v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-03-16 10:02:38    
পেইচিংএর শতাধিক বছরের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন খাবার

cri
    চীনের খাবার বিশ্ব বিখ্যাত। বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ধরনের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন খাবার আছে। রাজধানী পেইচিংএর পিকিং রোস্ট ডাক হয়তো আপনাদের কাছে অপরিচিত নয়। দেশী-বিদেশী পযর্টকরা পেইচিং ভ্রমণ করতে আসলে অবশ্যই পিকিং ডাক আস্বাদন করবেন। পিকিং ডাক এখন পেইচিংএর স্থানীয় খারাবের একটি প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু পিকিং ডাক ছাড়া পেইচিংএ আরও অনেক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন খাবার আছে। অনেক খাবারের ইতিহাস শতাধিক বছরের। সুতরাং মনে রাখতে হবে যে পিকিং ডাক বেকল পেইচিংএর স্থানীয় বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন খাবার নয়। বন্ধুরা, আজকের এই আসরে আপনাদের পেইচিংএর গলিগুলোতে বেড়াতে নিয়ে যাচ্ছি। এ সব গলিতে আপনারা শতাধিক বছরের ইতিহাসসম্পন্ন স্থানীয় খাবার আস্বাদন করতে পারবেন। আপনারা সশরীরে পেইচিংএর স্থানীয় বৈশিষ্ট্যসম্পন্নখাবার উপভোগ করতে পারবেন।

    পেইচিংএর স্থানীয় খাবার বলতে গেছে প্রথমে পেইচিংএর ' বাওডুয় ' নামে এক বিশিষ্ট খাবার সম্বন্ধে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি। এই খাবারের উপাদান হল গরু আর ঘাসির পাকস্থলী। এ সব পাকস্থলী টুকরো টুকরো কেটে পানিতে সেদ্ধ করা হয়। এই খাবার তৈরীর প্রক্রিয়ায় টাটকা উপাদান ছাড়া কাটার পদ্ধতি এবং পানিতে সেদ্ধের সময়ও খুব গুরুত্বপূর্ণ। পানিতে বেশি সময় হলে এটা নরম হবে , আবার পানিতে অল্প সময় হলে খেতে কাঁচা লাগে।

    ' বাওডু ফেন' হল পেইচিংএর একটি শতাধিক বছররের রেস্তোরাঁ। এই রেস্তোরাঁর ' আওডুর' খুব সুনাম আছে। এই রেস্তোরাঁ পেইচিং ছিমেনের নিটকবর্তী একটি গলিতে অবস্থিত । রেস্তোরাঁর মালিক মিস্টার ফেনের বয়স সত্তরাধিক বছর। শতাধিক বছর আগে তাঁর দাদা এই রেস্তোরাঁচালাতে শুরু করেন। এই রেস্তোরাঁর বাওডুএর উপাদান টাটকা। খেতে কোনো দুর্গন্ধ নেই। সুতরাং ছোট হলেও সারা বছর এই রেস্তোরাঁর ব্যবসা জমসমাট। মিষ্টার ফেন ব্যাখ্যা করে বলেছেন, বাওডু খাওয়ার সময় সৈবীন, ভিনিগার, তিলের তেল ইত্যাদি উপাদান মিশিয়ে দিতে হবে। তবু তাঁর রেস্তোরাঁতে আরও বেশী উপাদান আছে। এগুলো উপাদান কেবল তাঁর রেস্তোরাঁতে আছে ।অন্য যে কোন রেস্তোরাতে পাওয়া যায় না। তিনি বলেছেন,

    এ সব উপাদান আমার রেস্তোরাঁর গোপনীয় জিনিস। আসলে এই খাবারের উপাদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতিথিরা আমার এই রেস্তোরাঁতে এক বার বাওডুর স্যুপ খেলে তাহলে তারা বারবার খেতে আসতে চান। কারন আমার রেস্তোরাঁর বাওডুর স্বাদু অন্য যে কোন রেস্তোরাঁর চাইতে ভিন্ন।

    তা ছাড়া, যদি অতিথিরা এই খাবার বানাতে চান, তাহলে তাঁর রেস্তোরাঁতে মিস্টার ফেনের পরিচালনায় বাওডু বানাতে পারেন। নিজের হাতে তৈরী বাওডু খেললে খুব মজা লাগে। এই বাওডু খাওয়ার পর , আপনাদের পেইচিংএর এক ধরনের মিষ্টি খেতে নিয়ে যাবো। ছিস হল পেইচিংএর আরেকটি ঐতিহ্যিক খাবার।কিন্তু বিদেশের ছিসের তুলনায় এই ছিস খেতে খুব একটা ধুইয়ের মতো লাগে। পেইচিং শহরের একটি পুরাতন রেস্তোরাঁ আছে যেখানের তৈরী ছিস সুবিখ্যাত। এই রেস্তোরাঁর মালিক , ৭৩ বছর বয়সী মিষ্টার ওয়ে কুওয়াং লো ব্যাখ্যা করে বলেছেন, এই ছিস এক সময় রাজ প্রাসাদের খাবার ছিল। রাজা সহ রাজ প্রাসাদের লোকেরা এই খাবার খেতে খুব পছন্দ করতেন। তিনি বললেন.আমার দাদা রাজার বাবুর্চি ছিলেন। সেখানে তাঁর একজন বন্ধু ছিলেন। তখন আমার পরিবারের অবস্থা ভাল ছিল না। আমার দাদার বন্ধু দাদাকে বললেন, পরিবার চালানোর জন্যে তিনি দাদাকে ছিস বানানোর পদ্ধতি শিখিয়ে দেবেন। পরে আমার দাদা এই ভদ্র লোকের কাছ থেকে ছিস তৈরীর পদ্ধতি শিখেছেন। পর আমার দাদা ছিস তৈরীর ব্যবসা শুরু করেন।

    মিষ্টার ওয়ে ব্যাখ্যা করে বললেন, টাটকা দুধ এই খাবারের প্রধান কাঁচা জিনিস। ভিতরে একটু ঘরের তৈরী মিষ্টি মদ মিশিয়ে এক ঘন্টার কাছাকাছি সময় coal scuttle তে সেকা করা হয়। সবশেষে ফ্রেজেরেটে রাখতে হবে। দুধ আর মিষ্টি মদের সুগন্ধ মিশিয়ে খেতে খুব ভাল লাগে। বানানোর সময় যদি শুকানো আঙ্গু এই ছিসের সঙ্গে মিশ্র করা হয় তাহলে আরও সুস্বাদ্ধ । দীঘর্কাল ধরে তাঁর পরিবারের তৈরী ছিস পেইচিংএ খুব বিখ্যাত। তখন পেইচিংএর হামরাচোমরা মিয়মিত তাঁর পরিবারের তৈরী এই বিশেষ ছিস খেতে আসতেন। চীনের চূড়ান্ত রাজা ফুই আর তাঁর ছোট ভাই ফিজি তাঁর দোকানের নিয়মিত অতিথি ছিলেন। এক জন জার্মানী বন্ধু এই ছিস খাওয়ার পর স্বদেশে ফিরে যাওয়ার পরই মাঝেমাঝে এই খাবার তাঁর মনে পড়ে। জার্মিনী থেকে মিস্টার ওয়ে কুওয়াং লের কাছে পাঠানো চিঠিতে এই খাবারের খুব প্রশংসা করেন।

    বাওডু আর ছিস খাওয়ার পর, এখন পেইচিংএর আরেকটি ঐতিহ্যিক পানীয়---ডিজিয়ে অথবা এক ধরনের বিশেষ শীমের রস। যদি আপনি প্রথম বার এই সীমের রস খান তাহলে আপনার সাহস থাকতে হবে। কারণ এই রসের স্বাদ একটু অন্য রকমের । তবে পেইচিংবাসীরা এই রস খাওয়ার এক ধরনের উপভোগ মনে করেন। মিস্টার হুওয়াং রি মিন ব্যাখ্যা করে বলেছেন, তাঁর পরিবারের লোক এই সীমের রস খেতে খুব পছন্দ করে। তিনি বলেছেন,হয়তো এটাও একটি অভ্যস। ছোটবেলা থেকে আমি এই রস খেতে পছন্দ করি। এই পানীয় জিনিস মানুষের পাকস্থলীর জন্য ভাল। গ্রীষ্মকালে এই পানীয় খেলে শরীরের জন্যে উপকার হয়।

    এই কথা স্বীকার না করা উপায় নেই যে, আজকাল আস্তে আস্তে কম লোক এই পানীয় জিনিস খায়। তবে লোকেরা এই চিনছিন ডোজি দোকানের ডোজি খেতে পছন্দ করেন। মাঝে মাঝে খুব রাতে লোকেরা এখানে এই ডোজি খেতে আসেন।

    এগুলো খাবার ছাড়া, পেইচিংএ আরও কয়েকটি বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন খাবার আছে। যেমন বফর আর চিনি দিয়ে তৈরী এক ধরনের খাবার । এক কথায় যারা পেইচিং ভ্রমণ করতে আসে তারা সবাই পেইচিংএর ঐতিহ্যিক খাবার খেতে পছন্দ করেন। বন্ধুরা, ২০০৮ সালে পেইচিং ওলিম্পিক গেমস দেখতে আসলে পেইচিংএর এ সব ঐতিহ্যিক খাবার আস্বাদন করতে ভুলবেন না। এগুলো খাবার পেইচিংএর ওয়াংফুচিন, ছিয়েমেন প্রভৃতি বাণিজ্য কেন্দ্রে পাওয়া যায়। তা ছাড়া, যারা মসলমান তারা মসলিম অধ্যুষিত নিউ চেইতে অবথা নিউচিই সড়কে মসলিম খাবার খেতে পারেন।