পথেই দেখলো বিরাট পাখা কাঁধে নিয়ে উখোং যাচ্ছে । ষাঁড়দানব পাচিয়ের রূপ নিয়ে সামনে এলো । বললো , গুরুদেব পাঠিয়েছেন তোমারই খোঁজে । আমার কাছে পাখাটা দিয়ে তুমি একটু জিরিয়ে নাও । তারপর একসঙ্গে যাবো । উখোং তার কথা বিশ্বাস করে পাখা দিয়ে দিলো পাচিয়ের হাতে ।
ষাঁড়দানব পাখাটা নিয়েই মন্ত্রপড়ে সেটাকে ছোটো করলো । নিজের ভুল বুঝতে পারলো উখোং । কিন্তু পাখা তো হাতছাড়া হয়ে গেছে । ব্যাস , তারপর শুরু হলো দুজনের লড়াই । উখোংকে খুঁজতে খুঁজতে পাচিয়ে এবং ভিক্ষু শা এদিকে এসেই দেখলো যুদ্ধ চলছে উখোং আর ষাঁড়দানবের মধ্যে । উখোং-এর পক্ষ নিয়ে তারাও যুদ্ধ শুরু করলো । ষাঁড় দানব তিনজনের সঙ্গে না পেরে পালিয়ে গেলো গুহায় ।
তারা ধাওয়া করে এসে ষাঁড়দানবের দরজায় ঘা দিলো । খুলে গেলো গুহার দরজা । উখোং পাচিয়ে এবং চু গুহার মধ্যে ঢুকে শুরু করলো লড়াই । এবার ষাঁড় দানবের সঙ্গে যোগ দিলো খুদে দানবের দল । একশো দফা প্রচন্ড লড়াই এর পরও হারজিত হলোনা । অবশেষে দুর্বল হয়ে ষাঁড়দানব রাজহাঁসের রূপ নিয়ে আকাশে উড়ে গেলো প্রাণ বাঁচানোর জন্য ।
উখোং অমনি একটা ঈগল পাখির রূপ নিয়ে রাজহাঁসের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো । আকাশে বার বার রূপ বদল করে লড়াই হলো । ষাঁড় দানবও বাহাত্তরটা রূপ নিতে পারতো । সে এবার ভালুকের রুপ নিয়ে মাটিতে নামলো । উখোং হাতির রূপ নিলো । দানব শ্বেত ষাঁড়ের রূপ নিলো । উখোং তখন নিজের রূপে আসলো । লড়াই-এর দাপটে কেঁপে উঠলো আকাশ মাটি । কিন্তু কেউ হার মানে না । এমন সময় উখোংকে সাহায্য করার জন্য আকাশ থেকে স্বর্গের কয়েক জন সেনাপতি এগিয়ে এলেন । ষাঁড়দানব পালাতে চাইলো ভয়ে ।
উখোং তার পেছনে ধাওয়া করলো । আর দানবের সামনে পথরোধ করে দাঁড়ালো রাজা লি এবং যুবরাজ নেচা । নেচা তার রূপ বদল করে তিন মাথা ও ছয় হাত ওয়ালা আকৃতি গ্রহণ করলেন । তারপর লাফ দিয়ে ষাঁড়দানবের পিঠে উঠে তার শিঙে অগ্নিচক্র পরিয়ে দিলেন । অমনি শ্বেত ষাঁড়ের শিঙে দাউদাউ করে জ্বলে উঠলো আগুন । আর উপায় নেই দেখে আর্তনাদ করতে করতে শ্বেত ষাঁড় আত্মসমর্পণ করলো । মুখ থেকে পাখাটা বের করে উখোং-এর হাতে দিলো অবশেষে ।
পাখা হাতে নিয়ে উখোং দেবতাদের প্রণাম করে বিদায় জানালো । ঐ পাখা দিয়ে অগ্নিশিখা পর্বতে প্রথমবার হাওয়া দিতেই অগ্নিশিখা নিভে গেলো । দ্বিতিয়বার হাওয়া দিতেই ধোঁয়া কেটে গিয়ে সোঁ সোঁ বাতাস শুরু হলো । তৃতিয়বার হাওয়া দিতেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো । ঠান্ডা হলো চারপাশ ।
|