v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-06-29 20:56:53    
পরাতুন ছেনওয়াংমিও

cri
    সাংহাই শহরের কেন্দ্রীয় স্থলে একটি বিশেষ জায়গা আছে। এই জায়গার নাম ' পরাতুন ছেনওয়াংমিও '। এই জায়গা এখন সাংহাই শহরের একটি প্রতীকে পরিণত হয়েছে। সেখানে যেমন শান্ত উদ্যান আছে তেমনি আছে ব্যস্ততমরেস্তোঁরা , এ ছাড়াও রয়েছে শতাধিক বছরের পুরাতন দোকানপাট।

    ' ছেনওয়াংমিও বলতে অতীতে চীনের তাওধর্মের শহরের রক্ষক দেবতাকে পুজা-করা মন্দিরকে বুঝায়। কিন্তু আমরা এখন যে ' পুরাতন ছেনওয়াংমিওয়ের ' কথা বলি তার নিহিত অর্থ অন্য রকমের। এখানে সত্যিই একটি মন্দির আছে। এই মন্দির ১৫ শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিগত শত শত বছর ধরে এই মন্দির এবং আশেপাশে এলাকা সবর্দাই বাণিজ্য এলাকা ছিল। বতর্মানে সাংহাইএর ছেনওয়াংমিও-এর কথা উল্লেখ করলে লোকেরা আর মন্দির বলে মনে করেন না বরং এই মন্দিরের আশেপাশে পুরাতন বাণিজ্য এলাকা মনে করেন। সাংহাইবাসীরা আন্তরিকভাবে এই এলাকাকে ' পুরাতন ছেনওয়াংমিও' ডাকেন।

    ' পুরাতন ছেনওয়াংমিওতে' সবচেয়ে বৈশিষ্টসম্পন্ন জিনিস হল সাংহাইএর বিভিন্ন ধরনের খাবার। এখানের একটি সড়ক কয়েক

ডজর্ন মিটার দীর্ঘ। অনেক খাবারের দোকান এবং রেস্তোরাঁ এই সড়কে রয়েছে। সাংহাইএর সব বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন খাবার এখানে পাওয়া যায়। এই সড়ককে     ' খাবারের রাজ্য' বলে গণ্য করা হয়। ' নানশিয়ান ম্যানটো' এ সব খাবারের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত। ব্রিটেনের দ্বিতীয় এলিজাবেথ সাংহাই সফর করার সময় এই দোকান পরিদর্শন করেছিলেন। এই দোকান সহজেই লোকের চোখে পড়ে। কারণ প্রত্যেক দিন এই দোকানের সামনে কেবল মানুষের ভিড়। এই খাবার কেনার জন্যে লোকেদের সব সময় লাইন বেঁধে দাঁড়াতে হবে।

    এই দোকানে যে ' শিয়াওলন ম্যানটো' বিক্রি করা হয় তা আসলে একটি ধরনের বাওজি। কিন্তু সাংহাইবাসিরা বাওজি না বলে ম্যানটো বলে। ' নানশিয়ান ম্যানটো' দোকানে ' শিয়াওলন ম্যানটো' খেতে যাওয়া লোকের সংখ্যা খুব বেশী। অল্প সময়ের মধ্যে সীট পাওয়া যায় না। মিস্টার স্টেভে ওমারা একজন ক্যানাডিয়ান। তিনি এই দোকানের পুরাতন খদ্দের। তিনি বলেছেন, এই বাওজি কেনার জন্যে একবার তিনি এক ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি বলেছেন

    এই খাবার সাংহাইএ অত্যন্ত বিখ্যাত বলে আমি এতক্ষণ ধরে এর জন্যে অপেক্ষা করেছিলাম। খুব ভাল খাবার। সুতরাং এর জন্য অপেক্ষা করার মূল্য আছে। আমি এখানে বেশ কয়েক বার এসেছি। আমার মনে হয় এই বাওজি খেতে খুব সুস্বাদু।

    নানশিয়ান শাওলন বাওজির ইতিহাস এক শতাধিক বছরের। এটা দেখতে প্যাগোটারমতো। এটা দেখে মানুষের খাবার রুচি আপনা-আপনি বেড়ে যায়।

    নানশিয়ান ম্যানটো দোকানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ম্যানটো হল ' শিয়াফেন শাওলন ম্যানটো'। শিয়াফেন মানে কাঁকড়ার মাংস। কাঁকড়ার মাংস মায়দার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার পর এই খাবার খেতে খুবই সুস্বাদু।

    বতর্মানে সাংহাইএর অনেক বৈশিষ্টসম্পন্ন খাবার কেবল ' পুরাতন ছেনওয়াংমিওতে ' পাওয়া যায়। অনেক সাংহাইবাসীর ওখানকার বিভিন্ন ধরনের ঐতিহ্যিক খাবার উপভোগ করা তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য নয়। অতীতের কথা স্মরণ করা তাদের পুরাতন ছেনওয়াংমিওতে যাওয়ার আরেকটি উদ্দেশ্য। যু্বক লিনমিয়েন যিনি সাংহাইএ জন্ম গ্রহণ করেন এবং বড় হয়েছেন। তিনি বলেছেন,

    এখানে সাংহাইএর ঐতিহ্যিক খাবার খেতে এসে মনে হয় আমি অতীতে ফিরে গেলাম। কারণ এখানে আমি যে পরিবেশ অনুভব করতে পারি তা বড় বড় শহরে পাওয়া যায় না। এখানে যে সব ঐতিহ্যিক খাবার পাওয়া যায় সে সব সাংহাই শহরের অন্যান্য জায়গায় দেখতে পাওয়া যায় না। সুতরাং এ কথাও বলা যায় যে, এখানকার ঐতিহ্যিক খাবার সাংহাইএর একটি প্রতীক বলে গণ্য করা যায়।

    এ সব ঐতিহ্যিক খাবার আস্বাদন করার পর আপনি নিকটবর্তী একটি পুরাতন সড়কে বেড়াতে যান। সেখানে অজস্র দোকাপাট আছে। এই সড়কের প্রস্থ মাত্র তিন মিটার। সড়কের দু'পাশের দোকাপাট দু'তলা বিশিষ্ট। স্থাপত্যগুলোর রং লাল।" কাঠের তৈরী চিরুনি". " পাখা". "চা" ইত্যাদি নানা ধরনের সাইনবোর্ড দোকানগুলোর দরজারের উপর ঝুলানোআছে: এই রাস্তায় হেঁটে হেঁটে সামনের দিকে তাকালে বিভিন্ন ধরনের সাইনবোর্ড নজরে পড়ে। এ সব দোকানের জানালাগুলো পুরাতন শৈলীর।

    " পুরাতন ছেনওয়াংমিও ' একটি জনবহুল জায়গা। তবে এ কথা শুনলে হয়তো আপনি অবাক হয়ে যাবেন। এই জনবহুল জায়গার ভিতরে একটি শান্ত আর মার্জিত উদ্যান লুকিয়ে আছে। এই উদ্যান ' শহরের পাহাড় আর বন' বলে আখ্যায়িত হয়। এই উদ্যানের ইতিহাস চার শতাধিক বছরের। জানা গেছে, চীনের ছিং রাজবংশের একজন কমর্কর্তা তাঁর বাবার জন্যে এই উদ্যান তৈরী করেন।

    ইইয়ানের আয়তন দু একর। ভিতরে নানা ধরনের স্থাপত্য আছে। উদ্যানের ভিতরে যে জিনিস সবচেয়ে বিখ্যাত তা হল কৃত্রিম পাহাড়। এই কৃত্রিম পাহাড়ের উচ্চতা প্রায় ১৪ মিটার। এটা হল দক্ষিণ চীনের বিদ্যমান সবচেয়ে পুরাতন , সবচেয়ে সুক্ষ্ম এবং সবচেয়ে বিরাট আকারের কৃত্রিম পাহাড়। মিস্টার জু এই উদ্যানের একজন ঝাড়ুদার। তিনি অনেক বছর ধরে এখানে কাজ করেছেন। তিনি কাজ করার ফাঁকে ফাঁকে এই উদ্যানের ইতিহাস বণর্না করলেন। তিনি বলেছেন, এই উদ্যান সাংহাইএর একটি দশর্নীয়স্থান । প্রত্যেক দিন অনেক দেশী-বিদেশী পযর্টক এখানে দেখতে আসেন।

    ইইয়ানে হাঁটাহাঁটি করার সময় যদি আপনি বিশ্রাম নিতে চান তাহলে আপনি সহজেই আরামদায়ক বসার জায়গা পেতে পারেন। বড় বড় গাছের নীচে বসে চারপাশের দৃশ্য উপভোগ করা তো আনন্দের ব্যাপার।