** চীনা চিকিত্সা পদ্ধতি
প্রশ্নকর্তাঃ বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গা জেলার উথলী বাজারের প্রগতিঃ ওয়ার্ল্ড রেডিও লিসনার্স ক্লাবের পরিচালক জোয়াদ কামাল
উঃ চীনা চিকিত্সাবিদ্যা মূলতঃ আকুপাংচার, ভেষজ ওষুধপত্র, ছিকোং (এক ধরণের চীনা শরীর চর্চা) এবং পথ্যের সমন্বয়ে তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিকভাবে বিকশিত হয়েছে শতাব্দি শতাব্দি ধরে।
চীনা চিকিত্সাবিদ্যা সাধারণভাবে বলতে গেলে চীনের বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠী যেমন হান, তিব্বতী, মঙ্গোলীয় আর উইগুরদের সার্বিক চিকিত্সা ব্যবস্থা বোঝায়। এগুলোর মধ্যে হান জাতির চিকিত্সা ব্যবস্থা সমগ্র চীনে এবং বিশ্বের বহুস্থানে প্রভূত প্রভাব বিস্তার করেছে। হান জাতিকে চিকিত্সা ব্যবস্থা উন্নয়নকারী প্রাচীনতম সংস্কৃতি বলা হয়।
চীনা ওষুধের আবিষ্কার ও প্রয়োগের ইতিহাস হাজার বছরের। চীনা ভেষজ ওষুধের লক্ষ্য হচ্ছে রোগ প্রতিরোধ, নির্ণয় ও চিকিত্সা করা। এটি প্রধানতঃ চীনা প্রাকৃতিক ওষুধপত্র এবং উত্পন্ন ওষুধ নিয়ে গঠিত , যেমন ভেষজ, প্রাণীজ, খনিজ, কিছু রাসায়নিক এবং জৈব পদার্থ দিয়ে তৈরি ওষুধ।
চীনা চিকিত্সাবিদ্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ আকুপাংচার। আকুপাংচারের সুদীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। সুই আর থাং রাজামলে আকুপাংচার একটি বিশেষায়িত বিষয়ে পরিণত হয়। চিকিত্সা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তা একটি প্রধান পাঠ্য বিষয়ে পরিণত হয়। ষোড়শ শতাব্দিতে আকুপাংচার ইউরোপে প্রবেশ করে।
বর্তমান চীনে প্রায় দুই হাজারাধিক চীনা চিকিত্সাবিদ্যার হাসপাতালের প্রত্যেকটিতেই আকুপাংচার বিভাগ খোলা হয়েছে। তা শরীরের নানা তন্ত্রে ব্যবহার করা যায়। আকুপাংচার গবেষণায় অনেক মূল্যবান তথ্য পাওয়া গেছে, বিশেষ করে তার নিয়মিত কর্মকান্ডে, ব্যথার উপশমে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নয়নে এবং মানুষের শরীরের নল-নালীতে , আকু পয়েন্টে আর অভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ।
অঙ্গ-সংবাহন বা ইংরেজীতে massage হচ্ছে শরীরের বিভিন্ন সিস্টেমে মর্দন বা মালিশ করা, যাতে রোগ প্রতিরোধ করা যায় আর সুস্থ থাকা যায়।
** চীনের প্রধান তিনটি নদীর নাম কি? এদের দৈর্ঘ্য কত?
প্রশ্নকর্তাঃ বাংলাদেশের জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ীর কান্দারপাড়ার ব্রাইট লাইফ ওয়ার্ল্ড রেডিও ফ্যান ক্লাবের সভাপতি মোঃ সুরুজ্জামান তরফদার
উঃ চীন একটি নদী বহুল দেশ । চীনের যেসব নদীর ড্রেনেজ-আয়তন ১০০০ বর্গকিলোমিটারের বেশী তার সংখ্যা ১৫০০টিরও বেশি । ছাংচিয়াং নদী চীনের দীর্ঘতম নদী , এর মোট দৈর্ঘ্য ৬৩০০ কিলোমিটার । আফ্রিকার নীল নদী আর দক্ষিণ আমেরিকার আমাজান নদীর পর ছাংচিয়াং নদী বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম নদী । এর মধ্য আর নিম্ন অববাহিকার আবহাওয়া উষ্ণ ও আদ্র , সেখানে প্রচুর বৃষ্টি হয় , মাটি উর্বর বলে অঞ্চলটি চীনের একটি কৃষি- শিল্প সমৃদ্ধ অঞ্চল।
হোয়াংহো নদী চীনের দ্বিতীয় বৃহত্ নদী , এর মোট দৈর্ঘ্য হলো ৫৪৬৪ কিলোমিটার । হোয়াংহো নদীর অববাহিকার পশুচারণ ভূমি বেশ উর্বর। খনিজপদার্থ সমৃদ্ধ, ইতিহাসে অববাহিকাটি চীনের প্রাচীনতম সভ্যতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উত্স ।
হেইলুংচিয়াং নদী উত্তর চীনের বড় নদী , এর মোট দৈর্ঘ্য ৪৩৫০ কিলোমিটার , এর মধ্যে ৩১০১ কিলোমিটার চীনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ।
দক্ষিণ সিনচিয়াংয়ের থালিমো নদী হলো চীনের দীর্ঘতম অভ্যন্তরীণ নদী , এর মোট দৈর্ঘ্য ২১৭৯ কিলোমিটার ।
প্রাকৃতিক নদী ছাড়া চীনে মানুষের তৈরি একটি বিখ্যাত নদীও রয়েছে। সেটি দক্ষিণ থেকে উত্তর চীনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত মহাখাল। পঞ্চম শতাব্দীতে মহাখালটির খনন কাজ শুরু হয় ।উত্তর দিকের পেইচাং থেকে দক্ষিণ দিকের পূর্ব চীনের চেচিয়াং প্রদেশের হাংচৌ পর্যন্ত স্থায়ী মহাখালটি হাইহো নদী , হুয়াংহো নদী, হুয়াইহো নদী, ছাংচিয়াং নদী আর ছিয়েনথাংচিয়াং নদী এই পাঁচটি বড় নদীকে সংযুক্ত করেছে । এর মোট দৈর্ঘ্য ১৮০১ কিলোমিটার , মহাখালটি বিশ্বে মানুষের খনন করা এক দীর্ঘতম মহাখাল এবং এর খনন কাজ সবচেয়ে আগে শুরু হয়।
|