v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-03-22 17:59:51    
মার্কিন-ভারত পরমাণু শক্তি সহযোগিতার কুফল

cri
 পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খুর্শিদ মেহমুদ কাসুরি ২১ মার্চ পাকিস্তানের সেনেটে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে স্বাক্ষরিত বেসামরিক পরমাণু শক্তি সংক্রান্ত সহযোগিতা চুক্তি প্রসঙ্গে মন্তব্য করার সময় পুনরায় ঘোষণা করেছেন, পাকিস্তান যে কোন বৈষম্যমূলক চুক্তির বিরোধীতা করে। পাকিস্তান বেসামরিক পরমাণু প্রযুক্তি অর্জনের জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালাবে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই থেকে আবার প্রমাণিত হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র আর ভারতের মধ্যে স্বাক্ষরিত বেসামরিক পরমাণু শক্তি চুক্তি সম্পর্কে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া আপাতত দেখা দিয়েছে, এবং এর অপ্রত্যাশিত পরিণাম সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

 প্রথমতঃ, আন্তর্জাতিক পারমাণবিক অবিস্তার ব্যবস্থার প্রভাব এবং ফলপ্রসূতা মার্কিন-ভারত বেসামরিক পরমাণু শক্তির সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরের কারণে অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবে । বহু বছর ধরে পরমাণু অস্ত্রের বিস্তার রোধে আন্তর্জাতিক সমাজের প্রয়াস গুরুতরভাবে প্রভাবিত হবে। সবাই জানেন, ভারত সর্বদাই (পারমাণবিক অস্ত্রের অবিস্তার চুক্তি) স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করে। ১৯৯৮ সালে ভারত পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর করার পর নিরাপত্তা পরিষদের এক সিদ্ধান্তে তাকে নিন্দা করেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্র এক দিকে ইরান আর উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক পরিকল্পনার উপর চাপ সৃষ্টি করছে, অন্য দিকে ভারতকে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে। পারমাণবিক সমস্যায় যুক্তরাষ্ট্র যে দ্বিবিধ মানদণ্ড অনুসরণ করে পরমাণু অস্ত্রের অবিস্তার চুক্তি বহির্ভূত ভারতের আন্তর্জাতিক ভেঙ্গে দিয়ে বিশ্বের বড় পরমাণূ অস্ত্রধারী দেশের মর্যাদা ও স্বার্থ অর্জনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুচনার কাজ করেছে, এর সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক সমাজের পারমাণবিক অস্ত্র অবিস্তার রোধের প্রয়াসে এক গুরুতর গোপন ঝামেলা সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাসুরি সংবাদদাতাকে বলেছেন, মার্কিন-ভারত চুক্তি বাস্তবায়িত হলে গোটা (পারমাণবিক অস্ত্র অবিস্তার চুক্তি) ভেঙ্গে যাবে, তখন পরমাণু অস্ত্রের বিস্তার শুধু সময়ের ব্যাপার হবে। এর আগে, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বিবৃতি প্রকাশ করে উল্লেখ করেছে যে, এই মার্কিন-ভারত চুক্তি দক্ষিণ এশিয় অঞ্চলের স্থিতিশীলতার উপর প্রভাব ফেলবে।

 দ্বিতীয়ত, মার্কিন-ভারত পরমাণু চুক্তির স্বাক্ষর মানেই যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া নীতির গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন। এই চুক্তি অনুযায়ী, ভারতের ২২টি পারমাণবিক রিঅ্যাকটরের মধ্যে মাত্র ১৪টি আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে থাকবে, তার সামরিক পারমাণবিক সাজসরঞ্জাম এবং সবচেয়ে স্পর্শকাতর ফাস্ট ব্রীড রিঅ্যাকটর আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানের বাইরে থাকবে। এর পর নতুন নির্মিত পারমাণবিক রিঅ্যাকটরগুলোও সামরিক বেসামরিক হবে, ভারত নিজেই তা নির্ধারণ করবে। যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে সীমাহীন পারমাণবিক জ্বালানি সরবরাহ করবে।

 পাকিস্তানের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের আচরণ ভারতকে সীমাহীনভাবে পারমাণবিক অস্ত্র পরিকল্পনা উন্নয়নে উত্সাহ দেবে।

 তৃতীয়ত, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া নীতির পরিবর্তন তার সন্ত্রাস দমনের লক্ষ্য বাস্তবায়নেরও প্রতিকূল হবে। দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতার মূল সমস্যা হচ্ছে অমীমাংসিত কাশ্মীর সমস্যা। ২০০৪ সালে পাক-ভারত সার্বিক সংলাপ প্রক্রিয়া শুরু হবার পর দু'দেশের সম্পর্ক প্রশমনের দিকে কিছুটা অগ্রগতি লাভ করলেও কাশ্মীর সমস্যায় দু'পক্ষের মতভেদ এখনো বিদ্যমান । ভারতের সঙ্গে পরমাণু শক্তি সহযোগিতার প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের স্বজনপ্রীতি জটিল কাশ্মীর সমস্যার সমাধানে নতুন অনিশ্চয়তার উপাদান বয়ে এনেছে। এই উপাদান কাশ্মীর সমস্যার সমাধানের বিপরীত দিকে গেলে নিঃসন্দেহে পাকিস্তান সরকারকে বহু ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীন চাপ মোকাবিলা করতে হবে। সন্ত্রাস দমনের প্রথম সারির সহযোগী পাকিস্তানের অভ্যন্তরীন পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাস দমনের লক্ষ্য বাস্তবায়ন আরো কঠিন হবে।