v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-07-05 13:57:22    
সুইডেনের কৃষক সমবায় সংস্থা-চাষীদের সমবায় সংস্থা

cri
    সুইডেনে গাড়ি চালিয়ে রাজধানী থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে গেলে গ্রামাঞ্চলের দৃশ্য চোখে পড়বে। একটি চার্চ, কয়েকটি লাল রংয়ের কাঠের ঘর চার পাশে ছড়িয়ে আছে। আর বিশাল মাঠে এখানে সেখানে কয়েকটি ট্র্যাক্টর পড়ে আছে। এখন কৃষকদের স্বেচ্ছায় গঠিত সমবায় সংস্থা সুইডেন কৃষকদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ইচ্ছা প্রকাশের বক্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

    সুইডেনের বৃহত্তম সমবায় সংস্থা হলো সুইডিশ কৃষক পণ্য বিক্রির সমবায় সংস্থা। সুইডিশরা তাকে চাষী সমবায় সংস্থা বলে ডাকেন। এই সংস্থার প্রতীক হলো গমের একটি অঙ্কুরিত বীজ। সুইডেনের গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় এই প্রতীক দেখতে পাওয়া যায়।

    সুইডেনে মোট ৫০ হাজারেরও বেশী কৃষক এই সমবায় সংস্থায় যোগ দিয়েছেন। এই সংস্থা প্রধাণত কৃষকদের বাজারের তথ্য, প্রযুক্তি ও গুণগত মানের তত্ত্বাবধান ইত্যাদি পরিসেবা যগিয়ে দেয় এবং কৃষি পণ্য বিক্রির নেটওয়ার্ক স্থাপন করে। প্রতি বছরে এই সংস্থার আয় প্রায় ৩.১ বিলিয়ন ইউরো। এটা ইউরোপে বৃহত্তম কৃষক সমবায় সংস্থা।

    গত শরত্কালে চাষী সমবায় সংস্থার একটি শস্যের গোলায় আমাদের সংবাদদাতা দেখেছেন, কৃষকরা শস্য-ভরা ট্রাক চালিয়ে শস্যের গোলার দাঁড়িপাল্লায় প্রবেশ করছেন। শস্যের গোলার কর্মীরা শস্যের ওজন মাপ করে এবং শস্যের মান পরীক্ষা করেন। জানা গেছে, শস্যের গোলার সঙ্গে স্থাপিত রয়েছে ময়দা ও আটা এবং পাউরুটি প্রকিয়াকরণের কারখানা । এমন ধারাবাহিক পরিসেবার ব্যবস্থা থাকলে কৃষকদের শস্য শীগ্গীরই ক্রেতাদের হাতে পৌঁছতে পারবে। শস্যের গোলা থেকে একটি পাইপ লাইন সরাসরি শস্যগুলো ময়দা ও আটা প্রক্রিয়াকরণ কারখানায় পাঠাতে পারে। তাতে পরিবহনের সময় সাশ্রয় করা যায় এবং শস্যের মানও সুনিশ্চিত করা যায়।

    ক্রেতাদের জন্য উচ্চ মানের কৃষি পণ্য যুগিয়ে দেয়া হলো চাষী সমবায় সংস্থার লক্ষ্য। সুইডেনে পরিবেশ সুরক্ষার ধারণা মানুষের ধারণায় এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে গড়ে উঠেছে। তাই পণ্য স্বাস্থ্যবান কিনা এবং উত্পাদন ও পরিবহনের প্রক্রিয়া পরিবেশের ক্ষতি করবে কিনা, তা ক্রেতাদের পক্ষে বিবেচন্য বিষয়। চাষী সমবায় সংস্থার কিছু পণ্য ক্রেতাদের আস্থা পেয়েছে এবং সেই অঙ্কুরিত বীজ মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

    ১৯ শতাব্দীর শেষ দিকে চাষী সমবায় সংস্থা চালু হয়। তা কৃষি সমাজ থেকে শিল্প সমাজে রূপান্তরিত হওয়ার সময়ে গড়ে উঠেছে। যান্ত্রিকীকরণের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে ছোট আকারের খামারের পণ্য বাজারে বড় আকারের খামারের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছিল না। তাদের স্বার্থ সুনিশ্চিত করার জন্য এই সমবায় সংস্থা গঠিত হয়। প্রথম দিকে তা হলো একটি এলাকার ছোট আকারের খামারের যৌথ সহযোগিতা সংস্থা। আস্তে আস্তে বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে সহযোগিতা চালিয়ে তা একটি দেশব্যাপী সংস্থায় পরিণত হয়। আজ চাষী সমবায় সংস্থা যেমন সারা সুইডেনের কৃষকদের বৃহত্তম আর্থিক সহযোগিতা সংস্থায় পরিণত হয়েছে তেমনি ক্রমাগত কৃষকদের রাজনৈতিক স্বার্থ সংরক্ষণের জন্যও প্রচেষ্টা শুরু করেছে।

    সমবায় সংস্থার ব্যবস্থাপনার ভিত্তি হলো গণতন্ত্র ও ন্যায্যাতা। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে প্রত্যেক সদস্য ভোটদানের গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নিজের মত প্রকাশ করেন এবং পরিষদের মাধ্যমে চাষীদের ব্যাপার পরিচালনা করেন। অংশগ্রহণকারী কৃষকরা নিজের নিজের অর্থনৈতিক অবস্থা অনুযায়ী সমবায় সংস্থাকে ফি দিতে থাকে। এসব ফি সংস্থার ব্যবস্থাপনার অর্থ। আজকের চাষীদের সমবায় সংস্থা নিজের অনেক কম্পানির অধিকারী হয়েছে। তারা ভালোভাবে কৃষকদের জন্য পণ্য বিক্রি করছে এবং তাদের পরিসেবা করছেন। প্রতি বছরের শেষ দিকে তারা তাদের মুনাফা ফি দেয়া কৃষকদের কাছে ফেরত করবে।