v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-03-29 15:53:07    
জাপান আইন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ করে উত্পাদনের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেছে

cri
    অনেক বছর ধরে জাপান সরকার অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আইন প্রণয়ন ও সস্পূর্ণ করে, ধারাবাহিক নিরাপত্তা নীতি ও ব্যবস্থা অবলম্বন করে উত্পাদনের দুর্ঘটনা বিরাট মাত্রায় কমিয়েছে। নিরাপদ উত্পাদনের ক্ষেত্রে জাপান বিশ্বের প্রথম সারিতে দাঁড়িয়েছে।

    বিংশ শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকের পর অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে জাপানের উত্পাদনজনিত দুর্ঘটনা লক্ষণীয়ভাবে বেড়েছে। উত্পাদনে দুর্ঘটনায় হতাহত শ্রমিকদের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। ১৯৬১ সালে জাপানের বিভিন্ন দুর্ঘটনায় নিহতদের সংখ্যা ৬৭১২ জনে দাঁড়িয়েছিল। এই অবস্থা উন্নত করার জন্য জাপান সরকার "শ্রমের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত আইন", "খনির নিরাপত্তা আইন" এবং "শ্রম দুর্ঘটনা প্রতিরোধ আইন" ইত্যাদি আইন ও নিয়ম প্রণয়ন করেছে। সম্পূর্ণআইন ও যথাযোগ্য ব্যবস্থা থাকা এবং বিভিন্ন পক্ষের গুরুত্বদানের সুবাদে জাপানের উত্পাদনের নিরাপত্তা সমস্যা মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। ২০০৩ সালে শিল্প ও খনিতে নিহতদের সংখ্যা শুধু ৩০৭ জন ছিলো।

    "শ্রমের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত আইন" অনুযায়ী, স্বাধীনভাবে উত্পাদন তত্পরতার নিয়োজিত সকল শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে নিরাপদ উত্পাদন ব্যবস্থা চালু করতে হবে এবং কিছু শ্রম নিরাপত্তার কাজ দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের নিয়োগ করতে হবে। বিভিন্ন কর্মশালা ও গ্রুপে নিজেদের নিরাপত্তা কর্মীদের রাখতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে ৫০জনেরও বেশী যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কর্মচারী ও শ্রমিক রয়েছে, সেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান নিজেদের ডাক্তার থাকতে হবে। তারা শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও কর্ম পরিবেশের প্রতি দায়ী থাকেন এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং দুর্ঘটনা এড়িয়ে যাওযার প্রস্তাব দেন।

    "খনি নিরাপত্তা আইন" অনুযায়ী খনিতে কুয়ো-প্রলয়, পানি আকস্মিক নির্গমন, গ্যাস বিস্ফোরণ ও অগ্নিকান্ড ইত্যাদি দুর্ঘটনা এড়ানো হচ্ছে খনির মালিকদের দায়িত্ব। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে খনির মালিকদের অবিলম্বে কার্যকর উদ্ধার তত্পরতা চালাতে হবে। এই আইন প্রণয়নের পর কয়েকবার সংশোধন করা হয়েছে। তা জাপানের নিরাপদ উত্পাদনের একটি কার্যকর ব্যবস্থায় পরিণত হয়েছে।

    জাপানে খনিতে কাজ করার সময়ে একটি নিয়ম মেনে নিতে হবে, তা হলো নিরাপত্তা প্রথম তারপর উত্পাদন। জাপানের খনি কোম্পানি নিরাপত্তার কাজে বেশী ব্যয় করেছে বলে জাপানের খনিতে নিরাপত্তা ও জরুরী ব্যবস্থা নির্ভরযোগ্য এবং কার্যকর। প্রতি তিন মাসে জাপানের খনিতে অপসারণের মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। কোনো দুর্ঘটনা হলে কিভাবে পালিয়ে যাওয়া যায় বা নিজেকে রক্ষা করা যায়, তা নিয়ে মহড়া করা হয়। ভূমির নিচে জরুরী ব্যবস্থায় সব সময় দরকারি যন্ত্রপাতি ও খাদ্য ইত্যাদি জিনিষ আছে। যদিও দুর্ঘটনা ঘটে এগুলো ব্যবস্থার মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি সবচেয়ে নিম্ন করা যায়। ২০০৩ সালে জাপানে শুধু ১৪জন খনি শ্রমিক মারা গেছেন।

    আইন ব্যবস্থা স্থাপনের চেয়ে আরো গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো, একটি শক্তিশালী নিরাপত্তা তত্ত্বাবধান দল গঠন করা। "খনি নিরাপত্তা আইন" অনুসারে জাপান একটি স্বাধীন খনি নিরাপত্তা তত্ত্বাবধান ব্যবস্থা স্থাপন করেছে। তত্ত্বাবধান কর্মীরা কঠোরভাবে সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থার অবস্থা এবং জরুরী ব্যবস্থা ইত্যাদি নিয়মিত পরীক্ষা করেন এবং সমস্যা দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো সমাধান করে।

    উল্লেখ্য, জাপানের তত্ত্বাবধান সংস্থা নিরাপত্তার অগ্রিম-ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়া-ব্যবস্থাপনার উপর গুরুত্ব দেয়। দুর্ঘটনা ঘটার পর তদন্ত করা ও দায় স্বীকার করা নয়, আগে ভাগে নানা রকম দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হয় এবং দুর্ঘটনার আশংকা দূর করা হয়। তাই জাপানে কোনো প্রকল্প চালু হওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট পরিকল্পনা সরকারের নিরাপত্তা তত্ত্বাবধান বিভাগের কাছে দাখিল করতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় সরকারী নিরাপত্তা তত্ত্বাবধান বিভাগের কর্মীদের কর্মস্থানে থাকতে হবে। তাতে দুর্ঘটনা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক খানি কমে গেছে।

    জাপানে "কেন্দ্রীয় শ্রম নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য কমিটি" স্থাপিত হয়। এই কমিটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকরীকরণের অবস্থা পরীক্ষা করে এবং শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব নিতে ত্বরান্বিত করে। তাছাড়া, "শ্রম দুর্ঘটনা প্রতিরোধ আইন" অনুযায়ী, জাপান "কেন্দ্রীয় শ্রম কাজকর্মের দুর্ঘটনা বিরোধী সমিতি" গঠন করেছে। এই সমিতির কাজ হলো নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য যুগিয়ে দেয়া, নিরাপদ উত্পাদনের শিক্ষা দেয়া এবং এ ক্ষেত্রের আদানপ্রদান চালানো।