১৭ জুন মিসর সফর করার পর চীনের প্রধামন্ত্রী ওয়েন চিয়াপাও ১৭ জুন রাতে কাইরোয় চীন-মিসর সম্পর্কের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা মিসরের পাঁচজন বন্ধুত্বপরায়ন ব্যক্তিকে 'চীন-মিসর সম্পর্ক ৫০তম বার্ষিকীর উল্লেখযোগ্য পুরস্কার' প্রদান করেছেন।
এ পাঁচজন বন্ধুত্বপরায়ন ব্যক্তি ছিলেন: সাবেক জাতিসংঘ মহাসচিব ও মিসরের মানবাধিকার কমিটির চেয়ারম্যান বুট্রোস ঘালি, মিসরের সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী ও মিসর-চীন মৈত্রী সমিতির চেয়ারম্যান ইউসেফ আমিন ওয়ালি, মিসরের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী হোস্সেইন কামেল বাহা'আ আল-দিন ও সবচেয়ে আগে চীনের আকুপানচার মিসরে এনে দেয়া মিসরের বিখ্যাত্ ডাক্তার কামাল গাউগারি।
ঘালি ১৯২২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক। তিনি মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও উপপ্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৯১ সালে তিনি জাতিসংঘের ষষ্ঠ মহাসচিবের পদে নিযুক্ত হন। বর্তমানে তিনি মিসরের জাতীয় মানবাধিকার কমিটির চেয়ারম্যান। তিনি বহুবার চীন সফর করেন, দীর্ঘকাল ধরে চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা, এবং চীনসহ ব্যাপক উন্নয়ন মূখী দেশগুলোর স্বার্থ সুরক্ষায় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। চীনের তালিয়ান শহর তাঁকে মযাদা সম্পন্ন নাগরিকের খেতাব প্রদান করেছে।
আহমেদ ইসমত আবদেন মেগুইদ ১৯২৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন, তিনি মিসরের আলেক্সান্ডর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ ও ফ্রান্সের প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক। তিনি আইন ও দর্শনশাস্ত্রের ডক্টরেট ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি পর পর জাতিসংঘে মিসরের স্থায়ী প্রতিনিধি, মিসরের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
(আহমেদ ইসমত আবদেন মেগুইদ চীন সফরকালে)
পদে নিযুক্ত ছিলেন। ১৯৯১ সাল থেকে ২০০১ সাল পযন্ত তিনি আরব লীগের মহাসচিব হন। তিনি আরব দেশগুলোর সঙ্গে চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা জোরদারের জন্যে গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখেন। ১৯৯৩ সালে তিনি আরব লীগের মহাসচিব হিসেবে চীন সফর করেন, তাঁর প্রয়াসে আরব লীগ আগস্ট মাসে পেইচিংয়ে কার্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটা আরব দেশগুলো ও চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
(ওয়েন চিয়াপাও ইউসেক আমীন ওয়ালিকে পুরস্কার প্রদান করেন)
ইউসেক আমীন ওয়ালি ১৯৩০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মিসরের কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রযুক্তি উপদেষ্টা ছিলেন। দিনি কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রী, মিসরের জাতীয় গণতন্ত্র পার্টির সম্পাদকও ছিলেন। বর্তমানে তিনি জাতীয় গণতন্ত্র পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও চীন-মিসর মৈত্রী সমিতির চেয়ারম্যান। তিনি ৩৬ বছর ধরে চীন-মিসর মৈত্রী সমিতির চেয়ারম্যানের পদে নিযুক্ত হন, তিনি চীনের জনগণের পুরনো বন্ধু। তিনি চীন ও মিসরের জনগণের মধ্যে সমঝোতা বাড়ানো ও দু'দেশের মৈত্রী গভীর করার জন্যে অবদান রেখেছেন।
বাহা'আ আল-দিন ১৯৩২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মিসর মেডিক্যাল কলেজের স্নাতক। পরে তিনি ডক্টরেট ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৯১ থেকে ২০০৪ সাল পযন্ত তিনি মিসরের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। তিনি স্থায়ীভাবে চীন-মিসর শিক্ষার আদান-প্রদান ও সহযোগিতায় চেষ্টা করেন। তাঁর প্রয়াসেই চীন ও মিসরের মধ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে উচ্চ পযায়ের গবেষণা ও পর্যালোচনার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়। এর ফলে দু'দেশের শিক্ষা ক্ষেত্রের পারস্পরিক সমঝোতা ও আদান-প্রদান বেড়ে যায়।
কামাল গাউগারি ১৯২১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক। তিনি ছিলেন চীনে আকুপানচার শিক্ষা প্রাপ্ত প্রথম মিসরের মানুষ। তিনি পর পর ৭বার চীন সফর করেছেন। মিসরে আকুপানচারের প্রচার ও উন্নয়নের জন্যে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তাঁর প্রয়াসে মিসরের স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় ১৯৭৫ সালে চীনের আকুপানচার পদ্ধতিকে অনুমোদন করে। তাঁর ৩০ বছরের প্রয়াসে চীনের আকুপানচার মিসরে একটি গুরুত্বপূর্ণ চিকিত্সা হিসেবে জণপ্রিয়তা পায়।
|