v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International Wednesday Apr 9th   2025 
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-08-11 10:37:22    
নতুন বাংলা বিশেষজ্ঞ আ বা ম ছালাউদ্দিনের সাক্ষাত্কার(দুই)

cri

 বাংলা বিভাগের কর্মী ইয়াং ওয়েই মিং সাক্ষাত্কারটি নিয়েছেন।

 প্রশ্নঃ আপনি শুধু সাংবাদিক নন। আপনি একজন শিল্পীও বটে। আপনি কবিতা লেখেন , গান লেখেন তাইনা। এ বিষয়ে কিছু কথা বলবেন কি?

 উঃ আমি ছোট বেলা থেকেই কবিতা লিখতে শুরু করি। মূলত ছড়া লেখায় প্রথমে আমার হাতে খড়ি। এ পর্যন্ত আমার ৪টি কবিতার বই এবং একটি গানের বই প্রকাশিত হয়েছে। আমি আমাদের দেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা প্রায় ৪০টি গান সুরের ওপর নির্ভর করে ইংরেজীতে অনুবাদ করেছি।

 রেডিওতে স্বাধীনতার সময়কাল থেকেই গীতিনকশা, জীবন্তিকা, নাটিকা ও কথিকা লেখাসহ অনেক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছি। আমি বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের একজন বিশেষ শ্রেণীর গীতিকার। স্বাধীনতার পূর্ব থেকে এ পর্যন্ত আমার প্রায় দেড় হাজারের মত গান প্রচারিত হয়েছে।

 উল্লেখ্য যে, চীনের একজন অনুবাদক জনাব পাই খাই ইউয়ান জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা অনুবাদ করে দুটি বই -- চীনা ভাষায় প্রকাশ করেছেন। সত্যিই এটা আনন্দের যে এখন চীনের জনগণ আমাদের কবিকে এবং আমাদের সাহিত্য সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারবেন।

 প্রশ্নঃ আপনিতো ছবিও তোলেন? এ বিষয়ে কিছু বলবেন কি?

 উঃ ছবি তোলা আমার সখ। আমি অষ্টম শ্রেণীতে পড়ার সময় থেকেই ছবি তোলা শুরু করি একটি আগফা মডেল ক্যামেরা দিয়ে। আমি দেশে ও বিদেশে আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে অংশ গ্রহণ করে পুরস্কারও পেয়েছি। উল্লেখ্য যে, ২০০৪ সালে একজন আলোকচিত্র শিল্পী হিসেবে চীন সফরের সুযোগ পাই। তখন চীনের বিভিন্ন শহর ও গ্রামাঞ্চলের তোলা ছবি এবং ইতোপূর্বে সরকারীভাবে চীন সফরকালীন সময়ের তোলা আলোকচিত্র নিয়ে ঢাকায় ও চট্টগ্রামে চীনের গ্রামীণ জীবনের ওপর প্রদর্শনী করেছি।

 প্রশ্নঃ চীনের গ্রামাঞ্চলের কি রকম ছাপ আপনার মনে ফেলেছে?

 উঃ চীনের চে চিয়াং প্রদেশের রাজধানী হাংচোউ, লি শুই শহর এবং সুং ইয়াং এর মত প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাবার সুযোগ পাই। পাহাড় নদী আর সবুজ ধান ও ফসলের ক্ষেত দেখে আমি অভিভূত হয়ে যাই। এই সব দৃশ্য ক্যামেরা বন্দী করে আমি আমার দেশে প্রদর্শনী করি। যাতে চীনের গ্রামের এই পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ও আধুনিক চাষাবাদ থেকে আমাদের সাধারণ মানুষ ও কৃষকরা কিছু শিখতে পারে।

 প্রশ্নঃ আচ্ছা ছালাউদ্দিন সাহেব আপনি চীন বেতারের প্রথম শ্রোতা আমি আমাদের সহকর্মী চিয়াং সাহেবের কাছ থেকে শুনেছি। এ বিষয়ে কিছু বলবেন কি?

 উঃ এটা ঠিক নয় যে আমি শুধু প্রথম শ্রোতা। আমি চীন বেতারের বাংলা বিভাগ শুরু করার ব্যাপারেও যথেষ্ট কাজ করেছি। আমি একটি সমাজতান্ত্রিক দেশের বাংলা প্রচার অনুষ্ঠান শুনে উদ্বুদ্ধ হই এবং পেইচিং বেতারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ১৯৬৭ সাল থেকে বাংলা বিভাগ শুরু হওয়ার পর্ব পর্যন্ত প্রায় ২ শর মত চিঠি লিখি। এবং তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তানে কোন ওয়েভে সম্প্রচার করলে ভালো হয় চীন বেতার থেকে জানতে চাইলে আমি সারা দেশ ঘুরে জরীপ করে মিডিয়াম ওয়েভের শ্রোতা বেশী হবে জানাই। এবং সাহস করে চেয়ারম্যান মাও সু তুং এর কাছেও কায়েকটি চিঠি লিখে ছিলাম। ১৯৬৯ সালের ১লা জানুয়ারীতে বাংলা বিভাগের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমার একটি কবিতাও ছিল। এছাড়াও সেই তখন থেকেই যোগাযোগ অব্যাহত ছিল এবং আমি মাও সে তুং-এর বইসহ চীনের পত্রপত্রিকা পেতে থাকি। আসলে বাংলা বিভাগে কাজ করবো এমন কথা ঠিক তখন ভাবি নি। তার পরবর্তীকালে এখানে কাজ করার একটি সুপ্ত বাসনা হৃদয়ে কাজ করতো। চীন আন্তর্জাতিক বেতারে কাজ করার সুযোগ পাওয়ায় সত্যিই আমি গর্বিত , আনন্দিত এবং এখানে কাজের মধ্য দিয়ে আমার দেশের মানুষকে জানাতে পারবো চীন আজ কত উন্নত। এবং কতটা পরিশ্রম আর নিষ্ঠা থাকলে একটি জাতি এত দ্রুত বিশ্বের সর্বোচ্চ স্থানে পৌঁছুতে পারে। এ থেকে আমার দেশও উপকৃত ও নিজেদের উন্নত জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে।

 প্রশ্নঃ এবারকার চীন আর আগের চীন সফরের অভিজ্ঞতা কি একই?

 উঃ অবশ্যই একই নয়। ১৯৯৯ সালের পর ২০০৪ সাল এবং ২০০৬ সালে এসে প্রতিবারই অনেক পার্থক্য দেখছি। এবার এসে মনে হলো, চীন যেন এগিয়ে চলেছে রকেটের গতিতে। এভাবে চললে চীন খুব দ্রুতই তার উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশ্বকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। এখানে বসবাস নিরাপদ ও নিশ্চিত । জীবন ধারা সাবলীল ও স্বাছন্দপূর্ণ।

 প্রশ্নঃ আপনার পরিবার সম্পর্কে কিছু বলবেন কি?

 উঃ আমার পরিবারে আমরা সদস্য হচ্ছি চার জন। আমার স্ত্রী রেহানা সুলতানা রোজী এবং দুই ছেলে রেহান সালাউদ্দিন ও সেজান সালাউদ্দিন। আমার বড় ছেলে আমার আসার আগেই চীনের উহান বিশ্ববিদ্যালয়ে এম বি এ পড়ার জন্যে ৩ বছরের স্কলারশীপ পেয়েছে। ছোট ছেলে এবার এস এস সি পাশ করলো। আশা করি আমরা সবাই পেইচিংয়ে কিছু দিন থাকবো।

 সেই সঙ্গে আমি আশা করি চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা বিভাগের কাজের মধ্য দিয়ে চীনের আর্থ-সামাজিক , সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রের উন্নয়নে তাদের একনিষ্ঠ পরিশ্রম, দেশ প্রেম আর ত্যাগের কথা বাংলা ভাষাভাষী জনগণের কাছে তুলে ধরে শ্রোতাদের চাহিদাকে পুরণে সক্ষম হবো। সবশেষে একটি কথা না বললেই নয়, চীনে আসার পর থেকে বাংলা বিভাগের পরিচালকসহ সকল সহকর্মীদের কাছ থেকে যে আন্তরিক সহযোগিতা ও অনুপ্রেরণা পাচ্ছি তা প্রশংসারও উঠে। আসলে চীনের মানুষের বন্ধুবাত্সল্য ও আতিথেয়তার তুলনা হয় না।

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China