহাসিক ঘটনা সম্পর্কে সঠিক মনোভাব পোষণ করা যুদ্ধোত্তরকালে চীন ও জাপানের সম্পর্ক পুনরুদ্ধার ও প্রসারের রাজনৈতিক ভিত্তি এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের পূর্বশর্ত । প্রধানমন্ত্রী জুনিছিরো কোইজুমি এই ঐতিহাসিক সমস্যায় বার বার চীনের জনগণের অনুভুতিকে আহত করেছেন । তিনি শুধু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরআস্থা হারিয়েছেন , তাই নয় , তিনি জাপানী জনগণের আস্থা হারাবেন এবং জাপানের রাষ্ট্রীয় ভাবমূর্তি ও স্বার্থের ক্ষতি করবেন ।

    ইয়াসুকুনি সমাধিতে হাইদেকি টোজোসহ১৪জন প্রথম শ্রেণীর যুদ্ধাপরাধীর স্মৃতি ফলক আছে। এই ১৪জন প্রথম শ্রেণীর যুদ্ধাপরাধী জাপানের আগ্রাসী যুদ্ধের কমান্ডার ছিলো । তাদের মধ্যে ১৩জনই প্রত্যক্ষভাবে চীনের বিরুদ্ধে আগ্রাসী যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল । জাপান অথবা চীন ও দক্ষিণ কোরিয় জনগণের চোখে ইয়াসুকুনি সমাধি এক সাধারণ সমাধি নয় । ইয়াসুকুনি সমাধি মানবজাতির এক গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস , আগ্রাসনেরশিকার দেশগুলোর জনগণের অনুভুতি ও আন্তর্জাতিক ন্যায্যের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি সমাধি ।

    ২০০১ সালের এপ্রিল মাসে জাপানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর জুনিছিরো কোইজুমি প্রতি বছরই শ্রদ্ধাতর্পনের জন্য ইয়াসুকুনি সমাধিতে যান । এ বছরের ৩১ মার্চ চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও পেইচিংয়ে জাপানের সাতটি মৈত্রী সংগঠনের প্রধানদের সঙ্গে এক সাক্ষাত্কালে ষ্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন , চীন-জাপান সম্পর্ক প্রসারের প্রধান বাধা হলো জাপানের কিছু সংখ্যক নেতার একগুঁয়েভাবে ইয়াসুকুনি সমাধিতে শ্রদ্ধাতর্পন। এটা চীনা জনগণসহ আগ্রাসনের শিকার সকল দেশের জনগণের অনুভুতিকে আহত করেছে এবং চীন-জাপান সম্পর্কের রাজনৈতিক ভিত্তির ক্ষতি করেছে । প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও চীন সরকারের নীতিগত অবস্থান ব্যক্ত করে বলেছেন , চীন-জাপান সম্পর্কের অচলাবস্থা ভেঙ্গে দেয়ার জন্য সর্বপ্রথমে জাপানের নেতাদের ইয়াসুকুনি সমাধিতে না যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে । কিন্তু কোইজুমি চীনা পক্ষের পরামর্শ ও জাপানী জনগণের তীব্র বিরোধীতা , আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তীব্র নিন্দা ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রসার উপেক্ষা করে প্রকাশ্যে আরেকবার ইয়াসুকুনি সমাধিতে গিয়েছেন ।

    কোইজুমির ইয়াসুকুনি সমাধিতে শ্রদ্ধাতর্পন জাপানের অভ্যন্তরেও বিরোধীতার সৃষ্টি করেছে । একটি জনমত জরীপে জাপানের ৬০ শতাংশ নাগরিক কোইজুমির এই আচরণের বিরোধীতা করেন । চীনের সমাজ বিজ্ঞান একাডেমীর জাপান সম্পর্কিতগবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রধান প্রফেসার কাও হোন বলেছেন , এই সমস্যা শুধু জাপানের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয় । এই সমস্যা এশিয়ার দেশের সঙ্গে , বিশেষ করে জাপানের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে কুটনৈতিক সম্পর্ক প্রসারের ক্ষেত্রে এক বড় বাধা হয়ে দাড়িঁয়েছে । কাজেই জাপানের রাজনীতিবিদদের এই সমস্যা সমাধানের প্রচেষ্টা চালাতে হবে ।