v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-08-08 20:42:18    
চীনের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সংস্কৃতি মেলা সেনচেন শহরে আয়োজিত

cri
    পৃথিবীতে প্রচুর জাতি ও ভাষা আছে , কিন্তু সংস্কৃতি পারস্পরিক সমঝোতার সেতু প্রতিষ্ঠা করতে পারে । সংস্কৃতির সেতুর মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের নাগরিকরা পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন এবং পারস্পরিক সমঝোতা বাড়াতে পারেন । সম্প্রতি দক্ষিণ চীনের সেনচেন শহরে আয়োজিত চীনের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সংস্কৃতি মেলায় দেশবিদেশের কয়েক ডজন শহরের সাংস্কৃতিক সম্পদ ও শিল্পকলা প্রদর্শিতহয়েছে ।

    হোয়াং হো নদীর অববাহিকা অঞ্চল হলো প্রাচীন চীনের সংস্কৃতির উত্পত্তি স্থল। এই অঞ্চলের বেশ কিছু প্রাচীন সংস্কৃতি ও শিল্পকলার এখনও প্রাণশক্তি আছে । মেলার এক নম্বর প্রদশর্নী কক্ষে চীনের থাই চি বক্সিংয়ের জন্মস্থান—হোনান প্রদেশের চিয়াও চুও শহরের ওয়েন জেলার ছেন চিয়া কৌ থেকে আসা বিশাধিক থাই চি বক্সিং কোচ ছেন স্টাইলের থাই চি বক্সিং পরিবেশন করেছেন । ওয়েন জেলার ছেন চিয়া কৌ চীনের ছেন স্টাইলের থাই চি বক্সিংয়ের উত্পত্তি স্থল । ছেন স্টাইলের থাই চি বক্সিং চীনের থাই চি বক্সিংয়ের পাঁচটি প্রধান শাখার মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন । পরিবেশনের সময় দর্শকরা দেখেছেন থাই চি চর্চাকারীদের হাত-পা নরমভাবে সঞ্চালন করেন , আসলে তাদের অন্তর্নিহিতশক্তি বিরাট । জানা গেছে , বতর্মানে পৃথিবীতে মোট ১৫ কোটি লোক চীনের থাই চি বক্সিং চর্চা করছেন । থাই চি বক্সিং কোচ ছেন কাং বলেছেন , ছেন স্টাইলের থাই চি বক্সিংয়ে হাত –পা সঞ্চালনের লাইন বৃত্তাকার , এই বক্সিংয়ে হাত –পা ঘোরানোর মাধ্যমে শক্তি সৃষ্টি করা হয় । এই স্টাইলের থাই চি বক্সিংয়ের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো বক্সিং , শ্বাস-নিশ্বাস ও চীনের দর্শনের সমন্বয় সাধন করা হয়েছে ।

    এই মেলায় প্রদর্শিত চীনের অন্যতম জাতীয় সম্পদ—' সি মু উ তিন ' দর্শকদের দৃষ্টি কেড়েছে । ' তিন ' প্রাচীন চীনের এক খাবার রাখার পাত্র । পাত্রটির তিনটি পা ও দুটি হাতা । সি মু উ তিন ১৯৩৯ সালের ১৯ মার্চ হোনান প্রদেশের আন ইয়াং জেলার উ কোন গ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয় । এই অঞ্চল খৃষ্টপূর্ব ষষ্ঠদশ শতাব্দীতে চীনের ইন রাজবংশ ও শান রাজবংশের সংস্কৃতির কেন্দ্রস্থল । চীনের বিখ্যাত প্রাণীর হাড় ও কচ্ছপের খোলের উপর খোদাই করা অক্ষরগুলো এই অঞ্চলেই উদ্ধার করা হয়েছে । বতর্মানে চীনের ইন ও সান রাজবংশের বৈশিষ্ট্যময় অক্ষরগুলো ও অন্যান্য পুরাকীর্তিকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের তালিকাভুক্ত করার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে ।

    চীনের ইতিহাসে খাবার রাখার পাত্র ' তিন '-এর বিশেষ তাত্পর্য আছে। বোঞ্জ সভ্যতার আমলে ' তিন ' ছিল চীনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অতিথি আপ্যায়নের পাত্র । সি মু উ তিনের উচ্চতা ১.৩৩ মিটার , চীনে উদ্ধার করা তিন'গুলোর মধ্যে এই তিন সবচেয়ে বড় । এই পাত্র তখনকার চীনের উন্নত ঢালাই প্রকৌশলের প্রতিনিধিত্ব করে । তা ছাড়া এই পাত্র উদ্ধারের পিছনে একটি অসাধারণ কাহিনীও আছে । ১৯৩৯ সালে এই পাত্র উদ্ধারের সময় চীনে জাপান- আক্রমণ বিরোধী যুদ্ধ চলছিল । এই পাত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় অধিবাসী উ ফেই উন ও তার পরিবার-পরিজন অনেক চেষ্টা করেছিলেন । এ বছর উ পেই উনের বয়স ৮৪ বছর হয়েছে । তার নাতী উ সু আন বলেছেন , ১৯৩৯ সালের ১৯ মার্চ পারিবারিক গোরস্থান মেরামতের সময় এই পাত্র আবিষ্কার করা হয়। এই মূল্যবান জিনিস যাতে জাপানীদের হাতে না পড়ে , আমার দাদা পাত্রটিকে বাড়ীর সবচেয়ে গোপনীয় স্থানে রেখেছেন । খবর পেয়ে জাপানীরা আমার বাসায় তিনবার তল্লাসি করেছিল , দাদা ও তার ভাইরা তিনবার পাত্রটি স্থানান্তরিত করেছেন । শেষে তারা বাসার একটি ঘরের মাটির নীচে পাত্রটি পুঁতে রেখেছেন । মাটির নীচে আট বছর থাকার পর ১৯৫৯ সালে চীনের ইতিহাস যাদুঘর প্রতিষ্ঠার সময় দাদা এই মূল্যবান পাত্র যাদুঘরে জমা দিয়েছেন । এই পাত্র আজ পর্যন্ত চীনের ইতিহাস যাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে ।

    দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের কুই চৌ প্রদেশে মিয়াও জাতির অধিবাসীরা থাকেন। শত শত বছর ধরে মিয়াও জাতির অধিবাসীরা কাপড়ের উপর বৈশিষ্ট্যময় রঙিন নকশা মুদ্রণের কৌশল আবিষ্কার করেছেন । কাপড়ের উপর হাতে আঁকা ছবিগুলোতে মিয়াও জাতির বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত হয় । এই মেলায় অংশ নেয়া হোং ফু ইউয়েন গত ত্রিশাধিক বছর কাপড়ের উপর রঙিন নকশা মুদ্রনের কাজ করেছেন । তার ডিজাইন করা এক হাজারেরও বেশী নকশার মধ্যে বেশ কয়েকটি যাদুঘরে সংরক্ষিত আছে ।