v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-04-21 16:15:46    
চীনের শহুরে নারীরা ভালই আছেন

cri
    শহুরে নারীদের জীবনযাত্রার গুণগতমান জানার জন্যে সম্প্রতি চীনের নারীদের জীবনযাত্রা জরীপ কেন্দ্রের উদ্যোগে চীনা নারীদের জীবন সম্পর্কে এক জরিপ চালানো হয়েছে ।জরিপের ফলাফল থেকে বোঝা যায় যে, শহরের বেশির ভাগ নারী নিজের জীবনযাত্রার ইতিবাচক মূল্যায়ন করেছেন । চাকরি ,বিবাহ ও জীবন সম্পর্কে বেশীর ভাগ নারী সন্তুষ্ট , ভবিষ্যত সম্পর্কে তারা আস্থাবান ।

    এবারকার জরিপের ফলাফল থেকে জানা গেছে, ৭৪.৬ শতাংশ শহুরে নারী দিনে ৮ ঘন্টা কাজ করেন । ৯৬.২শতাংশ নারী মনে করেন যে , তাদের কাজ ভিন্নমাত্রায় তাদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারে । এদের মধ্যে ৬০.৮শতাংশ নারী মনে করেন যে , তাদের কাজ নিজের পুরোপুরি বা বেশির ভাগ যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারে । মাত্র ৩.৮শতাংশ নারী মনে করেন যে ,তাদের কাজ নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারে না ।

    জরিপ থেকে জানা গেছে,শহুরে নারীরা নিজের পছন্দনীয় কাজ করতে যে সময় ব্যয় করেন,তা পারিবারিক কাজের চেয়ে বেশী। ছুটির সময় ছাড়া শহুরে নারীরা প্রত্যেক দিন গড়ে ১০৪ মিনিট করে বই পড়েন বা অন-লাইনে থাকেন , বরং মাত্র ৮৫ মিনিটে পারিবারিক কাজ করেন ।

    জরিপ থেকে জানা গেছে , চীনের বেশির ভাগ শহুরে নারী নিজেদের বিয়ের ইতিবাচক মূল্যয়ন করেন । ৪৫.৬শতাংশ নারী "সুখী" শব্দটি দিয়ে নিজের বিয়ের মূল্যয়ন করেন । ১৯.৯শতাংশ নারী মনে করেন যে , তারা স্বামী-স্ত্রী পরস্পরকে অতিথির মতো সম্মান প্রদর্শন করেন । ৩১.৭শতাংশ নারী মনে করেন যে,তাদের বিয়ে নিস্তেজ আর মাত্র ১.৪ শতাংশ নারী "উদাসীন ও দুঃখী"শব্দটি দিয়ে নিজের বিয়ের বর্ণনা দিয়েছেন ।

    জরীপ থেকে জানা গেছে , দৈনদিন জীবনযাত্রার প্রয়োজন মেটানো ছাড়া ২০০৫ সালে প্রসাধনী দ্রব্য, বিউটিপার্লার ,শরীরচর্চা,পর্যটন, টেলিযোগাযোগ,বই ও আত্মশিক্ষা প্রভৃতি ক্ষেত্রে চীনের শহুরে নারীরা গড়ে ৮৫৬৯.২৮ রেনমিনপি ব্যয় করেছেন ।

    এবারের জরীপ ভূক্ত ৫৩.৫শতাংশ নারী সরকারের দেয়া পারিবারিক ভাতা পান । ৫৩.৫ শতাংশ নারী সরকারের দেয়া চিকিত্সা সুবিধা পান । ৪০.১শতাংশ নারী প্রসূতি বীমা, ৩৭.৮ শতাংশ নারী নিজ ইউনিটে দেয়া পরিপূরক চিকিত্সা বীমা আর ৩০.৯ শতাংশ নারী ইউনিটে দেয়া পরিপূরক বৃদ্ধ-বৃদ্ধা-বীমা ভোগ করেন ।

    জরীপ থেকে জানা গেছে , শহুরে নারী নানা ধরণের কল্যাণমূলক তত্পরতায় অংশ নিতে আগ্রহী। ৯৬.২শতাংশ নারী নানা ধরণের দাতব্য তত্পরতায় অংশ নিয়েছিলেন । এদের মধ্যে ২৭.৫শতাংশ দুর্গত এলাকাকে,২১.৮শতাংশ গরিব অঞ্চলকে,১৫.২শতাংশ স্কুলচ্যুত ছাত্রছাত্রীকে আর ৮.৮শতাংশ ও ৮.১ শতাংশ গুরুতর রোগী ও বিকলাঙ্গ বা সন্তানবিহীন বৃদ্ধবৃদ্ধাদের সাহায্য করার তত্পরতায় অংশ নিয়েছিলেন ।

    জরীপ থেকে জানা গেছে, যদিও ৮৬.২ শতাংশ নারীর মন খারাপ হতে পারে,তবু তাদের মধ্যে ৭৮শতাংশ নারীর কেবল মাত্র দু-একবার মন খারাপ হয়েছে । মাত্র ৮.২শতাংশ নারীর ঘনঘন মন খারাপ হয় । এর মধ্যে ১২.৮শতাংশের ৬১-৭০ বছর বয়সী বুদ্ধাদের অন্য বয়সী নারীদের চেয়ে সহজে মন খারাপ হয় । তার পর ১০.৮ শতাংশ ২০-৩০বছর বয়সী আর ১০.৩ শতাংশ ৩১-৪০ বছর বয়সী নারী অপেক্ষাকৃত সহজে মন খারাপ হতে পারে ।

    জরীপ থেকে জানা গেছে , ৯১ শতাংশ শহুরে নারী প্রত্যেক দিন মাত্র ৮ ঘন্টার কম সময় ঘুমান ।এদের মধ্যে ৭১.৮ শতাংশ নারী ৬-৮ ঘন্টা আর ১৯。২ শতাংশ নারী ৬ ঘন্টার কম সময় ঘুমান । জরীপ থেকে জানা গেছে,সাধারণভাবে শহুরে নারীদের ঘুমের গুণমান ভাল নয় । মাত্র ১৭শতাংশ নারী মনে করেন যে ,তাদের ঘুম অত্যন্ত ভাল,৫৯.৯ শতাংশ নারীর ঘুম মোটামুটি আর ২৩.২ শতাংশ নারীর প্রায় অনিদ্রা হয় ।

    জরীপ থেকে জানা গেছে,৮৯.৫ শতাংশ স্বামী-স্ত্রীর অভিন্ন শখ আছে । জীবনযাত্রা ও কাজকর্মে যখন অসুবিধার সম্মুখীন হয় তখন ৪৬.৫ শতাংশ নারী স্বামীর কাছে সাহায্যের অনুরোধ জানান ।

    জরীপ থেকে জানা গেছে, ৬২.১ শতাংশ মা সন্তানের জন্যে চিন্তাশীল । বাবামা'র কথা না শুনা ১৭.৮ শতাংশ বাবামা'র চিন্তার প্রথম কারণ । তার পর বাবামা'র সঙ্গে মতবিনিময় করতে অনিচ্ছুক এবং পড়াশুনার ফলাফল ভাল না এমন সমস্যা যথাক্রমে ১৭.১ শতাংশ মা'র চিন্তার প্রধান কারণ ।

    সুখের মাত্রা জীবনযাত্রার গুণমান যাচাই করার এক গুরুত্বপূর্ণ মাপকাঠি । এবারের জরীপ থেকে জানা গেছে , ৬৮.৪ শতাংশ শহুরে নারী , ২৮.৫ শতাংশ নারী আর ৩.১ শতাংশ নারী যথাক্রমে অত্যন্ত সুখী , মাঝারী সুখী ও কম সুখী মনে করেন । বর্তমানে নিজের থাকার অবস্থা সম্পর্কে ১৩.৬ শতাংশ শহুরে নারী অত্যন্ত সন্তুষ্ট ,৩৯.৯ শতাংশ নারী মোটামুটি সন্তুষ্ট, ৩০.৭ শতাংশ নারী তেমন সন্তুষ্ট নন আর ১৫.৮ শতাংশ নারী অসন্তুষ্ট । ছোট আয়তনের আবাস ২৪.৭ শতাংশ নারীর অসন্তোষের প্রথম কারণ ,থাকার ব্যবস্থার অসম্পূর্ণতা ২১.৫ শতাংশ নারীর অসন্তোষের কারণ । আশেপাশের পরিবেশ ১৮.৭ শতাংশ নারীর অসন্তোষের প্রধান কারণ আর নিজের ঘর না থাকা ১২.৬ শতাংশ নারীর অসন্তোষের কারণ । তার পর পুরানো বাড়ি ও নিরাপত্তার অবস্থা যথাক্রমে ১০。৬ শতাংশ আর ৯.৭ শতাংশ নারীর অসন্তোষের প্রধান কারণ ।

    জরীপের পরিসংখ্যানে জানা গেছে ,৬৯.১ শতাংশ নারী ভবিষ্যদ্বানী করেছেন যে,পরবর্তী তিন বছরে তাদের জীবন এখনকার চেয়ে ভাল হবে । মাত্র ২.৩ শতাংশ নারী মনে করেন যে ,তখন তাদের জীবন এখনকার চেয়ে মন্দ হবে ।

    জরীপ থেকে জানা গেছে,শহুরে নারীর মনে উন্নত মানের জীবনযাত্রার যে ৮টি মানদন্ড আছে তা হল এক,সুখের বিবাহ ও সুষম পারিবারিক জীবন,দুই,স্থিতিশীল আয় এবং খাওয়া,পরা ও থাকার নিশ্চয়তাবিধান, তিন,নিজের যোগ্যতা প্রমাণিত করার মতো এক ভাল চাকরি ,চার,সন্তানের সুস্বাস্থ্য,আনন্দ ও সুন্দর ভবিষ্যত,পাঁচ,নিরাপদ ও দূষণমুক্ত পরিবেশ,ছয়,উদার মানসিকতা ,সাত,প্রাণ ও জীবনকে ভালবাসা এবং অন্যান্যদের সাহায্য করতে সক্ষম হওয়া আর আট, সমৃদ্ধিশালী ও শক্তিশালী রাষ্ট্র এবং স্থিতিশীল ও সুষম সমাজ ।