বেলারুসের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান লিদিয়া এর্মোশেনা স্থানীয় সময় ২০ মার্চ ভোরে ঘোষণা করেছেন, ১৯ মার্চের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট লুকাশেনকো৮২.৬ শতকরা ভোট পেয়ে বিজয় লাভ করেছেন। তিনি একটানা তৃতীয় বার বেলারুসের প্রেসিডেন্ট পদে বহাল থাকবেন।
১৯৫৪ সালের ৩০ আগস্ট লুকাশেনকো বেলারুসের ভিজেপুস্ক অংগরাজ্যের একটি কৃষক পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। বেলারুস জাতির নাগরিক লুকাশেনকো মোজেলিওভ নর্মাল ইউনিভার্সিটি এবং কৃষি বিজ্ঞান একাডেমি থেকে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেছেন। ১৯৭৯ সালে তিনি সোভিয়েট ইউনিয়ন কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন।
তিনি শিক্ষক ছিলেন। তারপর দুবার সোভিয়েট ইউনিয়নের সামরিক বাহিনীতে কাজ করেছিলেন। এর পরে দীর্ষ সময় ধরে তিনি কৃষি কাজে নেতৃত্ব দেন।
১৯৯০ সালে লুকাশেনকো বেলারুসের সর্বোচ্চ সোভিয়েটের গণ-প্রতিনিধি নির্বাচিত হন। ১৯৯৩ সালের জুলাই মাসে তিনি সর্বোচ্চ সোভিয়েটের দুর্নীতি দমন বিষয়ক অস্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। ১৯৯৪ সালের মার্চ মাসে বেলারুসে নতুন গৃহীত সংবিধানে প্রেসিডেন্ট ব্যবস্থা চালু হয়। একই বছরের জুলাই মাসে লুকাশেনকো৮০.১ শতংশ ভোট পেয়ে বেলারুসের প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। কার্যমেয়াদ ছিলো ৫ বছর। ১৯৯৬ সালের নভেম্বর মাসে, বেলারুস আয়োজিত গণ-ভোটে তাঁর প্রেসিডেন্টের কার্যমেয়াদ আরও দু বছর অর্থাত্ ২০০১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়া হয়। ২০০১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর লুকাশেনকো প্রেসিডেন্ট পুনঃনির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি বেলারুসের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক, এবং নিরাপত্তা সম্মেলন ও জাতীয় অলিম্পিক কমিটির চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত আছেন।
লুকাশেনকোর ক্ষমতাসীন থাকার একযূগে বেলারুসের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে এবং অর্থনীতি ও সমাজের নিরন্তর উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। মানুষের জীবনযাত্রার মান অব্যাহতভাবে উন্নত হয়। ১৯৯৫ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত বেলারুসের জি ডি পি গড়পড়তা ৭ শতাংশ হারে বেড়েছে। ২০০৫ সালে এর বৃদ্ধিহার ছিল ৯.২ শতাংশ। এর সঙ্গে সঙ্গে কমনওয়েলথের সদস্যদেশগুলো ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে বেলারুসের নিবন্ধিত কর্মচ্যুতির হার সর্বনিম্ন। চলতি বছরের ১ জানুয়ারী তার নিবন্ধিত কর্মচ্যুতির হার ছিল মাত্র ১.৫ শতাংশ।
দীর্ঘমেয়াদে লুকাশেনকোস্বাধীন ও কার্যকর পররাষ্ট্র নীতি অনুসরণ করেন। প্রাক্তন সোভিয়েট ইউনিয়নভূক্ত দেশগুলোর সঙ্গে বিশেষ করে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা ও জোরদার করা তাঁর পররাষ্ট্রনীতির গুরুত্বপূর্ণ দিক। এর সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গেও তিনি সম্পর্ক উন্নয়নের প্রয়াস চালান।
লুকাশেনকো খেলাধূলো খুব পছন্দ করেন, বিশেষ করে আইস হকি। ১৯৭৫ সালে তিনি বিয়ে করেন এবং তিনি দুই পূত্রসন্তানের বাবা।
|