উখোং উড়ে গেলো বৃদ্ধার কাছে । দড়ি ও বালতি চেয়ে নিলো তার কাছ থেকে । সঙ্গে নিলো ভিক্ষু শাকেও । আবার তারা এলো ঝরণার কাছে ।
তাও ঋষি ইচ্ছানন্দ আবারও উপঢৌকন চাইলেন । নইলে ঝরণার পানি দেবেন না তিনি । অতএব আবার যুদ্ধ শুরু হলো । ঐ সুযোগে ভিক্ষু শা পাত্র ভরে ঝরণার পানি নিলো । সে চিত্কার করে তা উখোংকে জানিয়েও দিলো ।
উখোং ইচ্ছানন্দকে এক ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দিলো । তারপর গুরুভাইকে সঙ্গে করে উড়ে এলো বৃদ্ধার বাড়ি । বলে গেলো , তোর আয়ু কয়েকবছর বাড়িয়ে দিলাম ।
পাচিয়ের অবস্থা কাহিল । সে তারম্বরে কাঁদছিল । উখোং তা নিয়ে একটু রসিকতাও করলো । বললো , ওঁয়া ওঁয়া কখন হবে ? পাচিয়ে কেঁদে উঠলো উখোং-এর দিকে তাকিয়ে ।
ঝরণার পানি খেয়ে আচার্য এবং পাচিয়ে সুস্থ হয়ে উঠলো দ্রুত । কেটে গেলো বিপদ । হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো সকলে । বৃদ্ধা জাউ রান্না করে সবা ইকে খেতে দিলেন । পাচিয়ে কুড়ি বাটি জাউ খেলো একাই । যাই হোক , সুস্থ হয়ে পরদিন আবার দলবল সহ আচার্য পশ্চিম দেশের পথে পা বাড়ালেন । যতোই বাধা বিপদ আসুক থেমে থাকার উপায় নেই আচার্যের । ঘোড়ার পিঠে উঠলেন আচার্য । পাচিয়ে ধরলো লাগাম । ভিক্ষু শা কাঁধে নিলো মালপত্র । আর উখোং আগে আগে পথ দেখিয়ে চলতে লাগলো ।
সন্তান দাত্রি নদির তির থেকে প্রায় চার ক্রোশ পথ যাওয়ার পর আচার্যরা পশ্চিম লিয়াং রাজ্যের সিমানায় এসে পৌঁছুলেন । সামনেই পড়লো এক শহর । লোকালয়ের শব্দও পাওয়া গেলো । শহরের নাম , পশ্চিম লিয়াং নারি ভুমি ।
শহরে ঢুকে আচার্য দেখলেন যে কোথাও কোনো পুরুষ নেই । সবাই মেয়ে এবং সুন্দরি । যেনো স্বর্গের দেবি কিন্নরি । সবারই মাথায় খোঁপা আর পরনে বর্ণালি পোশাক । শহরে চারজন অচেনা পুরুষ দেখে প্রথমে তারা সকলে খুব অবাক হলো । তারপর হো হো করে হাসতে লাগলো । পাচিয়ে তার কান নাড়িয়ে ভয় দেখালো ওদের । মেয়েরা পালিয়ে গেলো ছুটে ।
এক মহিলা সরকারি কর্মচারি আচার্যের সামনে এসে বললো , বিনা অনুমতিতে এই শহরে প্রবেশ নিষেধ । আর প্রবেশ করলেও পুরুষ অতিথি শালায় গিয়ে নাম লেখাতে হ বে প্রথমে ।
আতিথিশালায় গেলো সবাই । সেখানে পৌঁছে , দেখা গেলো যে অতিথিশালার কর্মচারিরাও সবাই মহিলা । সেখানে দরজার উপর লেখা আছে , "পুরুষ স্বাগত নিবাস" । এক মহিলা জানালো , সে এই রাজ্যের রানিকে আচার্যদের খবর জানাবে । রাণিই বলবেন যে ছাড়পত্র জমা নেয়া এবং ফেরত দেয়া যাবে কি না ।
রাণি খবর শুনে বললেন , বহু বছর যাবত এ রাজ্যে কোনো ছেলে নেই । এখন সুয়ান চুয়াং এসেছেন , আমি তাঁকে বিয়ে করতে চাই । তাহলে আমাদের সন্তানরা বংমানুক্রমে রাজত্ব করবে ।
রাণির আদেশে এক মহিলা ঘটক নিয়ে কয়েকজন কর্মচারি এলো অতিথিশালায় । তারা রাণির ইচ্ছের কথা জানালো আচার্যকে । আচার্য বললেন , অসম্ভব । আমি সন্যাসি । বিয়ে করা আমার বারণ । কিন্তু তারা নাছোড় বান্দা । কোনো কথাই শুনতে চায় না । তাছাড়া রাণির ইচ্ছে মানেই তো হুকুম । সেটা কেউ অমান্য করতে পারবে না ।
|