v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-05-25 17:33:04    
ছেংডুর বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন খাবার

cri
    আজকের এই আসরে আপনাদের চীনের আরেকটি শহর বেড়াতে নিয়ে যাবো। চীনের অন্যান্য শহরের তুলনায় এই শহরের বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে। এই শহরের নাম ছেংডু।

    ছেংডু সিছুয়ান প্রদেশের রাজধানী। ছংডু একটি অবকাশপূর্ণ শহর। দাস খেলা, চার রেস্তোরাঁয় চা খেয়ে খেয়ে গল্প করা স্থানীয় লোকের অবকাশ যাপনের প্রধান পদ্ধতি। এ ধরনের মন্থর জীবাযাপনের ছন্দ প্রশংসনীয়।

    ছেংডুবাসীরা চা খেতে পছন্দ করেন। সুতরাং ছেংডু শহরে অজস্র চা রেস্তোরাঁ আছে। তা ছাড়া, পার্ক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেও চা রেস্তোরাঁ আছে। বিশেষ করে শহরের পুরাতন অঞ্চলে কেবল চা রেস্তোরাঁর সমাবেশ। এ সব চা রেস্তোরাঁতে সব সময় অতিথিদের ভীড়। ব্যবসা জমজমাট ।

    চা রেস্তোরাঁয় বসে বসে লোকেরা সাধারণত অনেক ক্ষণ ধরে গল্প করে। চা রেস্তোরাঁ ছোট হলেও একটি বড় সমাজ। যারা ব্যবসা করেন তারা চা রেস্তোরাঁয় ব্যবসা নিয়ে আলোচনা করে, যারা অবসর নিয়েছেন তারা চা রেস্তোরাঁয় গল্প করে সময় কাঁটায়। প্রেমি-প্রেমিকারা চা রেস্তোরাঁয় যেতে পছন্দ করে। মিস্টার চাও সেন সেন যিনি প্রায়ই চা রেস্তোরাঁয়যান তিনি বলেছেন, চা খেয়ে শুধু পীপাসা দূর করা যায় তাই নয় , মানুষের তেজও বাড়ানো যায়। চা খাওয়ার পর মাথা আপনাআপনি স্পষ্ট হয়ে যায়। কথা বলার শেষ নেই।তিনি বলেছেন,

    সময় পেলে আমি চা রেস্তোরাঁয় যেতে পছন্দ করি। চা রেস্তোরাঁর ভিতরে যেমন দৃশ্য দেখতে পারি তেমনি চা খাওয়ার প্রদর্শনী দেখতে পারি। দিন বেলায় এখানে কোনো ব্যবসা নিয়ে আলোচনা করা যায়। তা ছাড়া, এ ধরনের পরিবেশে বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করা যায়।

    চীনের অন্যন্য জায়গার তুলনায় ছেংডু চা রেস্তোরাঁর বিন্যাস আর পরিবেশ অনেক পাথর্ক্য আছে। উত্তর চীনের চা রেস্তোরাঁর টেবিল আর বেঞ্চি লম্বা আকারের। চা খাওয়ার সময় সোজা করে বসতে হবে। তাই উত্তর চীনের চা রেস্তোরাঁয় চা খেতে ক্রান্ত লাগে। কিন্তু ছেংডু চা রেস্তোরাঁগুলোতে চা খেতে খুব মজা লাগে। চার টেবিল এত পুরাতন হয়েছে যা চকচক করে। বাঁশের তৈরী চেয়ার পুরোপুরি মানুষের হাড়ের সংযোগের সঙ্গে মিল থাকে। ছেংডুবাসীরা পুরাতন চা রেস্তোরাঁয় যেতে পছন্দ করেন। তারা সাধারণত নিদিষ্ট চা রেস্তোরাঁয় যান। অন্য জায়গা থেকে আসা পযর্টকরা যদি পরাতন চা রেস্তোরাঁর চা আস্বাদন করতে চান তাহলে ডু চিয়াং ইয়ের দক্ষিণ সেতুর পাশের একটি চা রেস্তোরাঁয় যান। সেখানে মানুষ বেশী, দৃশ্য ভাল। এই ছোট চা রেস্তোরাঁর মালিক উ ছিন বলেছেন, তাঁর এই ছোট চা রেস্তোরাঁ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। তাঁর এই ছোট চা রেস্তোরাঁয় বসে চা খেলে অতিথিরা নিজেদের বাসায় অনুভব করেন। তিনি বলেছেন,

    সারা দেশের বিখ্যাত চা আমার রেস্তোরাঁয় পাওয়া যায়।আমার এই চা রেস্তোরাঁয় চা খেলে মানুষরা আলাম লাগে। কারণ আমার এই রেস্তোরাঁর অবকাশ বড়।

    ছেংডু চা রেস্তোরাঁর সবচেয়ে বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন জিনিস হল ' চা ডকটার'। 'চা ডকটার' আসলে চা রেস্তোরাঁর কর্মচারী। দীর্ঘকাল ধরে চা রেস্তোরাঁয় কাজ করে বিভিন্ন স্থলের লোকের সঙ্গে মিলেমিশে থাকার পর তারা নানা ধরনের খবরাখবর রাখেন। তাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রের জ্ঞান আছে। সুতরাং তাদেরকে 'চা ডকটার ' ডাকে। সমৃদ্ধ জ্ঞান ছাড়া তাদের চা ঢলার প্রযুক্তি আয়ত্ত করতে হবে।

    ছেংডু শহরে অজস্র চা রেস্তোরাঁ আছে। এ সব চা রেস্তোরাঁর মধ্যে ভিয়েনশিয়েন গো একটি অপেক্ষাকৃত বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন চা রেস্তোরাঁ। এই চা রেস্তোরাঁ দুতলায় ভাগ করা হয়। এক তলায় যে সব আসবাবপত্র সাজানো হয়েছে সে সব আসবাবপত্র প্রচীনকালের শৈলী। চেয়ারগুলো সাদা রংয়ের। বাম দিকের টেবিল আর চেয়ারগুলো অতিথিদের সবচেয়ে পছন্দসই আসন। পাশে দেওয়াল। অতিথিরা এখানে বসে যথেচ্ছভাবে কথাবার্তা বলতে পারেন। দু তলায় ইউরোপীয় শৈলীর কাঠের তৈরী টেবিল আর চেয়ারগুলো সাজানো হয়। দেওয়ালে বড় আকারের প্রাকৃতিক ভূচিত্র ঝুঁলানো হয়। মেঝেতে সবুজ রংয়ের গালিচা বিছানো হয়। জানা গেছে একজন ব্যবসায়ী অতীতে মাসে কয়েক হাজার রেন মিন পি দিয়ে তাঁর অফিস ভাড়া করতেন। পরে তিনি এই চা রেস্তোরাঁর একটি মার্জিত ঘর ভাড়া করেছেন।তার কোন ভাড়ার ফি দরকার নেই। প্রত্যেক দিন তিনি কেবল চায়ে খরচ পরিশোধ করলে যথেষ্ট। দেশের অতিথি ছাড়াএই চা রেস্তোরাঁ অনেক বিদেশী পযর্টককে আকৃষ্ট করে। সুইজল্যান্ড থেকে আসা পযর্টক মিস ক্র্যানডিয়া পেরলে বললেন, আমি প্রথব বার এই চা রেস্তোরাঁয় চা খেতে এসেছি। এর আগে আমি ছেংডু শহরের কয়েকটি চা রেস্তোরাঁয় চা খেতে গিয়েছি। কিন্তু আমি এখানের প্রাচীন শৈলীর সাজা-সাজ পছন্দ করি। তা ছাড়া, এই চা রেস্তোরাঁর পরিবেশও অত্যন্ত ভাল।

    ছেংডু চা রেস্তোরাঁর পরিবর্তন বলতে গেলে এ সব চা রেস্তোরাঁর পাত্রগুলো মনে পড়ে। বতর্মানে কিছু কিছু ব্যবসায়ীরা চা রেস্তোরাঁয় তাদের ব্যবসা নিয়ে আলোচনা করতে পছন্দ করেন। তারা সাধারণত কয়েক ডর্জন ইয়ানে এক কাপ চা খান। সুতরাং সম্প্রতি অনেক চা রেস্তোরাঁয় ক্রিটন কাপের ব্যবহার শুরু হয়েছে। এই ক্রিটন কাপে চা দেখতে কাচা মাছের মতো। কিছু ক্ষণ পর পর পানির উপর আবার পানির নীচে ডুবে যায়। দেখতে খুব মজা লাগে।

    সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাজারে 'ছিংসেন লিয়ে সুয়ে 'নামে এক ধরনের চা খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। দেশ বিদেশের পযর্টকরা ছেংডু ভ্রমণ করতে     আসলে সাধারণত এই চা আস্বাদন করতে চান। ছেংডু শহরের উপকন্ঠের কৃষকরা এই চা খান।স্থানীয় লোক মিস হানলিন বললেন,

    এই চা খেতে মুখে খুব পরিষ্কার লাগে। এই চা অনেক প্রজাতির। কোনো কোনো দামী, কোনো কোনো সস্তা। ছোট-বড়রা এই চা পছন্দ করেন।