v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-07-24 15:36:34    
পৃথিবিতে হানভাষা জনপ্রিয় করার অভিযান চলছে

cri
    সাধারণত লোকজণের দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে ইংরেজী প্রথম নির্বাচন এবং ইংরেজী এখনও একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ভাষা। তবে চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক প্রভাববৃদ্ধির কারণে বিশ্বের অনেকে হানভাষাকে তাদের দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে দিন দিন অধিকহারে বেছে নিচ্ছে। জানা গেছে, বর্তমান বিশ্বে মোট ৩ কোটির বেশী মানুষ হানভাষা শিখছেন, এর মধ্যে অনেকে মনে করেন যে , হানভাষা রপ্ত করলে একক ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অনেক সুবিধা হবে। আজকের অনুষ্ঠানে আমরা এই বিষয় নিয়ে আলোকপাত করবো।

    কের্সটিন সটোর্ম হচ্ছেন জার্মানীর মিনস্টেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী। তিনি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সময় হানভাষা পছন্দ করেন । কিন্তু তখন তাঁর বিদ্যালয়ে হানভাষার ক্লাস ছিলো না। তাই তাঁর এই ইচ্ছা পূরণ হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর মেজর ছিলো হান ভাষা। চার বছর লেখাপড়ার পর এখন তিনি চীনা ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে খুবই ভালভাবে কথাবার্তা বলতে পারেন।

    " বর্তমান চীনের অনেক সুযোগ আছে, অনেক জার্মান কম্পানি চীনে এসে তার শাখা স্থাপন করছে , দুদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক দিন দিন ঘনিষ্ঠ হচ্ছে । তাই আমার মনে হয় হানভাষা শিখ চাকরি পাওয়ার জন্যে সাহায়ক হবে।"

    তিনি আরো বলেছেন, এখন জার্মানীর অনেক মানুষ হানভাষা শিখছেন । যখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন তখন প্রতি হানভাষা ক্লাসে শুধু ১০ জন ছাত্রছাত্রী ছিলো , কিন্তু এখন প্রতি হানভাষা ক্লাসে মোট ৪০ জন আছেন।

    আসলে হানভাষা একটি জটিল ভাষা, বিশেষ করে পশ্চিমা জগতের লোকের কাছে হানভাষার শব্দ, আকার লেখাপড়ার সময় অনেক ঝামেলা হয়। কিন্তু চীন বিশ্বমুখীনতা আরো সম্প্রসারণ ও অবিরাম দ্রুত অর্থনৈতিক বৃদ্ধি হওয়ায় বিশ্বের সঙ্গে চীনের আদানপ্রদান ও যোগাযোগ দিন দিন ব্যাপক ও গভীর হয়েছে, যাতে অনেক বিদেশী হানভাষা শিখতে পছন্দ করেন।

    ওয়াং ছাও হচ্ছেন দক্ষিণ কোরিয়ায় হানভাষা শেখানোর একজন চীনা শিক্ষক । তিনি বলেছেন, বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ার অনেক অধিবাসী দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে হানভাষা শিখছেন ।

    " একজন মাদাম , তাঁর কাজে অনেক ব্যস্ততা , মাঝে মাঝে তার দেরী হয় এবং প্রত্যেক ক্লাসে এসে তিনি ঘেমে নেয়ে যান। তাঁর সময় কম , কিন্তু বাড়ির কাজ সব ভালভাব শেষ করতে পারেন। আমি অনুভব করি যে দক্ষিণ কোরিয়ার জনগণের হানভাষা ও চীন দেশের জন্য অনেক আগ্রহ রয়েছে , তারা বলেছে যে সুযোগ পেলে অব্যশই চীন এসে কাজ করবে অথবা ভ্রমণ করবে।

    বর্তমান চীন হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার বড় বাণিজ্য অংশীদার , গত পাঁচ বছরে দক্ষিণ কোরিয়ায় হানভাষা শেখার সংখ্যা ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, এখন চীনে অধ্যয়ন করতে আসা বিদেশী ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশী , প্রায় ৪০ শতাংশ । আসলে দক্ষিণ কোরিয়া ছাড়াও এশিয়ার অন্য অঞ্চল এবং ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্রকে হানভাষাকে একটি নতুন ভাষা হিসেবে আয়ত্ত করতে হবে।

    হানভাষায় লেখাপড়ার উত্সাহ ত্বরান্বিত করায় অনেক দেশের সরকার হানভাষা শেখানোর উপর গুরুত্ব দেয়। ভিয়েতনামের শিক্ষা প্রশিক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তা ভু মিনহ টুয়ান বলেছেন:

    " এখন, ভিয়েতনামের ছাত্রছাত্রীরা হানভাষা শিখতে খুবই পছন্দ করে। বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া, সরকারের আরো অনেক কিছু হানভাষা কেন্দ্র আছে, অনেক ছাত্রছাত্রীরা অবসর সময়ে হানভাষা শিখে।"

    জানা গেছে, জার্মানীতে হানভাষা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ডিগ্রি অর্জনের সাবজিক্ট হয়। ব্রিটেনে শিক্ষা বিভাগের সমর্থনে বিদ্যালয়ের হানভাষা শেখানোর পাঠ্যপুস্তক নির্ধারণ করে। ইন্দোনেশিয়ায় শিক্ষা বিভাগ পরিকল্পনা করে যে আগামী বছর নাগদ দেশের ৮ হাজারেরও বেশি বিদ্যালয়ে হানভাষা ক্লাস গড়ে উঠবে।

    বিদেশী ছাত্রছাত্রীর হানভাষার মান পরীক্ষা দেওয়ার জন্যে১৯৯১ সাল থেকে চীন সরকার বিদেশীদের হানভাষার মান পরীক্ষা চালু করে। বর্তমানে শুধু চীনে নয়, বিশ্বের ৩৪টি দেশের মধ্যে মোট ১৫০টিও বেশী পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। যাতে বিভিন্ন দেশের হানভাষার অধ্যয়ক এই পরীক্ষায় সহজভাবে অংশ নিতে পারে। নানা পর্যায়ের সার্টিফিকেট অনুযায়ী, বিদেশী ছাত্রছাত্রী চীনের উচ্চ অধ্যয়ন করতে আবেদন জানতে পারে।

    মার্কিন যক্তরাষ্ট্রের ছরিস মুটজ এই উদ্দেশ্যের জন্যে হানভাষার মান পরীক্ষায় অংশ নেয়:

    " আমি এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণের কয়েকটি কারণ হচ্ছে : প্রথম, আমি নিজের হানভাষার মান জানতে চাই এবং আমার কোথায় জোরদার করা উচিত । দ্বিতীয়, এটা চীনের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের হানভাষার মান পরীক্ষা, যদি আমি চীনের স্নাতকোত্তর ডিগ্রিআবেদন জানতে চাই তাহলে হানভাষার মান পরীক্ষার ছ'য় পর্যায়ে পৌঁছবে।"

    সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন সরকার দেশি-বিদেশী সহযোগিতার উপায় নিয়ে বিদেশে কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট স্থাপন করে । উল্লেখ্য , ২০০৪ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় বিশ্বের প্রথমটি কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট স্থাপন করে ।

    এখন পর্যন্ত, বিশ্বের মোট ৩৬টি দেশ ও অঞ্চলের ৮০টি কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট রয়েছে। জানা গেছে, কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট হচ্ছে বিদেশীরা হানভাষা শিখা, চীন দেশকে জানানোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা।