v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-04-11 14:02:50    
প্রসব বিমুখতা স্বাস্থ্যের ক্ষতিকারক

cri
    সবার কাছেই সন্তানজন্ম দেয়া এক স্বাভাবিক কাজ এবং প্রত্যেক মায়ের করনীয় কর্তব্য ।কিন্তু বড় শহরে আধুনিক নারীর পক্ষে এ এক কঠিন কাজ , মা হওয়া না হওয়ার প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নেয়া তাদের জন্যে এক কঠিন সমস্যা । এক পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে , প্রসব সমস্যার ব্যাপারে শহুর নারীর ভয় দিনদিন বেড়ে যাচ্ছে , যার ফলে চীনের জন্মহার ইতিমধ্যে ১৯৯০ সালের ২.১০৬ শতাংশ থেকে ২০০১ সালের ১.৩৩৮ শতাংশে নেমেছে, দ্বিগুন আয়ের পরিবার সংখ্যা ছ'-লক্ষে দাঁড়িয়েছে ।

    দেরীতে বাচ্চা নেয়া বা আদৌবাচ্চা না নেয়া নারীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার সংগে সংগে আধুনিক নারীদের গর্ভধারন সংক্রান্তস্বাস্থ্য চ্যালেন্জের সম্মুখীন হচ্ছে । বাস্তব ঘটনা হল, প্রসব বিমুখতা অর্থাত বাচ্চা নিতে অসম্মতি নারীবন্ধুদের স্বাস্থ্যের জন্যে কিছু নেতিবাচক সমস্যা সৃষ্টি করবে ।

    প্রসব না করা বা দেরীতে করা নারীদের স্বাস্থ্যের উপর কি প্রভাব ফেলে ? নারীদের উত্তম প্রসব-কাল কখন ?

    এক, নারীরা অনেক বয়স পর্যন্ত প্রসব করতে পারেন , তবে প্রসবের উত্তম বয়স সীমিত । বয়স বেশী হলে তা প্রসূতীর নিজের আর ভ্রূণের স্বাস্থ্যের জন্যে প্রচ্ছন্ন প্রভাব বয়ে আনবে ।

    নারীর সারা জীবনে ভ্রূণ লালনপালন করার প্রায় এক লক্ষ ডিম উত্পাদিত হতে পারে , এর মধ্যে ৪০০-৫০০টি ডিম পরিপক্ক হয়ে নিঃসরিত হয় । সারা জীবনে এক নারীর ডিম নিঃসরনের সময়কাল প্রায় ৩০ বছর, এই ৩০ বছর ২০-৪০বছর বয়সের মধ্যে কেন্দ্রীভূত হয় ।২৫-৩০বছর বয়স নারীদের প্রসবের উত্তম বয়স বলে মনে করা হয় ।

    শারিরিক দিক থেকে অতি দেরীতে প্রসব করা নারীর স্বাস্থ্যের ক্ষতিকারকআর অতি ছোটো বয়সে প্রসব করলে নারীর অপরিপক্ক স্বাস্থ্যের ক্ষতিসাধনও হতে পারে ।

    সাধারন সময়ে ২৫-৩০ বছর বয়স নারীদের উত্তম প্রসব কাল ।এ বয়সের নারী পরিবার নির্মানকাল অতিক্রম করেছেন, শারিরিক দিক থেকে তাদের সন্তান লালনের পরিপক্ক শর্তসম্পন্ন হয়েছে । এসময়কালে প্রসব করা শুধু সন্তানের স্বাস্থ্যের উপকারী-ই নয় ,প্রসূতীর শরির আগের অবস্থায় ফিরে যেতেও সহায়ক হবে ।

    দুই,নারী ৩৫ বছর বয়সের পর সন্তান প্রসব করা কি কি ধরনের সমস্যা সম্মুখীন হতে পারেন ?

    চিকিত্সাবিদ্যার দিক থেকে ৩৫ বছর বয়সী গর্ভবতীকে উচ্চ-বয়সী গর্ভবতী বলা হয় ।এ সময়ে গর্ভধারন করা বা প্রসব করা কিছু নতুন শারিরিক সমস্যা সম্মুখীন হবে ।

    এসময়ে গর্ভধারনের অনুপাত কমেছে ।২৫ বছর বয়সী নারীর ছমাসে গর্ভধারনের অনুপাত ৬০ শতাংশ,৩০ বছর বয়সের পর এই অনুপাত ৩০শতাংশে নামবে ।২৯ বছর বয়সের আগে গর্ভধারনের অক্ষমতার অনুপাত ১০শতাংশ,৩০বছর বযসের পর এই অনুপাত ১৫শতাংশে বেড়ে যাবে ।তাই উপযুক্ত বয়সে গর্ভধারন ও প্রসব করা উচিত ।

    ৩৫ বছর বয়সের পর নারীরা সহজে কিছু ক্রনিক রোগে আক্রান্ত হতে পারেন ।তাদের গর্ভধারনের আর প্রসব করার জটিলতার অনুপাত বেড়ে যাবে , তাছাড়া বিকৃত-ভ্রূণের অনুপাতও বেড়ে যাবে ।

    তিন , প্রসববিমুখতানারীদের স্বাস্থ্যের উপর কি কি প্রভাব বিস্তার করতে পারবে ?

সারা জীবনে গর্ভধারণ থেকে প্রসব করা পর্যন্ত এক পূর্নাংগ প্রসব-প্রক্রিয়া অতিক্রম করলে নারীরা ১০ বছরের রোগ প্রতিরোধের শক্তি পেতে পারেন ।পক্ষান্তরে প্রসব বিমুখ নারীরা নিজেদের রোগ প্রতিরোধ-শক্তি বেড়ে যাওয়ার সুযোগ হারাতে পারেন ।

    এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা কি কি পরামর্শ দেবে ?

    বিশেষজ্ঞরা বলেছেন , নানা কারনে নারীরা যে প্রসব বিরোধী অধিষ্ঠান বেছে নিয়েছেন তার অর্থ এই নয় যে তারা স্বাস্থ্য উপভোগ করার অধিকার হারায় ।কখনো প্রসব করেন নি এমন নারীদের উচিত নিদিষ্ট সময়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও প্রতিরোধ করার উপর গুরুত্ব দেয়া ।৩৫বছর বয়সের পর নারীদের উচিত বছরে একবার করে সার্বিকভাবেস্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে গিয়ে পরীক্ষা করানো ।৪৫ বছর বয়সের পর নারীদের উচিত বছরে একবার করে নিয়মিত শারিরিক পরীক্ষা ছাড়া রক্তের হরমোনের মান পরীক্ষা করা যাতে সব সময়ে হরমোনের মান জানা যায় ।

    তাছাড়া নারীদের উচিত তিনমাসে একবার করে স্তন পরীক্ষা করা যাতে যথাশীঘ্রই স্তনের অস্বাভাবিক পরিবর্তন টের পাওয়া যায় ।

    চার,উচ্চ-বয়সী গর্ভবতীর স্বাস্থ্য রক্ষা ও পুনর্বিন্যাস । নানা কারণে নারীদের উচ্চ বয়সে গর্ভধারণ করতে হলে উত্তেজিত হওয়ার কারণ নেই ।নিজের স্বাস্থ্যরক্ষা আর পুনর্সিন্যাসকেগুরুত্ব দিলে তাদের প্রসব স্বাভাবিক হতে পারে । গর্ভধারণকালে উচ্চ বয়সী গর্ভবতীদের নিয়মিতভাবে হাসপাতালে পরীক্ষা করতেএবং ধাপেধাপে পরীক্ষার সময় মাসে একবার থেকে আধা মাসে এক বারে কমাতে হবে, বিশেষ করে রক্তের চাপ ও প্রস্রাব পরীক্ষাকে গুরুত্ব দেয়া উচিত ।গর্ভধারনের তৃতীয় মাস থেকে শুরু করে সপ্তাহে একবার করে পরীক্ষা করলে ভাল ।প্রসবকাল ঘনিয়ে আসার আগে সাধারন গর্ভবতীদের চেয়ে উচ্চবয়সী গর্ভবতীদের কিছু দিন আগে হাসপাতালে ভতি হওয়া উচিত ।যাতে চিকিত্সকের বিশেষ সাহায্য পাওয়া যায় এবং আকস্মিক ঘটনার ঘটন প্রতিরোধ করা যায়।তাছাড়া উচ্চ বয়সী গর্ভবতীদের উচিত উপযুক্তভাবে শরিরচর্চাকরা ,যেমন হেটে হেটে বেড়িয়ে যাওয়া আর সাধ্যমতো পারিবারিক কাজ করা ।

    এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা কি কি পরামর্শ দিতে পারেন ?

    বিশেষজ্ঞরা বলেছেন ,সর্বপ্রথমে উচ্চ বয়সী প্রসূতীরা যে সমস্যার সম্মুখীন হবেন তাহল কিভাবে উত্তেজনা থেকে সৃষ্ট চাপ দূর করা যায় ।মনের গভীর দিক থেকে গর্ভধারন হওয়ার এই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া গ্রহন করতে শিখতে হবে ।তাছাড়া সক্রিয়ভাবে প্রসব আগের প্রস্তুতি নিলে ও উপযুক্তভাবে শরিরচর্চা করলে উচ্চ-বয়সী প্রসুতীরাও স্বাস্থ্যবান সন্তানের আগমন জানাতে পারেন ।চীনা প্রসূতীদের তুলনায় বিদেশী প্রসূতীরা সক্রিয়ভাবে প্রসবের আগের প্রস্তুতি নিতে সক্ষম দেখে বিশেষজ্ঞরা প্রস্তাব করেন যে ,গর্ভধারণকালে নারীরা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিমূলক শরিরচর্চাকরতে পারেন ।

    অনেক সময়ে আমরা সরল ও সহজ এমন ব্যাপার জটিল করে তুলেছি বলে মনের উপর ভারী বোঝা সৃষ্টি হয় । আসলে নারীর পক্ষে প্রসব করা যেমন এক স্বাভাবিক জীবনী প্রক্রিয়া তেমনি নারীদের সারা জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান অভিজ্ঞতা । ব্যাপারটা ভাল করে বুঝে নেয়ার পর আপনি উপলব্ধি করতে পারবেন যে , প্রসব সমস্যা কোনো অনতিক্রম্যকঠিন বাধা নয়, এটা আপনাকে যেমন মনের দিকে তেমনি শারিরিক দিকে পরিপক্ক হওয়ার এক মূল্যবান অভিজ্ঞতা দিয়েছে ।