v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-08-15 18:29:47    
চীনের ক্রীড়া বিষয়ক চলচ্চিত্র

cri
    ২০০৮ সালের ওলিম্পিক গেমস ঘনিয়ে আসছে । চীনের নাগরিকরা সোত্সাহে বিভিন্ন ধরনের ক্রীড়া অনুষ্ঠান ও শরীরচর্চায় অংশ নিচ্ছেন । কিছু দিন আগে রাজধানী পেইচিংয়ের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক ক্রীড়া বিষয়ক চলচ্চিত্র সপ্তাহ আয়োজন করা হয়। দেশবিদেশের ২৬টি ক্রীড়া বিষয়ক ছায়াছবি টেলিভিশনে ও সিনেমা হলে দেখানো হয়েছে ।

    ১৯৪৩ সালে চীনের পরিচালক সুন ইউ সাংহাইয়ে ' ক্রীড়া রাণী ' নামে চীনের প্রথম ক্রীড়া বিষয়ক চলচ্চিত্র তৈরী করেন । ১৯৪৯ সাল থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত চীনে মোট দশটি ক্রীড়া বিষয়ক ছায়াছবি তৈরি করা হয়েছে । এর মধ্যে বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক সিয়ে চিনের তৈরী ' পাঁচ নম্বর নারী বাস্কেটবল খেলোয়াড় 'নামে ছায়াছবিতে চীনের একজন নারী বাস্কেটবল খেলোয়াড়ের ক্রীড়াজীবন ও প্রেমের কাহিনী বণর্না করা হয়েছে । এই ছায়াছবি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে ।

    ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে জনসাধারণের ভাবানুভুতি এক রকম নয় । ছায়াছবিতে বিভিন্ন সময়ের জনগণের চিন্তাভাবনা প্রতিফলিত হয়েছে । ১৯৮৪ সালে চীন আবার ওলিম্পিক গেমসে অংশ নিয়ে শুটিং ইভেন্টে একটি স্বণর্পদক জয় করেছে । সেই সময় চীনা জনগণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় স্বণর্পদক জয় করাকে চীনা জাতির নতুন উত্থানের প্রতীক মনে করেন । বিশেষ করে চীনের নারী ভলিবল দল পর পর তিনবার বিশ্বচ্যাম্পীয়ন হওয়ার পর ক্রীড়ার প্রতি চীনের জনসাধারণের উত্সাহ-উদ্দীপনা বিপুলভাবে বেড়ে যায় । এই সময় বেশ কয়েক ক্রীড়া বিষয়ক চলচ্চিত্র তৈরী করা হয় । যেমন নারী ভলিবল খেলোয়াড়ের জীবন সম্পর্কিত ' সা ও ' , ফুটবল খেলোয়াড়ের জীবন সম্পর্কিত ' এগিয়ে যাও , চীনা দল ' আর নারী স্কেটিং খেলোয়াড়ের জীবন সম্পর্কিত ' বরফ ও আগুন ' ইত্যাদি । ' বরফ ও আগুন ' নামক ছায়াছবিটির পরিচালক হু সুয়ে ইয়ান এই ছায়াছবি তৈরীর সময়ের কথা স্মরণ করে বলেছেন , আমরা উত্তর-পূর্ব চীনের সুন হুয়া নদীতে এই ছবির শুটিং করেছি । তখন তাপমাত্রা মাইনাস ৩০ সেন্টিগ্রেড । সকাল সাড়ে আটটা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কাজ করতাম। শর্ট ট্রেক স্পিড স্কেটিংয়ের গতি প্রতি ঘন্টা ৬০ থেকে ৮০ মাইল । শুটিংয়ের সময় ক্যামেরাবহনকারী গাড়ীর গতি ৮৫ থেকে ৯০ মাইল হতে হবে । এটা খুব বিপদজনক , গাড়ি দুঘর্টনায় আমার দুজন সহকারী ফটোগ্রাফারের পা ভেঙ্গেছে । সেই সময়কার কথা স্মরণ করে এখনও আমার ভয় লাগে ।

    গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশক থেকে চীনের চলচ্চিত্রের দ্রুত প্রসার শুরু হয় । সেই সময় চীনে অনেক ক্রীড়া বিষয়ক চলচ্চিত্র তৈরী হয়েছে । পরিচালক ইং লির পরিচালিত ' আমার সেপ্টেম্বর ' নামে একটি ক্রীড়া চলচ্চিত্রে ১৯৯০ সালের এশিয় গেম্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার জন্য এক প্রাথমিক স্কুলের ছেলের নিজের খারাপ অভ্যাস পরিবতর্নের কাহিনী বণর্না করা হয়েছে । ইং লি বলেছেন , অভিনেতা অভিনেত্রী বেছে নেয়ার জন্য আমরা পেইচিংয়ের প্রাথমিক স্কুলগুলোতে গিয়েছি । আমরা দেখেছি এশিয় গেম্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দলগত জিমন্যাস্টিক্স অনুষ্ঠানের জন্য বাচ্চারা প্রতি দিন কড়া রোদে খেলার মাঠে চর্চা করে । এশিয় গেম্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান—এই মহাসম্মিলনীতে অংশ নেয়ার জন্য ছেলেমেয়েদের কষ্ট সহ্য করা আর নিজের খারাপ অভ্যাস পরিবতর্নের দৃঢ সংকল্প আমাদের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে ।

    সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের চলচ্চিত্র কর্মীরা প্রতিবন্ধি ক্রীড়াবিদ বিষয়ক ক্রীড়া চলচ্চিত্র তৈরী করেছেন । ' কালো চোখ ' নামে এক চলচ্চিত্রের নায়িকা হলো এক সুন্দর অন্ধ মেয়ে । তিনি প্রতিবন্ধিদের গেম্সে দূরপাল্লার দৌড় ইভেন্টে অংশ নেবেন । লি হুয়া নামে এই মেয়ে গোপনে নিজের কোচকে ভালোবাসেন । তবে কোচের প্রেমিকা আছে । মেয়েটির বড় ভাই ও ভাবী লি হুয়ার জন্য এক অন্ধ আরহু বাদককে মেয়েটিকে পরিচয় করিয়েছেন । কিন্তু লি হুয়া মনে করেন , তিনি একজন অন্ধ , তাই আর অন্ধের সঙ্গে বিয়ে করতে চায় না । নিরলস প্রচেষ্টায় লি হুয়া প্রতিবন্ধিদের গেম্সে একটি স্বর্ণপদক জয় করেছেন । পুরষ্কার বিতরণ মঞ্চে দাঁড়িয়ে লি হুয়া মনে মনে শুধু সাধারণ ব্যক্তির মতো মনের মতো এক প্রেমিক পাওয়ার আশা রাখেন । এই ছবি ১৯৯৭ সালের শ্রেষ্ঠ কাহিনী ছবি হিসেবে সরকারী পুরষ্কার পেয়েছে এবং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্সবে পুরষ্কার পেয়েছে ।

    হংকংয়ের বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক উ সি ইউয়ান মনে করেন , ক্রীড়া বিষয়ক ছায়াছবি অন্যান্য বিষয়ের ছবির মতো জীবন থেকে পুষ্টি আহরণ করতে হবে । তিনি বিশ্বাস করেন , ২০০৮ সালের পেইচিং ওলিম্পিক গেম্স ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে দশর্করা আরো বেশী ভালো ক্রীড়া বিষয়ক চলচ্চিত্র দেখতে পাবেন ।