v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-07-13 21:56:44    
তিন গিরিখাত

cri
    ছিংহাই-তিব্বত মালভূমি ইয়াংসি নদীর উত্স। হাজার হাজার বছর ধরে প্রবাহিত হওয়ার ফলে ২ শো কিলোমিটার দীর্ঘ সুমহা উপত্যকা---তিন গিরিখাতের রুপ ধরেছে। এ তিন গিরিখাত ছোওছিং শহর আর হুপেই প্রদেশে অবস্থিত। ১২ বছর আগে তিন গিরিখাতের বিদ্যূত উত্পাদন প্রকল্প নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার ফলে তিন গিরিখাতে পানির সার্বিক উচ্চতা বেড়েছে। এই বিরাধ বাঁধের উপর লম্বা লম্বা নদীর মতো জলাধার । পানি রির্জাভ করার পর অনেক অংশে ইয়াংসি নদীর জলসীমার প্রন্থ আগের চাইতে দ্বিগুণের কাছাকাছি বৃদ্ধি পেয়েছে। দেখতে মনে হয় উপত্যকার মাঝখানে একটি হ্রদ গঠিত হয়েছে।

     হুপেই প্রদেশের ইছাং শহরের পযর্টন ব্যুর্রোর উপ পরিচালক মিস্টার গাও চাও বলেছেন, চলতি বছরের জুল মাসে তিন গিরিখাতে পানির উচ্চতা ১৩৫ মিটার পৌঁছার পর তিন গিরিখাত বরাবার এলাকার প্রধান প্রধান দর্শনীয়স্থান পানিতে ডুবে যায়নি বরং আরও বেশী নতুন দৃশ্য বেড়েছে। বতর্মানে তিন গিরিখাত দেখতে আগের চেয়ে আরও সুন্দর।গাও চাও বলেছেন,

    অতীতে তিন গিরিখাত দেখতে সুমহা বলে দেশ-বিদেশ বিখ্যাত । কিন্তু পানির রির্জাভ হওয়ার পর নদীতে পানির প্রবাহের গতি মন্থর হয়ে গেছে , পানিও আগের চাইতে আরও স্বচ্ছ। উল্লেখযোগ্য উচু উপত্যকায় হ্রদের সৌন্দর্য দেখা দিয়েছে। এ কথা বলা যায় যে, পুরাতন তিন গিরিখাতের সৌন্দর্য কমেনি , নতুন  তিন গিরিখাতের দৃশ্য বর্ণনা করার অন্ত নেই।

    মিস্টার গাও চাও ব্যাখ্যা করে বলেছেন, কারণ তিন গিরিখাতের খাড়া ঢালের উচ্চতাসাধারণত সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে এক হাজার মিটার বেশী । তা ছাড়া এখন নদীতে পানির সার্বিক উচ্চতা বেড়েছে। যদিও বতর্মান স্বচ্ছ হ্রদের জলসীমা অতীতের খরস্রোতের স্থলাভিসিক্ত হয়েছে, তবে গিরিখাতের অনুভুতি কিছুতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। তিন গিরিখাতের ইছান অংশ হল উচু উপত্যকায় স্বচ্ছ হ্রদ উপভোগ করার আদর্শ জায়গা।

    তিন গিরিখাত বরারব এলাকায় সেনলন নামে একটি নদী আছে। এই নদী দেশ-বিদেশের পযর্টকদের কাছে পরিচিত। নদীর দৈর্ঘ্য ৬০ কিলোমিটার । নদীর দু'পাশের খাড়া ঢালের প্রতিবিম্ব নদীতে পড়ে নদীর পানিতে সবুজ যুগিয়ে দিয়েছে। সেনলন নদীর সবচেয়ে সরু অংশ ৫ মিটার কম। পযর্টকদের ছোট নৌকায় বসে ভাসতে হবে । তখন মানুষ চার দিকের সবুজের ঘেরা হয়। সেখানকার বায়ু পরিষ্কার-পরিছিন্ন এবং পরিবেশ শান্ত। মাঝে মাঝে পাখির ডাক শোনা যায়।

    চীনের আন্তর্জাতিক পর্যটন সংস্থার গাইড মিস হয়াং উয়েন ব্যাখ্যা করে বলেছেন, বাস্তবে তিন গিরিখাতের বরাবর এলাকায় সেনলন নদীর মতো আরও দশ বারোটি ছোট-বড় নদী আছে। তিন গিনিখাতের জলাধারে পানি রিজের্ভ করার আগে এই জলাধারে পানি বেশ ছিল না বলে জাহাজ এ সব নদীর গভীরে প্রবেশ করতে পারত না। এখন জলাধারে জল বেশী হওয়ার পর জাহাজগুলো এ সব নদীর গভীরে যেতে পারে। পযর্টকরা জাহাজে বসে আরও মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন। মিস হওয়াং ভবিষ্যত বাণি করেছেন, জাহাজে চড়ে এ সব ছোটছোট নদীগুলোতে ভাসা তিন গিরিখাতের নতুন নতুন দর্শনীয় স্থানগুলোর একটি আকর্ষনীয় জায়গায় পরিণত হবে।তিনি বলেছেন,

    এ সব ছোট-ছোট নদীতে ভেসে পরিদর্শন করার সময় পযর্টকদের শক্তিবিহীন ছোট কাঠের তৈরী নৌকায় চড়তে হবে। এ ধরনের নৌকা দেখতে উইল গাছের পাতার মতো। এ ধরনের ছোট নৌকায় বসে চার দিকের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে করতে মনে হয় প্রকৃতিতে ফিরে গেল ।

    বাস্তবে গত শতাব্দীর নবই দশকে তিন গিরিখাতের প্রকল্প শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিন গিরিখাতের খ্যাতি দূরে ছড়িয়ে পড়ে। বিদেশী পযর্টকরা ওখানে পরিদর্শন করতে শুরু করেন। কেবল ২০০৫ সালে তিন গিরিখাত ২ লক্ষ বিদেশী পযর্টককে আকর্ষণ করেছে। এখন ইয়াংসি নদীর তিন গিরিখাত বিদেশী পর্যটকদের পক্ষে একটি গুরুত্বপূর্ণ পযর্টন গন্তব্যস্থানে পরিণত হয়েছে।

    চীনের আন্তর্জাতিক পযর্টন সংস্থার পরিবহণ ব্যবসা বিভাগের মিস্টার হওয়াং বলেছেন, তিন গিরিখাতে পানির উচ্চতা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে অনেক বিদেশী পযর্টক গ্রীষ্মকালে ইয়াংসি নদীর উজানে নৌবিহার করতে পছন্দ করেন। তিনি বলেছেন,

    আমাদের বিদেশী পযর্টকদের জন্যে যে সবচেয়ে অল্প পাল্লাভ্রমণব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা হল চীনের ছুংছিন থেকে হুপে প্রদেশের ইছাং পযর্ন্ত। এ দু' জায়গার মধ্যে পযর্টকদের জন্যে ভারাটে জাহাজের ব্যবস্থা নেয়া হয়। দেশী বিদেশী পযর্টকরাতিন গিরিখাতের দু'পাশের দৃশ্য বেশী পছন্দ করেন। বতর্মানে তিন গিরিখাতে পানি রির্জেভের প্রথম পর্যায়।২০০৯ সালে অথার্ত তিন গিরিখাতের নির্মাণ কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হওয়ার সময় তিন গিরিখাতে পানির উচ্চতা সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ১৭৫ মিটার পৌছবে। তখন তিন গিরি খাতের দৃশ্য আরও আকর্ষনীয় হবে।

    হুপে প্রদেশের ইছাং শহরের পযর্টন ব্যুর্রোরউপ পরিচালক গাও চাও বলেছেন,

    তিন গিরিখাত চিরকাল রহস্যময়, সুন্দর।আমি আশা করি, অধিক থেকে অধিকতর বিদেশী পযর্টক তাদের দৃষ্টি তিন গিরিখাতের বাঁধের দিকে নিবিষ্ট করতে পারবেন।

    তা ছাড়া, যদি তিন গিরিখাতের প্রতি আপনার কৌতুহল থাকে তাহলে আগে থেকে পরিকল্পনা নিতে হবে। আশা করি আপনার ভ্রমণ বিচিত্রময় হবে।