v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-08-02 16:42:44    
লেবানন-ইসরাইল সংঘর্ষের নিরসনে ইইউ'র ইচ্ছা থাকলেও তার সামর্থ্য সীমিত

cri
    মধ্যপ্রচ্যের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পরিষদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বিশেষ অধিবেশন ১ আগস্ট ব্রাসেল্সে অনুষ্ঠিত হয়েছে । সাড়ে তিন ঘন্টা তুমুল তর্কবিতর্কের পর এই বিশেষ অধিবেশনশেষে একটি বিবৃতি প্রকাশিত হয় । বিবৃতিতে ইসরাইলী বাহিনী ও লেবাননের হেজবুল্লাহর সশস্ত্র সংগঠনকে অবিলম্বে বৈরি অবস্থার অবসান ঘটানোর আহবান জানানো হয়েছে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিভিন্ন পক্ষের গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক কাঠামো নির্ধারণের জন্যে জাতি সংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি সমর্থন জানানো হয়েছে যাতে দক্ষিণ লেবাননে জাতি সংঘের ক্ষমতাপ্রাপ্ত আন্তর্জাতিক বাহিনী পাঠানোর পথ সুগম হয় । অধিবেশনশেষে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে ইইউ'র পালাক্রমিক চেয়ারম্যান দেশ - ফিনল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এরকি টুওমিয়োজা জোর দিয়ে বলেছেন , ইইউ খুব সম্ভব একমাত্র মধ্যস্থতাকারী হবে যা লেবানন ও ইসরাইল উভয়ের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হবে । ইইউ অবিলম্বে লেবানন-ইসরাইল সংঘর্ষের অবসান ঘটানোর জন্যে অব্যাহতভাবে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে যাবে । তবে বিশ্লষকরা মনে করেন যে, বর্তমান পরিস্থিতিতে লেবানন-ইসরাইল সংঘর্ষের নিরসন সমস্যায় ইইউর ইচ্ছা থাকলেও তার সামর্থ্য খুবই সীমিত রয়েছে ।

    প্রথমত ইসরাইলের ওপর ইইউ'র প্রভাব যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে অনেক কম । লেবাননের ওপর তার প্রভাবও সিরিয়া ও ইরানের চেয়ে কম । কোনো কোনো বিশ্লেষক বলেছেন , এবারের লেবনন-ইসরাইল সংঘর্ষে ইসরাইল অনমনীয় মনোভাব গ্রহণ করেছে । তার কারণ হচ্ছে , অপহৃত ইসরাইলী সৈনিকদের উদ্ধারের সুযোগে ইসরাইল সম্পূর্ণভাবে লেবননের হেজবুল্লাহর সশস্ত্র সংগঠনকে নিশ্চিহ্ন করা সহ উত্তরাংশের সীমান্ত বরাবর দীর্ঘদিনের স্থতিশীলতা নিশ্চিত করা যায় । পক্ষান্তরে ইসরাইল ও পশ্চিমা দেশগুলোর চোখে লেবাননের হেজবুল্লাহ ইরান ও সিরিয়ার কাছ থেকে সমর্থন পাচ্ছে। হেজবুল্লাহর প্রতি এই দুটো দেশ বিশেষ করে ইরানের সমর্থন দানের লক্ষ্য হচ্ছে যুদ্ধের আগুণ ছড়িয়ে দেয়া যাতে ইরানের পরমাণু সমস্যায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে দেয়া যায় । এই পটভূমিকায় সংঘর্ষে লিপ্ত লেবানন-ইসরাইল দু পক্ষই ইইউ'র কথা কতটা পালন করবে , সে ব্যাপারে যাথেষ্ট সংশয় রয়েছে ।

    নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক একজন কূটনীতিক বলেছেন , ইসরাইল-লেবনন সংঘর্ষ প্রায় ২০ দিন ধরে চলছে । এখন গোটা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উপলব্ধি করতে পেরেছে যে, কাল বিলম্ব না করে এই সংঘর্ষের অবসান ঘটানো উচিত । তবে ইইউ রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যা করতে পারে তা হচ্ছে, সময়ের তালিকার প্রশ্নে চাপ প্রয়োগ করা এবং সময়ের স্বলপনার কথা তুলে ধরা যাতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যুদ্ধ বিরতি পালন করা যায় ।

দ্বিতীয়ত ইইউ'র ভেতরে লেবানন-ইসরাইল সংঘর্ষের সমস্যায় বিভিন্ন সদস্য দেশের মধ্যে মতভেদ রয়েছে । জানা গেছে , গোড়ার দিকে ইইউ'র পালাক্রমিক চেয়াম্যান দেশ - ফিনল্যান্ডের পেশকৃত খসড়া বিবৃতিতে লেবানন ও ইসরাইলকে অবিলম্বে যুদ্ধ বিরতি পালন করা সংক্রান্ত বিষয়বস্তু অন্তর্ভুক্ত ছিল । তবে বৃটেন , জার্মানী ও পোল্যান্ডের মত মার্কিনপন্থী দেশ এই বিষয়বস্তুর বিরোধিতা করেছে । তারা মনে করে যে , রাজনৈতিক অবস্থা এখনো পরিপক্ক হয় নি । এই সময়ে যুদ্ধ বিরতি পালনের আহবান জানালে তা সফল হবে না । অবশেষে লুকসেম্বার্গের প্রস্তাব অনুসারে পররাষ্ট্র মন্ত্রীতদের অধিবেশনে গৃহীত বিবৃতিতে এইভাবে বলা হয়েছে যে , লেবানন ও ইসরাইলের প্রতি অবিলম্বে বৈরি অবস্থার অবসান ঘটানোর আহবান জানানো হয়েছে যাতে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ বিরতির জন্যে প্রস্তুতি নেয়া যায় ।

    দক্ষিণ লেবাননে শান্তি রক্ষী বাহিনী প্রেরণের সমস্যায় ইইউ শান্তি রক্ষা তত্পরতায় অংশ নেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও যদি সত্যি সত্যিই পাঠানো হয় , তাহলে তা বাস্তবায়নের পথে বহু বাধার সম্মুখীন হবে । সুতরাং ইইউ'র পররাষ্ট্র মন্ত্রী অধিবেশনে প্রকাশিত বিবৃতি এই সংঘর্ষের চূড়ান্ত নিষ্পত্তির পক্ষে সীমিতভাবে সহায়তা করবে ।