v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-08-07 18:18:52    
পাক-ভারত পরস্পরের কূটনীতিককে বহিষ্কার করার ফলে দু'দেশের শান্তি প্রক্রিয়া নতুন পরীক্ষার সম্মুখীন

cri

 সম্প্রতি পাকিস্তান ও ভারত পরস্পরের কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে, ফলে দু'দেশের সম্পর্ক কিছুটা প্রশমনের পর পুনরায় অচলাবস্থায় ফিরে যাবার পরীক্ষার সম্মুখীন হচ্ছে।

 গত ৫ আগস্ট সকালে পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতের হাই কমিশনের দীপক কাউল নামে একজন কাউন্সিলার রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে লাহোরে যাওয়ার পথে পাকিস্তানের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। পাকিস্তানের সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, তখন কাউল গোয়েন্দার হাত থেকে কিছু গোপনীয় দলিল এবং বেলুচিস্তান প্রদেশের মানচিত্র গ্রহণ করছিলেন। তারপর কাউলকে ইসলামাবাদে ভারতের হাই কমিশনে পৌঁছে দিয়ে তাঁকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পাকিস্তান ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কয়েক ঘন্টা পর ভারত সে দেশে নিযুক্ত পাকিস্তান হাই কমিশনের কর্মকর্তাকে ডেকে কাউলের প্রেফতার এবং তাঁকে বহিষ্কার করার ব্যাপার নিয়ে পাকিস্তানের কাছে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। ভারত বলেছে, কাউল নির্দোষ। তিনি আত্মীয়স্বজনদের অভ্যর্থনা করার জন্য লাহোর গিয়েছিলেন। এরপর ভারতে নিযুক্ত পাকিস্তান হাই কমিশনের রাজনৈতিক কাউন্সিলার সৈয়দ মোহাম্মদ রফিক আহমেদ ৭ আগস্টের আগে ভারত ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছে, কিন্তু তাঁকে বহিষ্কার করার কোন কারণ জানানো হয় নি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সতর্ক করে বলেছে , পাকিস্তানের এই আচরণের দরুণ শান্তি প্রক্রিয়া অচলাবস্থায় পড়বে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তাসনিম আসলাম বলেছেন, ভারত "প্রতিশোধমূলক আচরণ" করেছে।

 ঘটনার পর পাকিস্তান ও ভারতের তথ্য মাধ্যম উভয়েই থুথু ছোড়াছুড়ির মাধ্যমে পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। পাকিস্তানের তথ্য মাধ্যম বলেছে, কাউল হচ্ছেন ভারতের একটি গোয়েন্দা বিভাগের কর্মচারী। এই বিভাগ পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে কয়েকটি সন্ত্রাসী তত্পরতার সঙ্গে জড়িত। কাউল পাকিস্তানের কোন বিভাগকে অবহিত না করে ইসলামাবাদ ত্যাগ করেছেন। ভারতের তথ্য মাধ্যম অভিযোগ করেছে যে, পাকিস্তানের নিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তা কাউলকে গ্রেফতার করার কয়েক ঘন্টা পর তাঁকে হাতকড়া লাগিয়ে এবং চোখে কাপড় বেঁধে গোপন স্থানে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। ভারতের তথ্য মাধ্যম বলেছে, কাউল নির্দোষ।

 ভারত ও পাকিস্তান পরস্পরের কূটনীতিককে বহিষ্কার করা এবারই প্রথম নয়। ২০০৩ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে এর আগে এক বার হয়েছিল। তবে ২০০৪ সালের প্রথম দিক থেকে দু'দেশের সম্পর্ক ধাপে ধাপে উন্নত হতে থাকে। দু'দেশ পাস্পরিক আস্থা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং সার্বিক আলাপ-আলোচনার চেষ্টা শুরু করে, যাতে দু'দেশের মধ্যকার অমীমাংসিত সমস্যাগুলো সমাধান করা যায়। যদিও কাশ্মীর সমস্যায় দু'দেশের কেউই আপোষ করতে চায় না। তবু অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আদানপ্রদানের ক্ষেত্রে দু'পক্ষের সহযোগিতা অপেক্ষাকৃতভাবে সুষ্ঠু। দু'দেশের উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক লক্ষনীয়ভাবে প্রশমিত হয়েছে। কিন্তু জুলাই মাসে ভারতের আর্থিক কেন্দ্র বোম্বাইয়ে সংঘটিত বিস্ফোরণ ঘটনা আবার দু'দেশের সম্পর্কের উপর কালো ছায়া ফেলেছে। যদিও পাকিস্তান অস্বীকার করে বলেছে যে, তারা এই বিস্ফোরণ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। তবু ভারত মনে করে , বিস্ফোরণ ঘটনা আর "পাকিস্তানী উপাদানের" সঙ্গে সম্পর্কিত। পাকিস্তান সরকার তদন্তের ব্যাপারে সাহায্য করার প্রস্তাব দিয়েছে, কিন্তু ভারত তা প্রত্যাখ্যান করেছে। তখন থেকেই পাক-ভারত সম্পর্কে আবার উত্তেজনা দেখা দেয়। পূর্বনির্ধারিত জুলাই মাসের শেষ দিকে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত পাক-ভারত পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক ভারতের দাবির কারণে অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। এবারকার পরষ্পরের কূটনীতিককে বহিষ্কার ঘটনা পাক-ভারতের জটিল সম্পর্কের উপর আরো উত্তেজনায় সৃষ্টি করেছে।

 বিশ্লেষকরা উল্লেখ করেছেন , বর্তমানে পাক-ভারত সম্পর্কের উন্নয়নের বাধাবিঘ্ন হচ্ছে দু'দেশ পরস্পরকে বিশ্বাস করে না। গত সপ্তাহে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত সার্কের মন্ত্রী পর্যায়ের অধিবেশনে ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের আচরণ থেকেই তা বুঝা যায়। যদিও গত সপ্তাহে দু'দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে পাক-ভারত শান্তি প্রক্রিয়ায় কিছু অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে, তাহলেও এবারকার পরস্পরের কূটনীতিককে বহিষ্কারের ঘটনা এ রকম পদ্ধতিতে নিষ্পত্তি করা সম্ভব নয়। বুঝা যায় , এবারকার পরস্পরের কূটনীতিককে বহিষ্কার ঘটনা হচ্ছে মুম্বাই বিস্ফোরণ ঘটনার পর পাক-ভারত সম্পর্ক শীতল হওয়ার ধারাবাহিকতা। পাক-ভারতের সম্পর্ক অব্যাহতভাবে বিপরীত দিকে ধাবিত হওয়াকে প্রতিরোধ করতে চাইলে ভারত ও পাকিস্তানের নেতৃবৃন্দ যথেষ্ট আন্তরিকতা দেখানো এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া উচিত।