v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-08-09 19:02:37    
ইয়াসুকুনিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের ক্ষেত্রে হাশিমোতো রিওতারোর মতের পরিবর্তন হয়েছিল

cri
    জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাশিমোতো রিওতারোর শেষকৃত্য অনুষ্ঠান ৮ আগস্ট টোকিওতে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে । ১৯৯৬ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয় মহা যুদ্ধে নিহত জাপানের প্রধান যুদ্ধাপরিধীদের স্মৃতিফলক বিশিষ্ট ইয়াসুকুনি সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছিলেন । ফলে এতে জাপানের ভেতর ও বাইরে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল । পরে তিনি চীন-জাপান বন্ধুত্বের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তার কার্যমেয়াদকালে ইয়াসুকুনিতে শ্রদ্ধা নিবেদন পরিত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন । বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কোইজুমি জুনিছিরো অব্যাহতভাবে ইয়াসুকুনি সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা নিবেদন করায় গত বছর হাশিমোতো রিওতারো অন্যান্য ৭জন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সমালোচনা করেছেন । এই ক্ষেত্রে হাশিমোতো রিওতারোর মতের যে পরিবর্তন হয়েছে , তা জনগণের হৃদয়ে গভীরভাবে রেখাপাত করেছে ।

    জাপানের এক রাজনীতিবিদের পরিবারে তার জন্ম । জাপানের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হওয়ার আগে তিনি দীর্ঘকাল ইয়াসুকুনিতে শ্রদ্ধা নিবেদন সমিতির চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন । ১৯৯৩ সালে ইয়াসুকুনিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য দ্বিতীয় মহা যুদ্ধে নিহত জাপানী যুদ্ধাপরাধীদের পরিবার পরিজন সংঘের চেয়ারম্যানও নিযুক্ত হয়েছিলেন ।

    রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার পর হাশিমোতো রিওতারো দু'দেশের মৈত্রী আদান -প্রদান কর্মকান্ডে নিয়োজিত হন । ১৯৯৭ সালে তিনি উত্তর পূর্ব চীনে অবস্থিত ১৯৩১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর জাপানী আগ্রাসন বিরোধী যুদ্ধ বিষয়ক স্মৃতি ভবনে পরিদর্শন করেছেন । সেখানে তিনি দু'দেশের বন্ধুত্বের মঙ্গল কামনার জন্য অভিলিখন লিখেছেন । তিনি ছিলেন এই স্মৃতি ভবন পরিদর্শনে আসা জাপানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী । এবছরের মার্চ মাসের শেষ দিকে তিনি জাপান-চীন ৭টি মৈত্রী গোষ্ঠীর সঙ্গে চীন সফর করেছেন । তখন তিনি চীনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে ইয়াসুকুনিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের ব্যাপারে তার মতের পরিবর্তনের কথা বর্ণনা করেছেন । তিনি বলেছেন , জাপানের রাষ্ট্রীয় স্বার্থ আর দু'দেশের সম্পর্কের ভবিষ্যতের দিক থেকে বিবেচনা করে তিনি ইয়াসুকুনিতে শ্রদ্ধা নিবেদন পরিত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ।

    আগামী সেপ্টেম্বর মাসে জাপানের লিবারেল ও ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রধান পদে নির্বাচনের কথা । নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ইয়াসুকুনিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের ব্যাপারে জাপানের রাজনীতিবিদ আর সমাজের বিভিন্ন মহলের মধ্যে পক্ষ-বিপক্ষে তর্ক-বিতর্ক তীব্র হয়ে উঠছে । জুলাই মাসে জাপানী রাজবংশ সূত্রে জানা গেছে , জাপানের প্রয়াত সম্রাট হিরোহিতো দ্বিতীয় মহা যুদ্ধে নিহত জাপানী প্রধান যুদ্ধাপরাধীদের স্মৃতি ফলক বিশিষ্ট ইয়াসুকুনিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ব্যাপক অসন্তোষপ্রকাশ করেছেন এবং সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন । সম্রাট হিরোহিতোর দ্ব্যর্থহীন সিদ্ধান্তের জন্য এই সম্পর্কিত তর্ক-বিতর্ক আরো তীব্র হয়ে উঠেছে ।

    ইয়াসুকুনিতে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে নিহত ১৪জন উর্ধ্বতন জাপানী যুদ্ধাপরাধীর স্মৃতিফলক আছে । এ পর্যন্ত জাপানের বর্তমান প্রধান মন্ত্রী কোইজুমি জুনিছিরো তার কার্যমেয়াদকালে পাঁচ বার ইয়াসুকুনিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন । ফলে যেমন বিশ্ব সমাজে , তেমনি জাপানের অভ্যন্তরে ইয়াসুকুনিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের বিরোধিতা করার একটি প্রবল অভিব্যক্তি সঞ্চারিত হয়েছে । সর্বশেষ জরীপ অনুযায়ী , ১৫ আগস্ট ইয়াসুকুনিতে কোইজুমি জুনিছিরোর আরেকবার শ্রদ্ধা নিবেদনের কথা । ৫৪ শতাংশ জাপানী তার বিরোধিতা করছে এবং সর্মথন করার অনুপাত মাত্র ৩৬ শতাংশ ।

    জনমত জরিপের চাপ উপেক্ষা করে কোইজুমি জুনিছিরো ইয়াসুকুনিতে তার শ্রদ্ধা নিবেদনের অধিষ্ঠানে অটল থাকেন এবং আগামী ১৫ তারিখ ইয়াসুকুনিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করার ইঙ্গিত দিয়েছেন । তার এই একগুঁয়ে সিদ্ধান্তের জন্য এশিয়ার জনগণ সাংঘাতিকভাবে মর্মাহত হয়েছেন । জাপানের বিভিন্ন মহলের ব্যক্তিরা মনে করেন যে , রাষ্ট্রীয় নেতা হিসেবে ইয়াসুকুনিতে জুনিছিরোর শ্রদ্ধা নিবেদন এক ধরনের রাষ্ট্রীয় আচরণ । এতে জাপানী সরকারের মতামত প্রকাশ পেয়েছে ।