v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-05-19 11:11:08    
বিশ্বকে বিস্মিত করবে চীন-ভারত অর্থনৈতিক সহযোগিতার অদম্য বিকাশ

cri

 ১৯৫০ সালে চীন-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার গোড়ার দিকে দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক আদান-প্রদান খুবই কম ছিল । কারণ নবোত্থিত ভারত প্রজাতন্ত্র এবং সবেমাত্র মুক্তিপ্রাপ্ত নয়া চীনের অর্থনীতি তখন পুনর্বিন্যাস ও পুনর্গঠনের পর্যায়ে ছিল । সেই সময়ে ভারতের পাটের ব্যাগের বিনিময়ে চীনের চাল রফতানি চীন-ভারত অর্থনৈতিক আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ঘটনা ছিল । চীনের তিব্বতীদের জীবনের অতি প্রয়োজনীয় ইয়ুননান চা ও নিরেট চা কলকাতা ও কেলুনপাওয়ের মধ্য দিয়ে তিব্বতে আসতো এবং তিব্বতে উত্পন্ন ভেড়ার লোম আর গরু ও ছাগলের চামড়া ভারতে বিক্রি হতো । তিব্বত ভারত থেকে কিছু কাপড় ও দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিসপত্রও আমদানি করতো ।

 বর্তমান শতাব্দিতে পদার্পণের পর চীন-ভারত সম্পর্কের আরো উন্নতি হতে চলেছে । দুই দেশের মধ্যে শীর্ষ পর্যায়ে ঘন ঘন সফর বিনিময় হচ্ছে এবং চীন-ভারত সম্পর্ক আরো স্থিতিশীল ও পরিপক্ক হয়েছে । বিশেষ করে ২০০৫ সালের এপ্রিল মাসে চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাওয়ের ভারত সফর চীন-ভারত মৈত্রীর জন্যে নতুন সিঁড়ি সরবরাহ করেছে । উভয় পক্ষ " সার্বিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতার পাঁচসালা কর্মসূচী" প্রণয়ন করেছে এবং চীন-ভারত অবাধ বাণিজ্য অঞ্চলের প্রশ্নে আলোচনা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে । দু'পক্ষ ২০০৮ সালের মোট দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য মূল্য ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০১০ সালে ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নির্ধারণ করেছে । গত কয়েক বছরে চীন- ভারত অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতার প্রধান প্রধান অগ্রগতি নিম্নরূপ:

 দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য: ২০০০ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত চীন-ভারত মোট বাণিজ্য মূল্য ৩৫৯ কোটি মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ১৩৬০ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয় । ২০০৫ সালের ডিসেম্বর মাসে নিখিল ভারত শিল্প ও বাণিজ্য ফেডারেশনের একটি জরীপ রিপোর্ট অনুসারে ২০০০ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ভারত ও তার প্রথম বাণিজ্যিক অংশীদার যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার মোট বাণিজ্য মূল্য১১.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ১৯.৫ বিলিয়নে উন্নীত হয় । তার বৃদ্ধিহার ছিল ৬৩ শতাংশ । সেই জরীপে ভবিষ্যদ্বাণী উচ্চারণ করে বলা হয়েছে , অদূর ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের স্থলে চীন ভারতের প্রথম বড় বাণিজ্যিক অংশীদারে পরিনত হবে ।

 কারিগরি সহযোগিতা : গত এক বছরে চীন ও ভারতের মধ্যে কারিগরি সহযোগিতার বিরাট উন্নতি হয়েছে । যেমন শক্তি সম্পদের ক্ষেত্রে চীন কয়লার সরলীকরণ প্রযুক্তি ও কয়লার বাষ্পীয়করণ প্রযুক্তি ভারতের কাছে হস্তান্তরের ব্যাপারে সম্মত হয়েছে । চীন ও ভারতের দারুণ তেল ঘাটতি রয়েছে । অতীতে বিদেশী তেল সম্পদ অন্বেষণের ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল । এখন দু পক্ষ এই ক্ষেত্রে সহযোগিতা করে উভয়ে বিজয় অর্জনের চেষ্টা করছে ।

 পুঁজি বিনিয়োগ: গত শতাব্দির নব্বইয়ের দশক থেকে ভারত চীনে পুঁজি বিনিয়োগ করতে শুরু করে । সাম্প্রতিক বছরগুলো এই পুঁজি বিনিয়োগের বিরাট প্রসার হয়েছে । চলতি শতাব্দির প্রথম দিক পর্যন্ত চীনে ভারতের পুঁজি বিনিয়োজিত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩৫-এ দাঁড়িয়েছে এবং চুক্তিবদ্ধ পুঁজি বিনিয়োগের মূল্য ১১ কোটি ৯২ লাখ ৮ হাজার মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে । সর্বশেষ এক তথ্য থেকে দেখা গেছে, ২০০৫ সালের শেষ নাগাদ ভারত চীনে মোট ১২ কোটি মার্কিন ডলারের পুঁজি বিনিয়োগ করেছে । আপেক্ষিকভাবে দেরীতে ভারতে চীন তার পুঁজি বিনিয়োগ করেছে । বর্তমান শতাব্দির গোড়ার দিক পর্যন্ত কেবল ৯টি চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠান ভারতের সংগে সহযোগিতা করে শিল্পপ্রতিষ্ঠান চালু করেছে এবং প্রটোকলের ভিত্তিতে পুঁজি বিনিয়োগের মূল্য ছিল ২ কোটি ৪৫ লাখ ৯৫ হাজার মার্কিন ডলার মাত্র । কিছুদিন আগে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রী পো সি লাই একটি দল নিয়ে ভারত সফর করেছেন । চীনের দু'শতাধিক ব্যবসায়ী তাঁর সংগী ছিলেন ।

 বাস্তব ঘটনা থেকে প্রমাণিত হয়েছে, চীন-ভারত অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা অল্প দিনের মধ্যে উভয়ের বিজয়ের নতুন পরিস্থতি এনে দিয়েছে । এই সহযোগিতায় যে প্রবল প্রবণতা দেখা দিচ্ছে , তা বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে । গত নভেম্বর মাসে ওয়ানশিতা আন্তর্জাতিক সংগঠনের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, নতুন যুগের চীন-ভারত যৌথ মালিকানার কোম্পানিগুলো সারা পৃথিবীর শিল্প মহলের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ পরিস্থিতির পরিবর্তন করবে ।