v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-06-22 16:07:53    
গ্রীষ্মকালীণ নগর-----সিনিন

cri
    চীনের ছিনহাই-তিব্বত মালভূমি এমন একটি মালভূমি যা সমুদ্র-সমতলের তুলনায় সবচেয়ে উচু।অনেক ভূগৌলতত্ত্ববাদ আর ঝুঁকি অনুসন্ধানকারী এই মালভূমিকে দক্ষিণ মেরু আর উত্তর মেরুর মঙ্গে তুলনা করেন। ছিনহাই-তিব্বত মালভূমি পৃথিবীর 'তৃতীয় মেরু' বলে গণ্য করা হয়।

    সিনিন পেইচিং অলিম্পিক গেমস ২০০৮—এর মঙ্গল প্রাণী ইনইনের জম্মস্থান। জানা গেছে সিনিনও নেজারল্যান্ডের ফুলের জন্মস্থান। অনেকের মনে হয়তো প্রশ্ন উঠবে যে ছিনহাই-তিব্বত মালভূমিতে অকসিজিনের অভাব। ফুল চাষ করা তো অন্যন্ত কঠিন কাজ। তবে আসল অবস্থা কি রকম? সিনিন শহরের মেয়র মিস্টার লো ইউয়ে লিন ব্যাখ্যা করে বলেছেন, সিনিনের স্ববৈশিস্ট্যসম্পন্ন ভূগোলিক শর্ত আর আবহাওয়া এই ফুল চাষ করার জন্য কল্যাণকর। তিনি বলেছেন,

    কারণ এখানকার মালভূমির আবহাওয়া চীনের অন্যান্য জায়গার তুলনায় ভিন্ন। তাপমাত্রের তফাত বিরাট। তা ছাড়া সুর্যের আলোর তেজও খুব তীব্র। সুতরাং নানা ধরনের ফুল বিশেষ করে ফুল ভালভাবে ফুটানো হয়।

    বতর্মানে এই ফুল সিনিন শহরের একটি আকর্ষনীয় দৃশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০০২ সাল থেকে প্রত্যেক বছরের মে মাসে সিনিন শহরে ফুল উত্সব আয়োজিত হয়। ফুল উত্সব চলাকালে সিনিন শহরের প্রধান চত্বরে এবং প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে ফুল সাজানো হয়। যদি পযর্টকরা মে মাসে সিনিন পরিদর্শন করেন তাহলে তারা সিনিন শহরে ৪০ লক্ষ নানা ধরনের ফুল দেখতে পারেন।

    যদি আপনি মে সামে সিনিন যেতে পারেন না, তাহলে গ্রীষ্মকালে এই শহরে যাবেন। প্রত্যেক বছরের জুলাই আর অগ্যাস্ট মাসে যখন চীনের অনেক শহরে কাঠ ফাটানো গরম, তখন সিনিন শহরের আবহাওয়া মনোরম। সিনিনের সবচেয়ে গরম দিনের তাপমাত্রা ২০ সেন্টি গ্রিডের নিচে। চীনের রাষ্ট্রীয় ব্যুর্রোর উপ মহা পরিচালক মিস্টার ওয়াং বলেছেন,

    কাঠ ফাটানো গরম দিনে অনেক দেশী-বিদেশী পযর্টক সিনিন শহরে আসেন। তারা সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করার সঙ্গে সঙ্গে মনোরম আবহাওয়া উপভোগ করেন। এখানে আসার পর তারা আন্দের সঙ্গে বললেন, গ্রীষ্মকালে ছোটা কাটার আদর্শ জায়গা সিনিনের মতো চীন তথা বিশ্বের অন্য জায়গায় আর নেই।

    সিনিন আসলে আরেকটি জায়গা পরিদর্শন করতেই হবে। এটা হল তায় মন্দির। এই মন্দির সিনিন শহরের উপকন্ঠে অবস্থিত। এই মন্দির ইতিহাস ৪ শতাধিক।

    তায় মন্দির সিনিন শহরের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এটা হল চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বুদ্ধ ধর্মের কেন্দ্র। মন্দির আয়তন ৪ লক্ষ বগর্মিটার। মন্দির ভিতরে এক হাজারাধিক উদ্যান আছে। এ সব উদ্যান নিয়ে সম্পূর্ণ হ্যান-তিব্বত শিল্পকলা নীতিরীতিসম্পন্ন স্থাপত্যের সংগ্রহশালা গঠিত হয়। মন্দির ভিতরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় সিনিস হল: ' দেয়াল চিত্র, সূচীকর্ম এবং বাটার ফুল'।

    দেয়াল চিত্র বলতে গেলে হয়তো সকলের মনে পড়বে তুনহুয়াং মোকাও গুহার বিশ্ব বিখ্যাত দেয়ার চিত্রের কথা । কারণ হাজারাধিক বছর পর এ সব দেয়াল চিত্রের রং একদম স্পস্ট। চিত্রের মানুষ দেখতে প্রাণরসে পরিপূর্ণ। তবে তায় মন্দিরের দেয়াল চিত্রগুলোর রং আর চিত্র আঁকার কৌশল তুনহুয়াং মোকাও গুহার চিত্রগুলোর সঙ্গে তুলনা করতে পারে। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হবে যে, তায় মন্দিরে যে সব সূচীকর্ম দেখানো হয়েছে সে সব সূচীকর্ম সন্যাসিদের হতের তৈরী। বতর্মানে তায় মন্দিরে অনেক সূচীকর্ম সংরক্ষিত আছে। সব সূচীকর্ম দেখতে অবিকল। এ সব সূচীকর্ম অমূল্য জিনিস বলে মনে করা হয়।

    বাটার ফুল তায় মন্দিরের একটি দেখার মতো জিনিস। প্রত্যেক বছরের শীতকালে এই মন্দিরের সন্যাসিরা বাটার আর ময়দা মিশিয়ে দিয়ে নানা ধরনের জিনিস বানান। বাটার আর ময়দা দিয়ে নানা ধরনের ফুল আর পাখি বানানো যায়। তা ছাড়া প্রাণরসে পরিপূর্ণ মানুষও বানানো যায়। প্রত্যেক বছরের চীনা চন্দ্রের ১৫ তারিখে তায় মন্দিরে বিরাটাকারের বাটার ফুল প্রদর্শনী আয়োজনা করা হয়। তখন দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা বুদ্ধ ধর্মাবলম্বিরা তায় মন্দিরে হাজিত হন। বসন্ত ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে এ সব বাটার ফুল গরিয়ে যায়।

    তায় মন্দির বিশ্বের বিখ্যাত বুদ্ধ ধর্মের পবিত্র জায়গা। অনেক ধর্মাবলম্বী অনেক দুর থেকে এসেছেন। তারা আলাকে প্রণাম করে নিজেদের সুন্দর আশা-আকাংক্ষা প্রকাশ করেন। পেইচিং থেকে আসা পযর্টক মিস মালিন বলেছেন, যারা তায় মন্দিরে আসেন যারা আপনাআপনি প্রণাম করেন।

    আমি ভিন্ন সংস্কৃতি অনুভব করতে পছন্দ করি। এখানে আমি বুদ্ধ-ধর্মের সংস্কৃতির আসল মর্ম অনুভব করেছি। তা ছাড়া, আমি ভিন্ন জায়গার বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন রীতিনীতি অনুসন্ধান করতে পছন্দ করি। আমি অন্য জায়গায় এই আত্মিক তুনিয়া অনুভব করতে পারি না।