এশীয় পারস্পরিক সমন্বয় ও আস্থা সম্মেলন হচ্ছে একটি নিরাপত্তা সমস্যা সংক্রান্ত বহুপাক্ষিক ফোরাম । তার লক্ষ্য হচ্ছে কিছু এশিয় দেশের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করা এবং আস্থা বাড়ানোর পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা ।
১৯৯২ সালের অক্টোবর মাসে কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট নুরসুলতান নাজারবায়েভ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে এশিয় পারস্পরিক সমন্বয় ও আস্থা সম্মেলন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব করেন । ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এশিয় পারস্পরিক সমন্বয় ও আস্থা সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন কাজাখস্তানের রাজধানী আলমা আতায় অনুষ্ঠিত হয় । চীন , রাশিয়া , তুরস্ক প্রভৃতি ১৬টি সদস্য দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা উপপররাষ্ট্রমন্ত্রীরা , কিছু দেশের পর্যবেক্ষকরা এবং জাতিসংঘ , ইউরোপীয় নিরাপত্তা ও সহযোগিতা সংস্থা প্রভৃতি আন্তর্জাতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা এই অধিবেশনে অংশ নেন । অধিবেশনে " এশিয় পারস্পরিক সমন্বয় ও আস্থা সম্মেলনের সদস্যদেশগুলোর পারস্পরিক সম্পর্ক সংক্রান্ত নীতি ঘোষণা" গৃহীত হয় । ঘোষণার প্রধান প্রধান বিষয়ের মধ্যে রয়েছে : সর্বজনবিনিত আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মৌলিক নীতি অক্ষুণ্ণ রাখা । এসব নীতি হলো : পরস্পরের সার্বভৌমত্ব ও ভূভাগীয় অখন্ডতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা , পরস্পরের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করা , বিরোধের শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করা , বলপ্রয়োগ না করা ও বলপ্রয়োগের হুমকী প্রদর্শন না করা , অর্থনৈতিক , সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা বাড়ানো ।
২০০২ সালের জুন মাসে এশিয় পারস্পরিক সমন্বয় ও আস্থা সম্মেলনের সদস্য দেশগুলোর প্রথম শীর্ষ সম্মেলন কাজাখস্তানের রাজধানী আলমা আতায় অনুষ্ঠিত হয় । সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের নেতারা এশিয়ার শান্তি , নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রণীত " আলমা আতা দলিলপত্র" ও " সন্ত্রাসবাদ নির্মূলীকরণ ও সভ্যতার মধ্যবকার সংলাপ ত্বরান্বিত করা সংক্রান্ত ঘোষণা" প্রকাশ করেন ।
বর্তমানে এশিয় পারস্পরিক সমন্বয় ও আস্থা সম্মেলনের ১৭টি সদস্য দেশ ও ৯টি পর্যবেক্ষক দেশ রয়েছে । জাতিসংঘ , ইউরোপীয় নিরাপত্তা কমিটি , আরব লীগ প্রভৃতি আন্তর্জাতিক সংগঠন পর্যবেক্ষকের মর্যাদা ভোগ করে ।
|