আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদের জন্য চীনের বিখ্যাত উচ্চকন্ঠের গায়ক জেং স্যুলাং এর কিছু বিদেশী গান শোনাবো এবং ব্যাখ্যাত করবো। প্রথমেই বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় গান।
এই গানের অর্থঃ
একবার যেতে দে না আমার
ছোট্ট সোনার গাঁয়।
যেথায় কোকিল ডাকে কুহু
দোয়েল ডাকে মূহু মূহু
নদী যেথায় ছুটে চলে
আপন ঠিকানায়।
সংগীত-১ শেষ
এতক্ষণ আপনারা জেংস্যুলাংয়ের কন্ঠে বাংলা গানটি শুনলেন।
জেং স্যুলাং পেইচিংয়ে জন্ম গ্রহণ করেন। যখন তাঁর বয়স তিন বছর, তখন তিনি বাবামার সঙ্গে থিয়ান চিনে গিয়েছেন। এক সঙ্গীত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন বলে, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তিনি গান গাওয়ার সামর্থ্য দেখান। উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি পাওয়ার পর, মায়ের সাহায্যে তিনি গান গাওয়া শিখেন। সুমধুর কন্ঠ ও প্রাণবন্ত পরিবেশনার কারণে অল্পকাল পরেই থিয়েনচিনে বিখ্যাত হয়ে উঠেন। ১৯৭৭ সালে জেং স্যুলাং চীনের প্রাচ্য নাচগান দলে প্রবেশ করেন এবং গায়িকায় পরিণত হন। তাঁর শিক্ষক হচ্ছেন চীনের বিখ্যাত কন্ঠশিল্পী শিক্ষাবিদ ম্যাডাম কুও শুজেন। তিনি জেংস্যুলাংকে কন্ঠশিল্পের ওপর কতগুলো আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ দেন।
প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, এখন আপনারা যে গান শুচ্ছেন, তার নাম "চাঁদ"। এটা হচ্ছে একটি থাইল্যান্ডের গান। "চাঁদ" নামক গানটিতে সুন্দর ও মিষ্টি কথা সুরের মাধ্যমে লোকজনের চাঁদের প্রশংসা ও ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে। গানের অর্থ এমনঃ চাঁদ, তুমি উত্সাহব্যজ্ঞক ও সুন্দর। তুমি নিঃস্বার্থ, পবিত্র করো। আশা করি চাঁদের আলোয় আমি তোমার সাথে নির্ভর করতে পারি।
এতক্ষণ আপনারা জেংস্যুলাংয়ের গান 'চাঁদ' শুনলেন। ১৯৯৭ সালে চীনের প্রাচ্য নাচগান দল জেংস্যুলাংকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পাঠিয়ে স্থানীয় লোক সংগীত শিখায়। তারপর চীনের প্রাচ্য নাচগান দলের সঙ্গে তিনি থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া সহ বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলে গিয়ে সঙ্গীত পরিবেশন করেন। ফলে স্থানীয় মানুষের আন্তরিক ভালোবাসা ও প্রশংসা পেয়েছেন। এখন আমরা জেং স্যুলাংয়ের মালয়েশিয়ান গান "জেসমিন ফুল" শুনবো।
১৯৭৯ সালে জেং স্যুলাং টিভি চলচিত্র "হার্বিনের গরমকাল"-এর জন্য "সুর্য দ্বীপে" গেয়েছেন। নির্মল ও মিষ্টি গানটির জন্য তিনি জনপ্রিয় গায়িকা হন। তারপর, তিনি "মেষপালক", "সমুদ্র, আমার মাতৃভূমি" প্রভৃতি জনপ্রিয় গান গেয়েছেন। সে সব গান আজও গান জন-আদৃত। অনুষ্ঠানের শেষে, আমরা জেং স্যুলাংয়ের জাপানী গান "দেবনা জাপান সমুদ্র" এক সঙ্গে শুনবো। জেং স্যুলাং চীনা ও জাপানী দুটো ভাষায় এই গানটি গেয়েছেন। তাঁর গান খুব হৃদয়গ্রাহী।
আজকের অনুষ্ঠানের শেষ প্রান্তে এসে আমরা মান ওয়েনজুনের 'এই গানটিই শেষ, মানুষকে আলাদা করো না' গানটি শুনবো। এই গান হচ্ছে মান ওয়েনজুনের নিজের দশ' বছরের সংগীত জীবনের সারসংকলন। ১৯৯৬ সাল থেকে এই পর্যন্ত দশ বছরে মান ওয়েনজুন চীনের মূল-ভূভাগের প্রধান গায়কের অবস্থান বজায় রেখেছেন। তিনি তাঁর নিজের সামর্থ্য দিয়ে 'এই গানটিই শেষ, মানুষকে আলাদা করে না' প্রমাণ করেছেন। গানের অর্থ হচ্ছেঃ আমি আমার গান নিয়ে আমার অস্তিত্বকে প্রমাণ করি। যখন আমি মঞ্চে দাঁড়াই, তখন আমি সুখে থাকি। হাততালিতে আমি বুঝতে পারি, তোমরা আমাকে কতটা হৃদয় দিয়ে গ্রহণ করো। এই গানটিই শেষ, মানুষকে আলাদা করো না, সময় গানের মতোই বয়ে যায় । ব্যর্থতার মধ্যে থাকলেও আমি কখনও হারতে চাই না।' আসুন গানটি শুনি।
প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এখানে শেষ হল, শোনার জন্য ধন্যবাদ, আগামী সপ্তাহে আবার কথা হবে।
|