দেবি উখোংকে আচার্যের কাছেই থাকতে বললেন । তিনি আরও বললেন , আচার্য আবার বিপদে পড়বেন এবং খোঁজ করবেন তোমাকে । নরোম হলো উখোং ।
আচার্য পিপাসার্ত হয়ে অন্য শিষ্য দুজনকে পানি আনতে পাঠালেন । অনেকক্ষণ হয়ে গেলো কেউ-ই ফিরলোনা । এমন সময় উখোং পানির পাত্র নিয়ে হাজির । আচার্যের রাগ তখনও পড়েনি । তিনি উখোং-কে তাড়িয়ে দিলেন এবং তার দেয়া পানি খাবেন না জানালেন ।
এবার রেগে গিয়ে উখোং আচার্যের মাথায় এক ঘা মারলো । অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলেন আচার্য । সব জিনিসপত্র নিয়ে মেঘে করে পালিয়ে গেলো উখোং ।
পাচিয়ে আর শা অনেক্ষণ পর একবাটি ভাত আর একবাটি পানি নিয়ে এসে দেখলো আচার্য অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন । তাঁর কোনো জিনিসপত্রও নেই । এরা ভাবলো , নিশ্চয় কোনো দস্যুর কাজ ।
জ্ঞান ফিরে এলে আচার্য উখোং-এর আচরণের কথা বললেন । শিষ্যরা শুনে খুব অবাক হলো । রেগেও গেলো উখোং-এর উপর । গুরুর সঙ্গে এমন ব্যবহার মেনে নেয়া যায় না ।
ভিক্ষু শা উখোং-এর খোঁজ জলপর্দা গুহাতে এলো । দেখলো যে উখোং পাথরের সিংহাসনে বসে সুয়ান চুয়াংকে দেয়া থাং সম্রাটের পরিচয় পত্র জোরে জোরে পড়ছে । মনের আনন্দেই আছে সে ।
ভিক্ষু শা উখোং-কে গুরুদেবের পরিচয়পত্র ফিরিয়ে দিতে বললো । উখোং তাকে চিনতেই পারলোনা । ভিক্ষু তখন উখোংকে গুরুদেবের কাছে ফিরে যেতে বললো । হয় সে যাবে আর নয়তো আচার্যের জিনিসপত্র ফেরত দেবে । উখোং বললো , গুরুকে মেরে আমি সব কিছু নিয়ে এসেছি । এই পরিচয়পত্র নিয়ে আমিই যাবো বৌদ্ধশাস্ত্রগ্রন্থ সংগ্রহ করতে । আমার সঙ্গেও একজন গুরুদেব আছেন । কালই আমরা রওনা দেবো পশ্চিমে ।
এমন সময় দেখা গেলো সাদা ঘোড়ায় সুয়ান চুয়াং বসে আসছেন । পেছনে পাচিয়ে ও ভিক্ষু শা ।
রাগে ভিক্ষু শা বর্শার এক আঘাতে নকল শাকে মেরে ফেললো । দেখা গেলো ও ছিলো একটা বাঁদর ।
উখোং ভিক্ষুশাকে ঘিরে ধরতে গেলো । শা লাফ দিয়ে আকাশে উঠে পালালো । সে দক্ষিণ সাগরে দেবি কুয়ানইনের কাছে এলো । দেখলো উখোং বোধিসত্বের কাছেই বসে আছে । শা তাকে বর্শা দিয়ে মারতে গেলো ।
তখন ঘটনা কি হয়েছে তা জানতে চাইলেন দেবি । তিনি সব কথা শুনে শা আর উখোংকে পাঠালেন জলপর্দা গুহাতে ।
তারা পুষ্পফল পর্বতে এসে সত্যি সত্যিই আর এক উখোংকে দেখলো । সঙ্গে সঙ্গে তার ডান্ডা দিয়ে নকল উখোংকে মারতে গেলো উখোং । শুরু হলো প্রচন্ড লড়াই । কে আসল আর কে নকল তা বোঝার উপায় রইলো না । দুজনেই সমানভাবে লড়ছে । শক্তিতে কৌশলে কেউ কারো চেয়ে কম নয় ।
|