** বন চুক্তি স্বাক্ষরিত
বিংশ শতাব্দীর ৫০' দশকের প্রথম দিকে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের বিরোধ অব্যাহতভাবে তীব্রতর হয়ে ওঠে । সোভিয়েট ইউনিয়ন প্রতিরোধের জন্য পাশ্চাত্য মিত্র দেশগুলো পশ্চিম জর্মানীকে নিয়ে "ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা গোষ্ঠী" প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল। তাদের লক্ষ্য ছিল পুনরায় পশ্চিম জার্মানীকে শক্তিশালি করা । সে সময় জার্মানীর পক্ষেও পাশ্চাত্য দখলদার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক বিন্যাস করা দরকার ছিল , যাতে জার্মানী পাশ্চাত্য প্রতিরক্ষা জোটের জন্য সৈন্য সরবরাহ করতে পারে।
১৯৫২ সালের ২৬ মে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং ফ্রান্স পশ্চিম জার্মানীর সঙ্গে "বন চুক্তি" স্বাক্ষর করে। এটা "তিনটি দেশ আর জার্মান ফেডারেল প্রজাতন্ত্রের সম্পর্ক সংক্রান্ত চুক্তি" এবং "জার্মান ফেডারেল প্রজাতন্ত্রে বিদেশী বাহিনী এবং ব্যক্তি বিশেষের অধিকার আর কর্তব্য সংক্রান্ত চুক্তি" প্রভৃতি ধারাবাহিক চুক্তি এবং অতিরিক্ত দলিল নিয়ে গঠিত। চুক্তিতে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং ফ্রান্স দখলদারী আইন বাতিল করবে, তবে তিনটি দেশের বাহিনী পশ্চিম জার্মানীর অভ্যন্তরে মোতায়েন থাকবে, জার্মান ফেডারেল প্রজাতন্ত্র "ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা গোষ্ঠিতে " যোগ দেবে।
১৯৫৪ সালের আগস্ট মাসে ফ্রান্স নাকচ করে দেয়ায় "ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা গোষ্ঠি" প্রতিষ্ঠিত না হলেও পশ্চিম জার্মানী অন্য উপায়ে অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে পুনরায় শক্তিশালী হয়ে উঠে।
** মোওগাও গুহার "শাস্ত্র রাখার গুহা " আবিষ্কৃত
১৯০০ সালে মোকাও গুহার একটি বই রাখার গোপনীয় কক্ষ অপ্রত্যাশিকভাবে উদ্ধার করা হয়। পরে লোকেরা এই গোপনীয় কক্ষ 'শাস্ত্র রাখার গুহা' বলে ডাকেন। তিন মিটার দীর্ঘ আর চড়া এই ছোট গুহার ভিতরে বৌদ্ধ ধর্মের শাস্ত্র, নানা ধরনের দলিলপত্র, সূচিপত্র, চিত্র , বৌদ্ধমূর্তি ইত্যাদি প্রায় ৫০ হাজারের বেশি দুর্লভ পুরাকীর্তী উদ্ধার করা হয়। এগুলো পুরাকীর্তি চতুর্থ শতাব্দী থেকে একাদশ শতাব্দী পযর্ন্ত আমলের। এ সব পুরাকীর্তির মধ্যে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে চীন, মধ্য-এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া, ইউরোপ প্রভৃতি জায়গার ইতিহাস , ভৌগোল, রাজনীতি, জাতি, সমর , ভাষা, সাহিত্য ও শিল্পকলা, ধর্ম, ওষুধ বিষয়ক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সহ সামাজিক ক্ষেত্রের যাবতীয় বিষয়। এটা মধ্য ও প্রাচীন যুগের বিশ্বকোষ' বলে আখ্যয়িত হয়।
চীনের সংস্কৃতির মুক্তা হিসেবে চীন সরকার মোওগাও গুহা সংরক্ষণের ওপর সবর্দাই গুরুত্ব দিয়ে এসেছে।সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মোওগাও গুহা পরির্দশ করতে আসা দেশী-বিদেশী পযর্টকদের সংখ্যা অধিক থেকে অধিকতর হয়ে উঠে । এই পুরাকীর্তি রক্ষার জন্যে চীন সরকার মোওগাও গুহার বিপরীত দিকের সানওই পাহাড়ের পাদদেশে তুনহয়াং শিল্পকলা প্রদর্শনী কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে । এই কেন্দ্রে তুনওয়াংয়ের মোওগাও গুহার নকল অংশ পযর্টকদের জন্যে দেখানো হয়।
সম্প্রতি 'ডিজিটল কল্পিত মোওগাও গুহা প্রতিষ্ঠার জন্যে চীন সরকার ২০ কোটি ইয়ান বরাদ্দ করেছে। জানা গেছে, দর্শকরা এই ডিজিটল কল্পিত গুহাতে সত্যিকার মোওগাও গুহা অনুভব করতে পারেন। তা ছাড়া গুহার ভেতরে দর্শকরা নুরন্ত ও ষ্পষ্টভাবে গুহার ভেতরের স্থাপত্য, রঙীন ভাষ্কর্য আর চারদিকের দেয়ালচিত্র সহ সমস্ত শিল্পকর্ম দেখতে পারেন। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, 'ডিজিটল কল্পিত মোওগাও গুহার' প্রতিষ্ঠা শুধু যে দেয়ালচিত্র রক্ষা করতে পারে , তাই নয়,বরং তুনহয়াংয়ের সাংস্কৃতিক সম্পদের রেকর্ড আর সংরক্ষণ তরান্বিত করবে , যাতে মোওগাও গুহার পুরাকীর্তি আর সংস্কৃতি দীর্ঘস্থায়ী থাকে।
|