v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-05-18 12:39:12    
রাষ্ট্রদূত সুনঃ মৈত্রী ও সহযোগিতাই চীন-ভারত সম্পর্কের প্রধান ধারা

cri

 ২০০৬ সাল হচ্ছে চীন-ভারত মৈত্রী বর্ষ । সম্প্রতি নয়াদিল্লীতে আমাদের সংবাদদাতা ভারতস্থ চীনা রাষ্ট্রদূত সুন ইউ সির একটি সাক্ষাত্কার নিয়েছেন । ধারণকৃত সাক্ষাত্কারটি আদ্যোপান্ত বিবৃত হল ।

 সংবাদদাতা: চীন-ভারত মৈত্রী বর্ষ কিভাবে নির্ধারিত হয়েছে ?

 সুন ইউ সি: গত বছরের এপ্রিল মাসে চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাওয়ের ভারত সফরকালে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সংগে পরমর্শ করে ২০০৬ সালকে চীন-ভারত মৈত্রী বর্ষস্থির করেন । দু'দেশের সম্পর্কের নতুন বিকাশের সুবাদে এটা সম্ভব হয়েছে । প্রধানমন্ত্রী ওয়েনের ভারত সফরের সময়ে দুই দেশ শান্তি ও সমৃদ্ধিমুখী রণকৌশলগত সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করেছে । তার সারমর্ম পরিস্ফূর্ত করার জন্যে স্বাভাবিকভাবে চীন-ভারত মৈত্রী বর্ষের তত্পরতা আলোচ্যসূচীতে অন্তর্ভুক্ত হয় । গত কয়েক বছরে দু'দেশের মধ্যে রাজনৈতিক আস্থা বেড়েছে , ঘন ঘন অর্থনেতিক ও বাণিজ্যিক আদান-প্রদান হয়েছে এবং সংস্কৃতি, পর্যটন , শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি আর সামরিক ক্ষেত্রে সম্পর্ক আরো জোরদার হয়েছে । সুপ্রতিবেশীসূলভ বন্ধুত্ব সুদৃঢ় করা , পারস্পরিক উপকারিতা ও সহযোগিতা সম্প্রসারণ করা এবং সম্মিলিত উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা ইতিমধ্যে দুই দেশের সরকার ও জনগণের অভিন্ন আকাংক্ষায় পরিণত হয়েছে । যাতে দু'দেশের যুগ যুগ ধরে বন্ধু হয়ে থাকা এবং চিরকাল ভালো প্রতিবেশী, ভালো বন্ধু ও ভালো অংশীদার হয়ে থাকার ধারণা জনমনে আরো প্রোথিত হয় , সেজন্যে চীন-ভারত মৈত্রী বর্ষ পালন করা অনিবার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে ।

 সংবাদদাতা: চীন-ভারত মৈত্রী বর্ষ দু'দেশের সম্পর্কোন্নয়নে কি কি প্রভাব এনে দিতে পারে ?

 সুন: দুটি সুদীর্ঘ ইতিহাসসম্পন্ন সুসভ্য দেশ - চীন ও ভারত হাতে হাত মিলিয়ে চীন-ভারত মৈত্রীর বর্ষ পালনের জন্যে যে তত্পরতার আয়োজন করেছে , তা বিশ্বের দুই পঞ্চমাংশ লোকের ওপর প্রভাব বিস্তার করবে । তাই তার বিশেষ তাত্পর্য রয়েছে । এই বর্ষ চলাকালে দুই দেশের মধ্যে আরো ঘন ঘন শীর্ষ পর্যায়ের সফর হবে , অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিনিময় আরো জোরদার হবে , সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান আরো বৈচিত্র্যময় হবে এবং বেসরকারী পর্যায়ের বিনিময় আরো বদ্ধমূল হবে । মোটের ওপর এই তত্পরতা সার্বিকভাবে বিকাশমান চীন-ভারত সম্পর্কের ওপর নতুন প্রাণশক্তি যুগাবে ।

 সংবাদদাতা: আপনি বেশ কয়েকবার চীন-ভারত সম্পর্কের সার্বিক উন্নয়নের কথা উল্লেখ করেছেন , সার্বিক উন্নয়ন বলতে আপনি কি বোঝাতে চান ?

 সুন : গত কয়েক বছরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশের আদান-প্রদান ও সহযোগিতায় সার্বিক উন্নয়নের প্রবণতা দেখা দিয়েছে । বিশেষ করে গত বছর দু'দেশের মধ্যে রণকৌশলগত সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠার পর এই প্রবণতা আরো প্রবল হয়েছে । রাজনৈতিক ক্ষেত্রে দু'দেশের নেতাদের ঘন ঘন সফর বিনিময় হয়েছে এবং পারস্পরিক রাজনৈতিক আস্থা গভীরতর হয়েছে । কেবল ২০০৫ সালেই দু'দেশের নেতারা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে ৬বার বৈঠকে মিলিত হয়েছেন । ইতিহাসের বর্তানো সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়া স্থিতিশীলভাবে সামনে এগিয়ে চলেছে ।

 সংবাদদাতা: পৃথিবীর কোনো কোনো লোক ভারতের সংগে চীনের তুলনা করতে গিয়ে বলেন যে , এই দুটো দেশের মধ্যে সহযোগিতার চেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই বড় । এই সম্বন্ধে আপনার মনোভাব কি ?

 সুনঃ পৃথিবীতে সত্যি সত্যিই এমন লোক আছেন , যারা আমাদের দুই দেশকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে অভিহিত করেন । কিন্তু বাস্তবে তা নয় । চীন ও ভারতের মধ্যে কিছু প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও সেই প্রতিতদ্বন্দ্বিতা দু দেশের উন্নয়নের সংগে সংগতিপূর্ণ সুষ্ঠু প্রতিদ্বন্দ্বিতা । তা পরস্পরকে সহযোগিতার সুযোগ এনে দিতে পারে । সেটা একটি ম্যারাথন দৌঁড়ের মত । কোনোমতেই এটা জীবনমরণ সংগ্রাম নয় ।

 সংবাদদাতা: দুই দেশের জন্যে চীন-ভারত মৈত্রী ও সহযোগিতার তাত্পর্য কি ?

 সুন : আজকের দুনিয়ায় দুটো বৃহত শক্তি চীন ও ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মিল রয়েছে । দুই দেশ বিশ্বের সবচেয়ে বেশি লোকসংখ্যাবিশিষ্ট দেশ । দুই দেশের রয়েছে দীর্ঘদিনের সভ্যতার ইতিহাস । দুই দেশই আক্রমণ ও দাসত্বের শিকার হয়েছিল এবং প্রায় একই ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিল । আবার প্রায়একই সময়ে দুই দেশ স্বাধীনতা ও মুক্তি লাভ করেছে । আজ দুই দেশের কাঁধে ন্যস্ত রয়েছে অর্থনীতির উন্নয়ন ও জনগণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের গুরু ভার । দুই দেশের দ্রুত উন্নয়ন যেমন এশিয়ার উত্থানের পরিচায়ক , তেমনি সোয়া কোটি বর্গকিলোমিটার আয়তনের ভূমিতে ২৪০ কোটি লোকের সৃষ্ট সম্পত্তি অপ্রতিরোধ্যভাবে গোটা বিশ্বের উন্নয়নকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে । যখন দু'দেশের জনগণ এক সুরে কথা বলবেন , তখন সেটা পৃথিবীর সবচেয়ে প্রবল আওয়াজ হবে ।