v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-05-26 19:17:30    
কারুশিল্পের রৌদ্র ছড়িয়ে দেয়ার স্বেচ্ছাসেবিকা চৌ ইয়া

cri

    "ইতালির কারুশিল্প ও সাহিত্যের রেনের্সাঁ প্রদর্শনী" পেইচিংয়ের চীনা শতাব্দী-বেদীর বিশ্ব-কারুশিল্প কক্ষে চলছে । এখানে কারুশিল্প ও সাহিত্যের রেনের্সাঁর সময় গ্রেট মাষ্টারদের কাজকর্ম দেখানো হচ্ছে । এই বিশ্বমানের প্রদর্শনীর আকর্ষণে ব্যাপক চীনা দর্শকরা পরপর সেখানে ভীড় জমান । প্রদর্শনী কক্ষের এক স্পষ্ট ও আন্তরিকতাপূর্ণ কন্ঠস্বর প্রদর্শিত জিনিসগুলো দর্শকদের জানতে সাহায্য করেছে ।স্বেচ্ছাসেবিকা চৌ ইয়ার বণর্ণা দর্শকদের আকর্ষণ করেছে । ব্যাখ্যায় ইতালির কারুশিল্প ও সাহিত্যের রেনের্সাঁ ছাড়া তিনি চীনের সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ রক্ষা ও শিক্ষা সমস্যার কথাও উল্লেখ করেন । তাঁর ব্যাখ্যার কল্যাণে দর্শকরা আরও বেশি করে শিল্পকলার লাবণ্য উপলব্ধি করেছেন । চৌ ইয়ার বণর্ণায় দর্শকরা মুগ্ধ হয়েছেন । এ সম্পর্কে চৌ ইয়া বলেছেন , যে জিনিস সুন্দর, বিশেষ করে আমি যেটা সুন্দর বলে মনে করি,তা আমি সবার সঙ্গে উপভোগ করতে চাই । কারণ এটা আরেকটা চালিকা শক্তি । দর্শকরা আমাদেরকে নিজেদের কাজের তাত্পয অনুভব করতে সাহায্য করেছেন । আমাদের ব্যাখ্যা বা বণর্ণা ধর্মোপদেশ দেয়া নয়,বরং এটা উপভোগের মাধ্যমে এ ধরণের উষ্ণতাপূর্ণ আলোকচ্ছটা বিস্তার করা ।

    চৌ ইয়া সবাইকে উষ্ণতা ও রৌদ্রের অনুভূতি এনে দিয়েছেন । তাঁর হাসিতে লোকেরা তাঁর বয়স অনুমান করতে পারেন না । আসলে চৌ ইয়ার বয়স ৬০ বছর হয়েছে,১০ বছর আগে তিনি অবসর নিয়েছেন । তিনি বাণিজ্যিক কাজে নিয়োজিত ছিলেন, অবসর নেয়ার পর তিনি ইতালি ভ্রমণ করতে যান । ইতালির কারুশিল্প, সংস্কৃতি ও ইতিহাসের পরিবেশে তিনি অত্যন্ত মুগ্ধ হন । স্বদেশে ফেরার পর তিনি চীনের জাতীয় যাদুঘরের একজন স্বেচ্ছাসেবিকা হয়েছেন । তিনি বলেছেন,আমি নিজের পছন্দনীয় কাজ করব । যাদুঘরের কাজ আমি অত্যন্ত পছন্দ করি । এখানকার সংরক্ষিত ও প্রদর্শিত জিনিসগুলোর প্রাণ আছে । এগুলোর সঙ্গে কথাবার্তা বলা যায় , আদানপ্রদান করা যায় এবং এগুলো অনুভব করা যায় । এগুলো পযবেক্ষণ এবং উপলব্ধি করতে হবে ।

    তিনি বলেছেন, যখন এই কাজ শুরু করি তখন আমি বুঝেছি , আমি খুব কম জানি । আমাকে আরও অনেক শিখতে হবে । আমি অত্যন্ত সুখী। আমি আমার প্রতি দিনের নতুন লক্ষ্য উপলবদ্ধি করেছি । আমি এটা জানি না,ওটা জানি না,তাই শিখার জন্যে আমাকে নিয়মিতভাবে লাইব্রেরীতে যেতে হয় । বইগুলো থেকে আমি অনেক জানতে পেরেছি ।

    চৌ ইয়া তার অখন্ড অবসরে বই পড়তেন । তার খাবারের টেবিল বইতে ভর্তি । তার পরিবারপরিজনরা তাকে তথ্য জোগাড় করতে সাহায্য করেন । হাটার সময়ে বা গাড়িতে চড়ার সময়ে তিনি সবসময়েই ব্যাখ্যার কথা মুখস্থ করেন ।পারিবারিক কাজ করার সময়ে তিনি কান পেতে সংস্কৃতি বা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সংক্রান্ত টিভি-অনুষ্ঠান শুনতেন,এমনকি নাতি ঘুমাবার সময়ে তিনি এই ক্ষুদে শ্রোতাকে নানা কিছু ব্যাখ্যা করতেন । তিনি নিজেকে উপহাস করে বলতেন যে,বাল্যকালে যদি আমি এতো পরিশ্রম করতাম ,তাহলে আমি অনেক আগেই ডঃ হতাম । তিনি মনে করেন যে,এধরণের শিক্ষাগ্রহণ এক ধরণের সুখ ।

    দান করলে বেশী পাওয়া যায় । বিগত চার বছরে তিনি চীনের জাতীয় যাদুঘরের প্রতিটি বিরাটাকারের প্রদর্শনীর জন্যে ব্যাখ্যা করেছেন । কোনো একটি প্রদর্শিত জিনিস ব্যাখ্যা করার সময়ে তিনি দেশবিদেশের সংস্কৃতি, ইতিহাস ও রাজনীতি সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যার মাধ্যমে তুলনা ও বিশ্লেষণ করতেন । তার ব্যাখ্যা দর্শকদের সমাদর পেয়েছে ।

    একবার চৌ ইয়ার সঙ্গে এক দর্শকের দেখা হলো । তিনি তার হাত ধরে আবেগের সঙ্গে তাকে বলেছেন,আমি আপনাকে চিনি,আমি একবার জাতীয় যাদুঘর পরিদর্শন করেছি । তখন আমি আপনার ব্যাখ্যা শুনেছি । আপনার নাম আমি জানি না। তবে আপনার ব্যাখ্যা চমত্কার ।প্রতিটি ছবির পটভূমি ,কাহিনী,আপনার ব্যাখ্যা থেকে আমি অনেক জ্ঞান লাভ করেছি ।

    দর্শকরা তাকে শিক্ষিকা ডাকেন,কিন্তু তিনি সবসময় নিজেকে ছাত্রী মনে করেন । দশর্করা তাকে কেন সমাদর করেন সে সম্পর্কে তিনি বলেছেন,কারণ আমি দর্শক,আমি দর্শকদেরই প্রতিনিধি ,আমি দর্শকদের চাহিদা অনুযায়ী নান্দনিক দিক থেকে প্রাচীন জিনিস বা ছবির সঙ্গে সংস্কৃতি ব্যাখ্যা করি ।

    তার শ্রেষ্ঠকাজের জন্যে চৌ ইয়া চীনের জাতীয় যাদুঘরের প্রথম সম্মাণিক সদস্য হন । সঙ্গে সঙ্গে তিনি পেইচিংয়ের রাজপ্রাসাদ ও চীনা শতাব্দী-বেদীর বিশ্ব চারুশিল্প কক্ষের স্বেচ্ছাসেবকাও । তিনি বলেছেন,একজন স্বেচ্ছাসেবকা হিসেবে তিনি নিজেকে সমাজের একজন উপকারী মানুষ বলে মনে করেন । কাজের সঙ্গে সঙ্গে তিনি পরিবারকেও অত্যন্ত গুরুত্ব দেন । তিনি বলেছেন, আমি মনে করি,নারীর পক্ষে পরিবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । আমরা সবাই অন্যান্যদের সৃষ্টি করা সুখ উপভোগ করতে চাই,তবে আমরা অন্যান্যদের জন্যেও সুখ সৃষ্টি করতে পারি । স্বেচ্ছাসেবকা ছাড়াও বাড়িতে আমি একজন গৃহিনী,আমি বাজার করি,রান্না করি,ঘর সাফ করি এবং কিছু হাতের কাজ করি । এ ধরণের এক নারী হতে পেরে আমি অত্যন্ত খুশী ।