v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-07-19 19:23:42    
আমার তারুণ্য চীনে ফুটেছে

cri

 

    দক্ষিণ চীনের হু পেই প্রদেশের উ হান শহরে এমন একজন বাঙালী যুবক আছে , চীনের সরকারী বৃত্তি পেয়ে তিনি উ হানে চার বছর লেখাপড়া করেছেন , কিন্তু এই চার বছরে তিনি সবসময় হাসবাতালে গিয়ে রোগীদেরকে সাহায্য করেন । প্রত্যেক মাসে তিনি শুধু ৮ শো রেন মিন বি বৃত্তি পান , এই সীমিত অর্থ থেকে তিনি শিশু লিউকিমিয়া রোগীদেরকে সাহায্য দেন । চীনের ঐতিহ্যিক বসন্ত উত্সবে তিনি মাইনাস বিশ ডিগ্রীর নদীতে একজন মেয়েকে বাঁচিয়েছেন । তিনিও হু পেই প্রদেশে প্রথম বিদেশি হিসেবে শ্রেষ্ঠ যুবক পুরস্কার পেয়েছে ।

এসব শুনলে আপনারা নিশ্চয়ই জানতে চান তিনি কেমন একজন যুবক , চীনে তাঁর কি কি গল্প আছে । তিনি হলেন বাঙালী যুবক মোস্তাক আহমেদ গালিব ।

    চলতি বছরে উ হানের শ্রেষ্ঠ যুবকের নির্বাচনে উ হান টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংঙালী ছাত্র গালিব প্রথম এই বড় পুরস্কার পাওয়ার বিদেশী হয়েছেন । সংবাদদাতার সাক্ষাত্কার নেয়ার সময় তিনি বলেছেন :

গালিব অনেক ভালো কাজ করেছেন বলে তাঁকে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে । ছোটবেলায় তিনি চীনকে পছন্দ করতে শুরু করেছেন । ২০০২ সালে তিনি চীনের সরকারী বৃত্তি পেয়ে চীনে লেখাপড়া করতে শুরু করেছেন । তাঁর চীনে আসার স্বপ্ন সত্যি বাস্তবায়ন হয়েছে । তখন বিকালে ক্লাস নেয় , অন্য বিদেশি ছাত্রছাত্রীরা এই সময়ে বাইরে খেলাধুলা বা বেড়াতে যায় , তবে গালিব এই সময়ে কিছু বাস্তব কাজ করতে চান । তিনি বন্ধুদের কাছে জেনেছেন যে উ হানের সে হো হাসপাতালে অনেক শিশু লিউকিমিয়া রোগী আছে । তিনি এই হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করার পর সেখানে এই সব শিশুদেরকে সাহায্য করতে শুরু করেছেন । চার বছর ধরে তিনি তাঁর সীমিত বৃত্তির মধ্যে কিছু টাকা নিয়ে শিশু লিউকিমিয়া রোগীদেরকে কিছু সাহায্য করেন । হয়ত কিছু কিছু লোক মনে করে এভাবে বুদ্ধিমান নয় , তবে গালিব মনে করেন :

    প্রত্যেক সপ্তাহে গালিব হাসপাতালে গিয়ে সে সব শিশুকে দেখেন । প্রত্যেক বার তিনি মনে মনে শিশুদের শখ মনে রাখেন , পরের পার হাসপাতালে গিয়ে শিশুরা চমত্কৃত পেতে পারবে । তিনি শিশুদেরকে তাঁদের সবচেয়ে পছন্দ পুতুর কিনেন । ছোট শিশুদের জন্য তিনি তাদেরকে ছবি আকা শিখান এবং তাদের সঙ্গে খেলেন । বড় শিশুদের জন্য তিনি ইংরেজী ভাষা শিখান । একবার এক ছোট শিশু তাঁকে জিজ্ঞেস করে : বড় ভাই , শিশু মরার পর কি হবে ? গালিব এই প্রশ্ন শুনে মনে খুব দুঃখ লাগে , তিনি এই নিষ্ঠুর প্রশ্নকে রম্যান্টিক করতে চান , তাই তিনি উত্তর দিয়ে বলেন : শিশু মরার পর আকাশে সবচেয়ে উজ্জ্বল সেই তারা হতে পারবে । আস্তে আস্তে শিশুদেরকে যত্ন নেয়া তাঁর জীবনে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হয়েছে । শিশুদের সঙ্গে থাকার সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি দেখেছেন যে , গ্রামে আসা কিছু শিশু লিউকিমিয়া রোগীরা বেশ গরীপ , একটি আবেল কেনা তাদের জন্যও কঠিন ব্যাপার । তাই গালিব সর্ব প্রয়াস চালিয়ে তাদেরকে সাহায্য দেন । চলতি বছরের মার্চ মাসে গালিব উ হান টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেষ্ঠ আচরণ পুরস্কার পেয়েছেন । বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে এক হাজার রেন মিন বি'র অর্থ পুরস্কার দিয়েছে । এই এক হাজার রেন মিন বি তাঁর এক মাসের বৃত্তির চেয়েও বেশি , তবে তিনি অবিলম্বে এই সব টাকা হাসপাতালের শিশুদেরকে দিয়েছে ।

(গালিব আর তাঁর চীনা ছোট ভাই)

তা ছাড়া , গালিব অত্যন্ত শীতে নদীতে চাপিয়ে একজন মেয়েকে বাঁচিয়েছেন , তার বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন ইয়েমেনের ছাত্র আছে , একবার সে সিঁড়ি থেকে পড়েছে , তার নিরাপত্তার জন্য গালিব নিজের হস্টেল তার সঙ্গে পরিবর্তন করেছেন -----গালিব গোবনে অনেক এমন কাজ করেছেন । গালিব সম্বন্ধে তাঁর শিক্ষাক , বন্ধুরা সংবাদদাতাকেও অনেক বলেছেন । তারা মনে করে গালিব একজন উষ্ণহৃদয় ছেলে । সবার সঙ্গে গালিব বন্ধু হতে পারবেন । গালিব নিজেরও মনে হয় আস্তে আস্তে চীনাদের জীবনে যুক্ত হয়েছে ।

    আলাপ করার মাধ্যমে সংবাদদাতা জেনেছে যে লেখাপড়ার জন্য গালিব সবসময় বাসায় ফিরে যেতে পারেন না এবং সুযোগও কম । তাই সাক্ষাত্কার শেষে সংবাদদাতা গালিবকে বলে যে আমাদের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশের আত্নীয়দেরকে কিছু বলতে পারেন । গালিব বলেছেন , আমি আমার মায়ের সঙ্গে কিছু বলতে চাই :

    গালিব চীনকে খুব ভালোবাসে এবং চীনারা সব তাঁর বন্ধু । ভবিষ্যতের পরিকল্পনা সম্বন্ধে গালিব খুব আশাবাদী । তিনি অব্যাহতভাবে চীনে লেখাপড়া করতে চান এবং এম বি এ কোর্স পড়তে চান । তিনি শিশু লিউকিমিয়া রোগীদেরকে অব্যাহতভাবে সাহায্য দিতে চান । তিনি আরো বেশী লোককেও সাহায্য করতে চান। আমরা দেখেছি , এই বাঙালী যুবক নিজের আচরণের মাধ্যমে নিজের তারুণ্য আরো উজ্জ্বল করেছে , এবং নিজের জীবনকে আরো বাস্তব করেছে ।