আমরা তো জানি পানি হচ্ছে জীবনের উত্স। মানবজাতির সকল কর্মকান্ড পানির সঙ্গে সম্পর্কিত। কিন্তু আপনারা জানেন কি কিভাবে বিশুদ্ধ পানি খান ? আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদের জন্যে বিশুদ্ধ পানি পান ও বিশুদ্ধ পানি প্রস্তুতের পদ্ধতি সম্পর্কে পরিচয় করিয়ে দেবো ।
প্রথম. সিদ্ধ পানি হচ্ছে সবচেয়ে ভাল বিশুদ্ধ পানি
সাধারণ জীবনে অনেক ধরণের পানীয় রয়েছে । যেমন সোডা, ফলের রস , সবজির রস , দৈ, পরিষ্কার পানি, খনিজ পানি ইত্যাদি । যদিও অনেক পানীয়ই খেতে মজা লাগে, তবুও কিছু পানি অপরিষ্কার বা চিনি উপাদান সমৃদ্ধ বলে মানুষের শরীরের প্রতি অসহায়ক হবে । যেমন সোডা পানিয়ের মধ্যে শর্করাপূর্ণ উপাদান থাকায় আপনাদের চামড়াকে অসুন্দর করবে, চিনি বেশি খেলে আপনাদের পাকস্থলীর পানি গ্রহণ করার ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে যাবে । দীর্ঘকাল ধরে এ রকম পানীয় খেলে আপনাদের শরীরের কার্যকর পদার্থের রাসায়নিক রূপান্তর নষ্ট হবে । অতএব স্বাস্থ্যের দিক থেকে দেখতে গেলে , সিদ্ধ পানি হচ্ছে সবচেয়ে ভাল পানীয় । সিদ্ধ পানিতে কোনো তাপাপন নেই, সরাসরিভাবে শরীর তাকে গ্রহন করতে পারে । আপনারা সবসময় সিদ্ধ পানি খেলে, শরীরের পানির অভাবের কারণে রক্তনালীর রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে এবং শরীরের কার্যকর পদার্থের রাসায়নিক রূপান্তর ত্বরান্বিত করবে । সাধারণত আপনারা ৩০ ডিগ্রির তাপমাত্রার নীচে সিদ্ধ গরম পানি খেলে তা শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না এবং রক্তনালী নষ্ট করবে না ।
দ্বিতীয়. পানি খাওয়ার পরিমাণ ব্যক্তিগতভাবে হিসাব করা
প্রতিদিন পানি খাওয়ার পরিমাণ নিজেদের শরীরের পানি খরচের পরিমাণের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। সাধারণত একজন পুরুষের প্রতিদিন পানি খাওয়ার পরিমাণ প্রায় ১৫০০ মিলিলিটার থেকে ২৫০০ মিলিলিটার । যদি প্রতিদিন পানির পরিমাণ এই সংখ্যার তিন ভাগের এক ভাগ হয়, তাহলে মানুষ শরীরে অসুস্থ্য বোধ করবে । যেমন খাওয়ার ইচ্ছা হবে না , মন খারাপ থাকবে ইত্যাদি । প্রত্যেক লোকের পানি খাওয়ার পরিমাণ, পরিবেশ ও আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে স্বাস্থ্যসংক্রান্ত বিষয়টি জড়িত । স্বাভাবিকভাবে একটু বেশি পানি খেলে তা স্বাস্থ্যের জন্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না । কিন্তু বিশেষভাবে কোন লোককে তাদের পানি খাওয়ার পরিমাণ হিসাব করতে হবে । যেমন শোথরোগী,হৃদরোগী এবং কিডনি রোগীদেরবেশি পানি খাওয়া উচিত নয় , যাতে গুরুতর রোগ হওয়া এড়ানো যায় । কিন্তু সর্দিগর্মি রোগী, কোষ্ঠকাঠিন্য রোগী এবং শুষ্ক চামড়া রোগীদের প্রতি বেশি পানি খেলে তাদের রোগ প্রায় সেড়ে যাবে । তাছাড়া ,যারা জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে, তাদের শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় বেশি পানি খরচ হবে । তখন বেশি পানি খেলে, শরীরের কার্যক্ষমতা পুনরুদ্ধারে সহায়ক হবে । গর্ভবতীরা এবং খেলাধুলা বেশি করলে বেশি পানি খাওয়া উচিত ।
তৃতীয়. পানি খাওয়ার ভালো অভ্যাস সৃষ্টি করুন
ধীরে ধীরে পানি খাওয়া ভালো । দ্রুত খেলে চলবে না । কারণ দ্রুতভাবে পানি খেলে, পানির সঙ্গে কিছু বাতাসও আপনার পেটে প্রবেশ করতে পারে । এতে মনে হবে পরে পেট ভরা এবং প্রায়শই হিক্কা হবে । বিশেষ করে যাদের পাকস্থলী খুব ভাল নয়, তাদের আস্তে আস্তে পানি খাওয়া উচিত ।তৃঞ্চা লাগার আগেই পানি খাওয়া উচিত । দু'বেলা খাবারের মধ্যে পানি খাওয়া ভাল এবং প্রতি ঘন্টায় এক গ্লাস করে পানি খান । খাবার খাওয়ার পাশা পাশি পানি খাওয়া ভাল নয় । এতে পাকস্থলীর স্বাভাবিক সামর্থ্য নষ্ট হয়ে যায় । ঘুমানোর আগে বেশি পানি খাবেন না । জেগে উঠার পর যত বেশি পারেন পানি খান। ঘুমানোর আগে বেশি পানি খেলে, জেগে উঠার পর আপনাদের চোখ শোথ হবে । কিন্তু প্রতিদিন ভোরবেলায় এক গ্লাস পানি খেলে , আপনাদের শরীরের জন্য অনেক সহায়ক হবে ।
|