v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-06-14 15:44:58    
চীনের তাই জাতি ও চিংপো জাতির সংগীত

cri
    অনুষ্ঠানে আপনারা দক্ষিণপশ্চিম চীনের তাই জাতি ও চিংপো জাতির বাদ্যযন্ত্র দিয়ে বাজানো সঙ্গীত উপভোগ করবেন ।

    " বাঁশ বনের গভীরে" তাই জাতির বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সঙ্গীত। এর সুর আন্তরিক ও নমনীয় । সুরে তাই জাতির শান্তিমর ও সুখী জীবনের ছবি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে । এই সঙ্গীত শুনলে লোকেরা যেন চাঁদের আলোয় বাঁশের দালান, কলার বন, ঝর ঝর করে বয়ে যাওয়া ছোট নদী এবং প্রেমে পড়া তরুণ-তরুণীদের দেখতে পারেন ।

    তাই জাতি দক্ষিণপশ্চিম চীনের ইয়ুননান প্রদেশে বসবাস করে । তাই জাতির লোকেরা নাচ গান পছন্দ করেন । দীর্ঘকালের ঐতিহাসিক বিকাশে তারা বিপুল সংখ্যক জাতীয় বাদ্যযন্ত্র, লোক সংগীত , নাচ ও কথা সঙ্গীত সৃষ্টি করেন ।

    তাই জাতির অনেক নিজস্য বাদ্যযন্ত্র আছে । এতক্ষণ আপনারা যে সংগীত শুনতে পেয়েছেন, তা তাই জাতির হুলুসি দিয়ে বাজানো হয় । হুলুসির আরেকটি নাম হুলু বাঁশি, লাউ আর বাঁশি দিয়ে তৈরী হয়, এর আওয়াজ নমনীয় ও সুন্দর । তাই জাতির লোকেরা মনে করেন, হুলুসি একটি কথা বলার বাদ্যযন্ত্র। যুবকেরা প্রায় তা দিয়ে মেয়েদের প্রতি তাদের প্রেম প্রকাশ করেন ।

    হাতিপা ঢাক হচ্ছে তাই জাতির সবচেয়ে বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন বাদ্যযন্ত্র ।হাতিপা ঢাকের পেছনে একটি গল্প আছে ।প্রাচীনকালে তাই জাতির বসতি এলাকা ছিল     একটি সুন্দর হ্রদ । কিন্তু হ্রদের তীরে বিরাট বিরাট সাপ বাস করতো। তারা নানা জায়গায় গিয়ে মানুষ ও পশু খায় । পরে তাই জাতির একজন সৈনিক এক দল শিকারীকে সঙ্গে নিয়ে হ্রদের তীরে গিয়ে এসব সাপ হত্যা করেন এবং এগুলো চামড়া গাছ ও বাঁশের ওপর ঢেকে রেখে ঢাক তৈরী করেন । তারপর লোকেরা এই ঢাকের আকার হাতির পার মতো তৈরি করেন । তখন থেকে তাই জাতির মধ্যে হাতিপা ঢাক প্রচলিত হয় । এখন আমরা একসঙ্গে হাতিপা ঢাক ও দালসিমার দিয়ে সমাবেত বাজানো সঙ্গীত "বাজারে যাওয়ার দিন" শুনবো । এই সঙ্গীতে বাজারে যাওয়ার দিনে আন্তরিক ও প্রাণচঞ্চল দৃশ্য এবং জনগণের আনন্দদায়ক ও সরগরম দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হয় ।

    তিংছিন হচ্ছে তাই জাতির আরেকটি বাদ্যযন্ত্র। তাই জাতির তরুণরা তা খুব পছন্দ করেন । রাতে তাই জাতির যুবকেরা তাদের প্রেমিকাদের সঙ্গে মিলনের তারা সবসময় তিংছিন বাজিয়ে প্রেমিকাদের প্রতি তাদের ভালোবাসা প্রকাশ করেন অথবা মেয়েদের সুন্দর গানের জন্যে বাজান । এখন আপনারা তিংছিন একক সংগীত "রুইলির সূর" শুনবেন । সঙ্গীতে তাই জাতির জনগণের শান্তিপূর্ণ ও সুখী জীবনের প্রশংসা করা হয়।

    চীনের ইউয়ুন্নান প্রদেশের দক্ষিণাঞ্চলে বসবাসকারী চিংপো জাতিও একটি নাচ -গানে পারদর্শী জাতি । তাঁদেরও নানা ধরনে বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন বাদ্যযন্ত্র ও সংগীত আছে । "মুনাওজোংকো" হচ্ছে চিংপো জাতির বৃহত্তম বার্ষিক উত্সব ।প্রত্যেক বছরে চীনের চন্দ্রিকমাস ১৫ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত হয় । রূপকথা থেকে জানা গেছে, মুনাওজোংকো হল পাখিরা সূর্যদেবতার কাছ থেকে শেখা এক ধরনের প্রাণচঞ্চল নাচ গানের অনুষ্ঠান । চিংপো জাতির লোকেরা এই অনুষ্ঠান প্রকৃতির পাখিদের কাছ থেকে মানুষের মাঝে নিয়ে আসে। উত্সবের দিনে চিংপো জাতির লোকেরা সমবেত হয়ে টোটেম স্তম্ভ---মুনাও স্তম্ভের চারপাশে নাচ গান করে পূর্বপুরুষদের আর ইতিহাস স্মরণ করেন, প্রচুর ফসল ও বিজয় উদযাপন করেন এবং সুখী ভবিষ্যত প্রত্যাশাকরেন ।

    ওয়েনপাং হচ্ছে চিংপো জাতির লোক সংগীতের মধ্যে একটি স্বতন্ত্র সঙ্গীত । তা জাতীয় বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন এবং খুবই জনপ্রিয় । বাজানো বাদ্যযন্ত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে হাতিপা ঢাক,দালসিমার আর তোংপা ইত্যাদি । চিংপো জাতির লোকেরা মুনাওজোংকো, বিবাহ, অনুষ্ঠান, প্রচুল ফলনে আর নতুন বাড়ি তৈরীর সময়ে ওয়েনপাং সংগীত দলকে আমন্ত্রণ করা হয় ।ওয়েনপাং সংগীতের ধারাবাহিক সংগীতের নাম, নির্দিষ্ট সংগীত দল , বিশেষ বাজানো পদ্ধতি আর বিশেষ বাজানো প্রণাল রয়েছে । তাতে চিংপো জাতীয় সংগীতের অগ্রগতির প্রতিফলন হয়।

    থুলিয়াং হচ্ছে চিংপো জাতির ঐতিহ্যিক বাঁশি জাতীয় বাদ্যযন্ত্র। তা বাঁশ দিয়ে তৈরী হয় । থুলিয়াংয়ের মধ্যাংশে একটি গর্ত আছে । বাদ্যযন্ত্রীরা দুই হাতের চমত্কার সমন্বয়ের মাধ্যমে সুরের স্তর নিয়ন্ত্রণ করেন। থুলিয়াং'র আওয়াজ স্পষ্ট ও উচ্চ, তাতে পাহাড়ী আমেজ রয়েছে ।

     "সুখী চিংপো পাহাড়" চিংপো পাহাড়ী অঞ্চলের সবুজ বন, সবল গরু, সোনালী ফসল আর গ্রামের সুখী জীবন বর্ণনা করা হয়েছে ।