v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-08-01 17:02:18    
ইয়াংসি নদীর তিন গিরিখাত প্রকল্পের পুরাকীর্তি সংরক্ষণ

cri
    ইয়াংসি নদীর তিন গিরিখাত প্রাচীনকাল থেকেই একটি বিখ্যাত দশর্নীয় স্থান । তিন গিরিখাত প্রকল্প সম্পন্ন হওয়ার পর পর্যটকরা তিনগিরিখাতের মনোরম দৃশ্য ও পৃথিবীর বৃহত্তম জলপ্রকল্প ছাড়া তিন গিরিখাত অঞ্চলের বৈশিষ্ট্যময় প্রাচীন স্থাপত্যও দেখতে পাবেন ।

    পুরাকীর্তি সংরক্ষণের জন্য তিন গিরিখাত জলপ্রকল্প অঞ্চলের প্রাচীন স্থাপত্য , প্রাচীন নগর- গেট , পাথরের সেতু আর প্রাচীন তোড়নশোভিত পথ তিন গিরিখাত প্রকল্পের এক কিলোমিটার দূরের ফিনিক্স পাহাড়ে স্থানান্তরিত করা হয়েছে । এই সব প্রাচীন স্থাপত্যগুলোর মধ্যে চিয়াং তু মন্দিরের ইতিহাস এক হাজার বছরেও বেশী দীর্ঘ , প্রাচীন চীনে স্থানীয় অধিবাসীরা এই মন্দিরে ইয়াংসি নদীর পানি দেবতার প্রতি প্রাথর্না করতেন । হুপেই প্রদেশের পুরাকীর্তি সংরক্ষণ ব্যুরোর পুরাকীর্তি বিভাগের প্রধান চু চিয়েন হুয়া বলেছেন ,

    "পৃথিবীর বৃহতম জলপ্রকল্প—তিন গিরিখাত প্রকল্প অঞ্চলের প্রাচীন স্থাপত্যগুলো স্থান্তরিক করা এক সহজ ব্যাপার নয় । যদিও স্থাপত্যগুলোর পরিবেশ পরিবতির্ত হয়েছে , তবে পুরাকীর্তি সংরক্ষণের জন্য এটা একটি কার্যকর উপায় । "

    বতর্মানে তিন গিরিখাত প্রকল্প অঞ্চলের অনেক পুরাকীর্তি ফিনিক্স পাহাড়ে স্থানান্তরিত করা হয়েছে । এই পাহাড়ে স্থানান্তরিত প্রাচীন স্থাপত্যগুলোকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের পুরাকীর্তিগুলোর নামের তালিকায় অন্তভুর্ক্ত করা হয়েছে । চীনের প্রাচীন সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান উত্পত্তি স্থল হিসেবে তিন গিরিখাত অঞ্চলে প্রচুর বৈশিষ্ট্যময় বসতবাড়ী , প্রাচীন মন্দির , সেতু ও ফলক আছে , মাটির নীচে অনেক প্রাচীনকালের কবর , পুরনো ও নতুন প্রস্তর যুগের পুরাকীর্তি আছে ।

    ১৯৯৪ সালে তিন গিরিখাত প্রকল্পের নিমার্ণ কাজ শুরু হয় । ১৯৯২ সাল থেকেই তিন গিরিখাত অঞ্চলে পুরাকীর্তি তদন্তের কাজ শুরু হয় । সরকার তিন গিরিখাত অঞ্চলের পুরাকীর্তি সংরক্ষণ পরিকল্পনা তৈরী করে । দেশের শতাধিক পেশাদার প্রত্নতত্ত্ব গবেষণা সংস্থা তিন গিরিখাত প্রকল্পের পুরাকীর্তি সংরক্ষণ কাজে অংশ নিয়েছে । হু পেই প্রদেশের পুরাকীর্তি সংরক্ষণ ব্যুরোর প্রধান সেন হাই নিন বলেছেন , তিন গিরিখাত প্রকল্প অঞ্চলের পুরাকীর্তি সংরক্ষণের সাফল্যমন্ডিত হয়েছে । এই কাজ শুরু হওয়ার আগে বিশেষজ্ঞরা তদন্ত ও প্রস্তুতির কাজ করেছেন । এ ক্ষেত্রে সরকার যথেষ্ট অর্থ বরাদ্দ করেছে । ১৯৯৫ সাল থেকে তিন গিরিখাত প্রকল্পের প্রস্তুতি থেকে ২০০৪ সালে জলাধার পানি রাখা পর্যন্ত এই প্রকল্প দশ বছর স্থায়ী ছিল , কাজেই সংশ্লিষ্ট বিভাগ দীর্ঘ দশ বছরে প্রকল্প অঞ্চলের সব মূল্যবান পুরাকীর্তি স্থানান্তরিত করেছে।

    চীন সরকার ও গবেষণা বিভাগ তিন গিরিখাত প্রকল্পের পুরাকীর্তি সংরক্ষণের কাজকে যথেষ্ঠ গুরুত্ব দেয় । এই সব পুরাকীর্তি রক্ষা ও গবেষণার জন্য ইয়াংসী নদীর উজান অঞ্চলের ছুন ছিং শহরে তিন গিরিখাত যাদুঘর আর ইয়াংসি নদীর মধ্য অববাহিকার হুপেই প্রদেশের চিকুই জেলায় তিন গিরিখাত পুরাকীর্তি সংরক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয় । এর পাশাপাশি হু পেই প্রদেশের পুরাকীর্তি সংরক্ষণ বিভাগ ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রয়োগ করে তিন গিরিখাত অঞ্চলের পুরাকীর্তি উদ্ধার ও স্থানান্তরিত হওয়ার গোটা প্রক্রিয়া তুলে ধরেছে । বতর্মানে তিন গিরিখাত প্রকল্পের পুরাকীর্তি উদ্ধার ও স্থানান্তরিত করার কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে । পুরাকীর্তিগুলো সুবিন্যাস্ত ও গবেষণার কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে । দেশের ৫০টিরও বেশী বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রত্নতত্ত্ব গবেষণা সংস্থা এই কাজে অংশ নিয়েছে এবং ভালো ফল অজর্ন করেছে । হুপেই প্রদেশের পুরাকীর্তি ব্যুরোর প্রধান সেন হাই ইয়ু বলেছেন , আমরা এখন উদ্ধার করা পুকীর্তি গবেষণা করছি । বিদেশের পুরাকীর্তি গবেষণা কাজের তুলনায় আমাদের কাজ নিকৃষ্ট নয় । গবেষণার সময় আমরা যুক্তরাষ্ট্র , জাপান , দক্ষিণ কোরিয়া , ক্যানাডা ও পশ্চিম ইউরোপের গবেষণা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি । বিদেশের বিশেষজ্ঞরা আমাদের গবেষণা রিপোর্ট পড়ে তার উচ্চ মূল্যায়ন করেছেন । অবশ্য তিন গিরিখাত প্রকল্পের পুরাকীর্তি সংরক্ষণ কাজে ভুল ত্রুটিও আছে । প্রযুক্তিগত কারণে আর পুরাকীর্তির মূল্য অনুমান ক্ষেত্রে ভুল সিদ্ধান্ত নেয়ার দরুণ কিছু মূল্যবান পুরাকীর্তি চিরকালের জন্য পানির নীচে থাকতে হয়েছে । তা ছাড়া তিন গিরিখাত প্রকল্প অঞ্চলের পুরাকীর্তি সংরক্ষণের কাজ দশ বছর স্থায়ী বলে মাটির উপরের কিছু পুরাকীর্তি সরকারের সংরক্ষণ ব্যবস্থা নেয়ার আগেই নষ্ট হয়েছে ।