|
|
(GMT+08:00)
2006-07-12 20:22:50
|
|
শিশুদের লিওকেমিয়া
cri
লিওকেমিয়া রোগ এক ধরনের অতি ক্ষতিকর টিউমার , সাধারন সময়ে লোকেরা একে রক্তের ক্যান্সার বলে থাকেন , এ রোগের মৃত্যুহার উঁচু । সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শিশুদের লিওকেমিয়া রোগের অনুপাত মোট লিওকেমিয়া রোগীর অর্ধেকেরও বেশী এবং এই অনুপাত বেড়ে যাওয়ার প্রবনতা দেখা দিয়েছে । শিশুদের লিওকেমিয়ার কারণগুলো নিম্নরূপ: এক, রশ্মিবিকিরনের কারণ, যেমন মা গর্ভবতী হওয়াকালে বহুবার এক্স-রে গ্রহন করেছিলেন , বাবা দশাধিকবার এক্স-রের চিকিত্সা গ্রহন করেছিলেন , অথবা শিশু জন্ম হওয়ার পর কমপক্ষে তিনবার এক্স-রের চিকিত্সা গ্রহন করেছিল । এই কয়েক কারণে শিশুদের লিওকেমিয়া রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বয়স্ক লোকের চেয়ে বেশী হতে পারে । দুই, রাসায়নিক কারণ। পেশাগত কারণে মা যদি বেনজিন, ফরমালডিহাইড প্রভৃতি রাসায়নিক বস্তু স্পর্শ করেন , গর্ভবতী হওয়াকালে মা সিগারেট খান, ঘরে আর ঘরের বাইরে শিশু কীটনাশক বস্তু আর ঘাসনাশক পদার্থ স্পর্শ করে । তিন , জন্মগত কারণ । যাদের ক্রোমোসোম অস্বাভাবিক, তাদের লিওকেমিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার সাধারণ মানুষের চেয়ে বেশী। তাই শিশুদের লিওকেমিয়া রোগ প্রতিরোধ করার জন্যে গর্ভধারণকালে মায়েদের অথবা জন্মগ্রহণের পর শিশুদের এক্স-রের স্পর্শ কমিয়ে দেয়ার প্রচেষ্টা করতে হবে , বেনজিন, ফরমালডিহাইড প্রভৃতি বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে আসার কারণ কমাতে হবে । ঘর সাজানো শিশুদের লিওকেমিয়া রোগের হার বেড়ে যাওয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ কারণ । যদিও এটা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমানিত হয়নি , তবে এটা স্বীকার করতে হয় যে , শিশুদের লিওকেমিয়া রোগ বেড়ে যাওয়া পরিবেশ দুষিত হওয়ার সংগে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। তাই অভিভাবক হিসেবে বাবামায়েদের উচিত দুষিত পরিবেশ থেকে শিশুদেরকে রক্ষা করা এবং শিশুদেরকে এক স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের অবকাশ দেয়া ।অন্যান্য রোগের মতোই শিশুদের লিওকেমিয়া রোগেরও প্রথম দিকে কিছুকিছু লক্ষন আছে , কিন্তু এর কোনো বিশেষ অভিব্যক্তি নেই, বরং সাধারণ সময় যে জ্বর ও সর্দি হয় তার মতোই সহজে অভিভাবকের দৃষ্টি আকষন করতে পারে না । শিশুদের লিওকেমিয়া রোগের প্রথম দিকে কি কি লক্ষন দেখা যেতে পারে ? এ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন , জ্বর ছাড়াও রোগীদের মুখ ফ্যাকাশে ,শরীর দুর্বল, ত্বক, মাড়ী আর নাকের রক্ত, হাড় আর গিঁটের ব্যাথা প্রভৃতি লক্ষন দেখা দেয় । অধিকাংশ রোগীদের রক্তের মধ্যে শ্বেতকনিকা অনেক বেশী ।যদিও শ্বেতকনিকার পরিমান অতি বেশী, কিন্তু এই সব শ্বেত কনিকা অপরিপক্ক সেল বলে তাদের কোনো প্রতিরোধ শক্তি নেই ।তাই শ্বেতকনিকার মাত্রাধিক্যের ফলে সৃষ্ট লিওকেমিয়া রোগী খুব সহজে সংক্রমিত হন। যেমন মুখ,গলা, কান, নাক , পায়ু , ত্বক প্রভৃতি সংক্রমিত জায়গায় ক্ষত হওয়ার লক্ষন দেখা দেয় । লিওকেমিয়া রোগীদের হাড়ের মজ্জা বিপুল অপরিক্ক শ্বেতকনিকা তৈরি করে ,কিন্তু বৃহত পরমানু সেল সৃষ্টিকারী প্লেইটলেট অর্থাত অনুচক্রিকার পরিমান স্পষ্টভাবে কমে যাওয়ার ফলে রোগীদের ত্বকে , শরীরের বিভিন্ন অন্ত্রে রক্ত-ক্ষরণ হয়,এমন কি মস্তিস্কে রক্ত-ক্ষরণের সম্ভাবনা দেখা দেয়। লিওকেমিয়া রোগের সেল শরিরের অন্য অন্ত্রে প্রবেশ করলে হাড়ের ব্যাথা হয়, কানের পর্দায় টিউমার হয়,ত্বকে দাগ হয়,মাড়ী, যকৃত ও স্প্লীনের লিম্ফ-নৌড মোটা হয় ইত্যাদি ইত্যাদি। তাই বাচ্চাদের জ্বর ও দুর্বলতা সৃষ্টি হয় , তাদের মাড়ী ও ত্বকে রক্ত-ক্ষরণের লক্ষন পাওয়া গেলে তাড়াতাড়ি বাচ্চাকে হাসপাতালে নিয়ে রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে ।
|
|
|