সুপ্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, সুদূর পেইচিং থেকে আপনাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের সুরের ভুবন পরিবেশন করছি আমি আপনাদের বন্ধু লিলি। আজকের অনুষ্ঠানে আপনারা এক একটি সুন্দর গান শোনার সঙ্গে সঙ্গে মনে মনে চীন ভ্রমণ করতে পারবেন। আপনারা সুন্দর সুরে সুরে চীনের বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন করবেন।
কুলাং দ্বীপ দক্ষিণ-পূর্ব চীনের ফুচিয়েন প্রদেশের সিয়ামেন শহরের একটি দ্বীপ। সেই দ্বীপে একটি গুহা আছে। জোয়ার ভাটার কারণে যখন বিরাট ঢেউ গুহার ওপর প্রচণ্ড আঘাত হানে, তখন যেন ঢাক বাজার শব্দ হয়। চীনা ভাষায় "কুলাং" মানে ঢেউ যেন ঢাক বাজাচ্ছে। তাই এই দ্বীপের নাম হচ্ছে "কুলাং দ্বীপ"। এই দ্বীপে হাওয়া খুব বিশুদ্ধ, পরিবেশ খুব নিরিবিলি। চার ঋতুতেই গাছ সবুজ, ফুল ফোটে। দ্বীপে বসবাসকারীরা সঙ্গীত খুব পছন্দ করেন। চীনের অনেক বিখ্যাত সঙ্গীতকার এখানে জন্মগ্রহণ করেন। তাই এই দ্বীপের আরেকটি নাম "সঙ্গীতের দ্বীপ"। এখন আমরা " কুলাং দ্বীপের রাত"নামে একটি গান শোনার সঙ্গে সঙ্গে এই দ্বীপের রাত অনুভব করবো।
থাই পাহাড় চীনের শানতোং প্রদেশে অবস্থিত। তার প্রধান শৃংগ সমুদ্রসমতল থেকে ১৫৪৫ মিটার উঁচু। এটি "চীনের প্রথম পাহাড়" বলে পরিচিত। প্রাচীনকাল থেকে চীনারা থাই পাহাড়কে একটি মঙ্গলকর স্থান হিসেবে গণ্য করেন। চীনের অনেক সম্রাট এবং নামকরা ব্যক্তি থাই পাহাড়ে মন্দির স্থাপন ও শিলালিপি খোদাই করেন। ১৯৮৭ সালে ইউনেস্কো থাই পাহাড়কে বিশ্বের সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক সম্পত্তির তালিকাভুক্ত করে। আচ্ছা, প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, এখন আমরা একসাথে " থাই পাহাড়, সুন্দর" নামে একটি গান শুনবো। গানে চমত্কার আনন্দের সুরের মাধ্যমে থাই পাহাড়ের সুন্দর দৃশ্যের প্রশংসা করা হয়।
ইয়াংসি হচ্ছে চীনের বৃহত্তম নদী। ইয়াংসি নদীর তিন গিরিখাত চীনের দশটি দর্শনীয় স্থানের একটি। তিন গিরিখাত পশ্চিমে সিছুয়েন প্রদেশের ফেংচিয়ে নগর থেকে শুরু হয়ে পূর্বে হুপেই প্রদেশের ইছাং নগর পর্যন্ত বিস্তৃত। তা ১৯৩ কিলোমিটার লম্বা। তিন গিরিখাত এলাকায় প্রথমে গেচৌ বাঁধ ও জলবিদ্যুত্ কেন্দ্র নির্মিত হয়েছে। বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুত্ কেন্দ্র প্রকল্প, অর্থাত্ তিন গিরিখাত প্রকল্প নির্মাণের কাজও মোটামুটি সম্পন্ন হয়েছে। এখন " তিন গিরিখাত" নামে একটি গান শুনবো আমরা। গানে তিন গিরিখাতের অদ্ভূত প্রাকৃতিক দৃশ্যের প্রশংসা ও মাতৃভূমির প্রতি মানুষের ভালবাসা বর্ণনা করা হয়েছে।
হুয়াংকুওশু জলপ্রপাত চীনের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের কুইচৌ প্রদেশে অবস্থিত। এই জলপ্রপাত ৭৪ মিটার উঁচু এবং এর ৮১ মিটার চওড়া। তা হচ্ছে চীনের বৃহত্তম জলপ্রপাত এবং বিশ্বে খুব বিখ্যাত। হুয়াংকুওশু জলপ্রপাত উপর থেকে, নীচে থেকে, সামনে, পিছনে, ডান ও বাম ছয় দিক থেকে উপভোগ করা যায়। এই দিক থেকে বিশ্বে এই জলপ্রপাত অদ্বিতীয়। এখন আমরা একটি গান শোনার সঙ্গে সঙ্গে হুয়াংকুওশু জলপ্রপাতের বিস্ময়কর দৃশ্য উপভোগ করবো। গানের নাম "হুয়াংকুওশু জলপ্রপাত"।
চীনের ছিংহাই প্রদেশে একটি নোনা পানির বিরাট হ্রদ আছে। তার নাম ছিংহাই হ্রদ। হ্রদের মাঝখানে একটি খুব বিখ্যাত পাখি দ্বীপ আছে। প্রতি বছরের মার্চ ও এপ্রিল মাসে বিভিন্ন ধরণের পাখি দক্ষিণ এশিয়া, ভূমধ্যসাগর ও লোহিত সাগর থেকে এসে দ্বীপে তাদের বাসা তৈরী করে। এই দ্বীপ শীঘ্রই পাখির শহরে পরিণত হয়। আচ্ছা, প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, এখন " ছিংহাই হ্রদের মুক্তা--পাখির দ্বীপ"নামে একটি গান শোনা যাক।
আচ্ছা, প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, আজকের সুরের ভুবন এখানে শেষ হল। আগামী সপ্তাহের একই সময় আমাদের আবার কথা হবে। আজকের অনুষ্ঠান শোনার জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ।
|