২০০৮ সাল ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে চীন আর বিশ্ব ২০০৮ সালের পেইচিং অলিম্পিক গেমসের ওপর আরো বেশি নিবিড় নজর রাখছে। তাদের মধ্যে মার্কিন সংগীত বিশেষজ্ঞ মিঃ কুইনসি জোনসও অন্তর্ভূক্ত ।
১৯৮৫ সালে আফ্রিকান শরনার্থীদের সাহায্যার্থে, মাইকেল জ্যাক্সনসহ দশজন বিশ্ব বিখ্যাত্ গায়কের গাওয়া we are the world বিশ্বের সর্বত্র প্রচারিত হয়। কুইনসি জোনস এ গান সৃষ্টি করেন। এ গান ছাড়াও তাঁর আরও বিশ্ববিখ্যাত অর্জন আছে। তিনি বিখ্যাত্ সংগীত প্রযোজন, ডিস্ক উত্পাদক, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও চলচ্চিত্র সংগীতের প্রযোজনক। তিনি চাঁদে প্রচারিত প্রথম গানের সষ্ট্রা, তিনি সবচেয়ে বেশি গ্রামি সংগীত মনোনয়ন (৭৭বার) অর্জন করেন, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক গ্রামী পুরস্কার(২৭) অর্জন করেন। তিনি সাতবার অস্কার মনোনয়ন এবং একবার অস্কার পুরস্কার জয় অর্জন করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বিখ্যাত্ মানবাধিকারবাদী সক্রিয় ব্যক্তি এবং দাতব্য কর্মী।
মে মাসে ৭৩ বছর বয়সী কুইনসি জোনস প্রথমবারের মতো চীনের মূল ভূভাগে আসেন। চারদিনের সফরকালে, তিনি পেইচিং ও সাংহাইয়ের সড়ক, বিখ্যাত্ দৃশ্য, বিশ্ববিদ্যালয় ও পাবে বেড়ান। অবশ্য চীনে আসার লক্ষ্য শুধু বেড়ানো নয়, কিন্তু পেইচিং অলিম্পিক গেমসের সংগীত সৃষ্টির ইচ্ছা প্রকাশ করা। তিনি আশা করেন, চীনের সাংস্কৃতিক শিল্প ক্রমে ক্রমে আরো উন্মুক্ত হবার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর সংগীত সংশ্লিষ্ট পন্যদ্রব্য আরো বেশি চীনের বাজারে প্রবেশ করবে। তাঁর দৃষ্টিতে এটা চীন ও মার্কিন সংস্কৃতির আদান-প্রদান এবং তাঁর নিজের জন্যে কল্যানকর। তিনি মনে করেন, ২০০৮ সালের পেইচিং অলিম্পিক গেমসের টাইটেল গান রচনায় অংশ নেয়া একটি ভাল সুযোগ।
তিনি পেইচিংয়ে বলেছেন, তিনি ২০০৮ সালের পেইচিং অলিম্পিক গেমসের টাইটেল গান রচনায় অংশ নেবেন। তিনি আশা করেন, ২০০৮ সালে পেইচিংয়ে একটি বিরাটাকারের কনসার্ট অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেছেন,
আমি গৌরবের সঙ্গে পেইচিং অলিম্পিক গেমস ২০০৮-এর টাইটেল গান রচনা করবো। তিনি মন থেকে বলি, আমি কখনও কখনও ভেবেছি যে, একটি সুযোগ পেলে বিশ্বের কাছে চীন সম্বন্ধে ব্যাখ্যা করবো।
তিনি মনে করেন, চীনের বৈশিষ্ট্য এ গানের মর্মতেজ হওয়া উচিত, বিশেষ করে তা হবে চীনের বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন সংগীত এবং সুর। তার পাশাপাশি এ গানে বিশ্বের বিভিন্ন সংগীতের বৈশিষ্ট্যও যুক্ত হবে।
পেইচিং অলিম্পিক কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান চিয়াং সিয়াওইউ বলেছেন, জোনসের মতো গুরুত্বপূর্ণ সংগীতজ্ঞ পেইচিং অলিম্পিক গেমসের টাইটেল গান রচনায় অংশ নিলে, পেইচিং অলিম্পিক কমিটি খুবই খুশি। তাঁর অংশ গ্রহণ আরো বেশি দেশী-বিদেশী শিল্পীদের পেইচিং অলিম্পিক গেমসে অংশ নিতে অনুপ্রেরণা দেবে।
জোনস সাহেব হচ্ছেন বিশ্ব বিখ্যাত্ শিল্পী, আমরা তাঁকে আন্তরিকভাবে সম্মান করি। আমরা আশা করি, তিনি একটি খুব সুন্দর সংগীত পেইচিং অলিম্পিক গেমসের জন্যে রচনা করবেন।
তিনি আরো বলেছেন, পেইচিং অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনের আগে পেইচিং অলিম্পিক কমিটি প্রতি বছরে অলিম্পিক গান রচনা প্রতিযোগিতা আয়োজন করবে, এসব গানের মধ্য থেকে ২০০৮ অলিম্পিক গেমসের টাইটেল গান বেছে নেয়া হবে। ২০০৮ সালে অলিম্পিক গেমসের টাইটেল গান নির্ধারিত হবে। কুইনসি জোনসের এবারকার চীন সফর শুধু কয়েক দিনের, কিন্তু তাঁর মনে এ ক'দিনের সফরের খুবই গভীর চিহ্ন অংকিত হয়েছে।
"চীনে প্রতিটি মানুষ আমার আপনজনের মত, আমি গর্বিত এবং কৃতজ্ঞ বোধ করি। এত চমত্কার যে অনেক বার আমি কালিফোর্নিয়ায় আমার বাড়িঘর বিক্রি করতে চাই, এবং চীনে এসে থাকতে চাই। আমি এখানকার সংস্কৃতি এবং মানসিকতা পছন্দ করি।"
|