দুদিনব্যাপী কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট সম্মেলন ৬ ও ৭ জুলাই পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে । কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটে প্রধানতঃ চীনা ভাষা শেখানো হয় । পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলে ইতোমধ্যে ৮০টি কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । চীন সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটকে সাধ্যমতো সমর্থন দেবে এবং চীনা ভাষা অধ্যয়নকারীদের সুবিধা দেবে ।
কনফুসিয়াস চীনের ঐতিহ্যিক সংস্কৃতির একজন প্রতিনিধি । তবে কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট কনফুসিয়াসের চিন্তাধারা প্রচারের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয় , জার্মানীর গোটে ইন্সটিটিউটের মতো কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটেপ্রধানতঃ বিদেশীদের চীনা ভাষা শেখানো হয় এবং চীনের সংস্কৃতি প্রচার করা হয় ।
দক্ষিণ কোরিয়ার কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট ২০০৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় । এই ইন্সটিটিউট হলো বিদেশে প্রতিষ্ঠিত প্রথম কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউ । বর্তমানে এই ইন্সটিটিউটে শিক্ষার্থীর সংখ্যা চার শ' । কিম কি ছেওল তাদের মধ্যে একজন । তিনি আমাদের সংবাদদাতাকে বলেছেন , আমি দু বছর চীনা ভাষা শিখেছি । চীনা ভাষা শেখার পর আমি চীনের সংস্কৃতি আগের চেয়ে আরো পছন্দ করি। চীন একটি বড় দেশ , চীনে চাকরী ও ব্যবসা করতে চীনা ভাষা আমাকে সাহায্য করবে । এর আগে চীনা ভাষা শেখার একমাত্র উপায় হল চীনে যাওয়া । এখন আমরা নিজ দেশে চীনা ভাষা শেখার সুযোগ পেয়েছি ।
৬ জুলাই চীনের রাষ্ট্রীয় কাউন্সিলার ছেন চি লি কনফুসিয়ান ইন্সটিটিউট সম্মেলনে বলেছেন , কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট পৃথিবীর পাঁচটি মহাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । বর্তমানে পৃথিবীর ৩৬টি দেশ ও অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিতআশিটি কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট বিদেশের চীনা ভাষা শেখার চাহিদা পূরণ করেছে । এটা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চীনের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা ও আদান-প্রদান বাড়ানোর অনুকূল।
চীনের হান জাতির ভাষা একটি জটিল ভাষা , পাশ্চাত্য দেশগুলোর শিক্ষার্থী মনে করেন চীনা ভাষার উচ্চারণ ও অক্ষর লেখা খুব কঠিন । কাজেই পৃথিবীতে চীনা ভাষা বেশী প্রচলিত ছিল না । সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বিদেশের সঙ্গে চীনের আদান প্রদান দিন দিন বাড়ছে । চীনে বিদেশীর সংখ্যা আর বিদেশে চীনার সংখ্যাও দ্রুত বাড়ে । চীন সম্পর্কে আরো বেশী জানার জন্য অনেকে বিদেশী চীনা ভাষা শিখতে শুরু করেন । এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে চীন সরকার বিদেশে কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।
ফ্রান্সের পোইটিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটে চীনা ভাষা শেখানোর ব্যবস্থা ছাড়াও একটি লাইব্রেরী আছে , এতে তিন হাজার চীনা ভাষার বই আছে । কেনিয়ার নাইরোবীস্থ কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটে প্রধানতঃ চীনা সংস্কৃতির প্রচারের মাধ্যমে চীনা ভাষা শিখানো হয় । যেমন চীনের চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী আয়োজন ও চীনা হস্তলিপি সম্পর্কিত আলোচনা সভা অনুষ্ঠান ইত্যাদি । এখন এই ইন্সটিটিউটের ছাত্রছাত্রীরা চীনা ভাষায় কথা বলা ছাড়া বেশ কয়েকটি চীনা ভাষার গান গাইতে পারেন ।
চীনের রাষ্ট্রীয় কাউন্সিলার ছেন চি লি সম্মেলনে আরো বলেছেন , চীনা ভাষা শেখা ও চীনের সংস্কৃতি সম্বন্ধে জ্ঞানার্জনে চীন সরকার বিদেশী ছাত্রছাত্রীদেরযথাসাধ্য সুবিধা দেবে । বর্তমানে আরো ৩০টি দেশের ৭০টিরও বেশী সংস্থা কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠার অনুরোধ জানিয়েছে । এ বছরের মধ্যে পৃথিবীতে কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের সংখ্যা এক শ' ছাড়িয়ে যাবে ।
|