মাঝ-বয়সী নারীদের দায়িত্ব অনেক বেশী । কারণ তাদের উপরে প্রবীণ বাবা মা আর নীচে সন্তান-সন্ততি আছে । তাদের একদিকে চাকরি , অন্যদিকে পারিবারিক জীবনযাপন , কিন্তু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও শারিরীক অবস্থা দুর্বল হয়ে যাচ্ছে ,তাদের হয়তো কোনো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশংকাও আছে । সুতরাং মাঝ-বয়সী নারীরা স্বাস্থ্য রক্ষার কয়েকটি কৌশল রপ্ত করলে তা তাদের মনো-দৈহিক সুস্বাস্থ্যের জন্য কল্যানকর।
এক, শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ান আর জীবনের আনন্দ অন্বেষণ করুন । বৈজ্ঞানিক গবেষনার ফলাফল অনুযায়ী , হাসি খুশির সময়ে মানুষের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে সমন্বিত আলোড়ন সৃষ্টি করা যায় আর স্নায়ু এক ধরনের উত্তেজিত অবস্থায় থাকে । স্নায়ুর সমন্বয়ের ভুমিকার মাধ্যমে সুস্বাস্থ্যের জন্য অনুকুল হরমোন সৃষ্টি করা যায় । হাসি দিয়ে মনের দুঃখের অনুভূতি দূর করা যায় এবং তা মুখ , গলা , পিঠ , বুক আর পেটের মাংসপেশীর সংকোচন ও শিথিলতা , শ্বাস-প্রশ্বাসের কার্যকরীতা বাড়ানোর অনুকুল । এর ফলে মানুষ আরো বেশি অক্সিজেন গ্রহণ নিতে পারে । মাংসপেশী আরো বেশি রক্ত ও অক্সিজেনের সরবরাহ পায় ।
দুই, মস্তিষ্কের বুড়িয়ে যাবার গতি মন্থর করার জন্য নতুন জ্ঞান শিখুনঃ নতুন জ্ঞান অর্জন করলে মস্তিষ্কের জীবকোষকে নিরন্তর তেজিয়ান করে দেয়া যায় , যাতে মানুষের চিন্তা ভাবনা সক্রিয় হয় এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেয়া যায় । এটা মস্তিষ্কের সংকোচন প্রতিরোধ আর মস্তিষ্কের বুড়িয়ে যাবার গতি মন্থর করার অনুকূল ।
তিন, মানসিক স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য নানা সখ ও আমোদ প্রমোদ চর্চা করুণঃ মানুষের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের সঙ্গে মানসিক তত্পরতা ঘনিষ্ঠ সম্পর্কিত । সংগীত শারীরিক ও মানসিক কার্যকরীতা স্থিতিশীল করা , মনকে মান্তনাদেয়া আর বিবিধ হরমোন সৃষ্টির জন্য ভারসাম্য বজায় রাখার ভুমিকা পালন করে । নৃত্য , চিত্রাঙ্কন , লিপিকলা , ডাক টিকিট সংগ্রহ , খবরের কাগজ পড়াও একই ধরনের ভুমিকা পালন করতে পারে ।
চার, মাঝ-বয়সে বেশি খাবার না খাওয়া উচিত । এই বয়সে খাবার নিয়ন্ত্রণ করা দরকার , ওস্টিওপোরোসিস্ প্রতিরোধ করা আর বেশি ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডিযুক্ত খাদ্য দ্রব্য খাওয়া প্রয়োজন । যেমন মাছের তেল , ডিমের পীতাংশ, দুধ , চর্বিহীণ মাংস , হাঁস-মুর্গি , ফল ইত্যাদি । তা ছাড়া মাঝে মাঝে রোদ পোহানোও প্রয়োজন , যাতে প্রচুর সূর্যালোক গ্রহণ করা যায় ।
পাঁচ, পর্যাপ্ত নিদ্রা আর মুখের উপযুক্ত প্রসাধন প্রয়োজন । পর্যাপ্ত নিদ্রায় যেমন ক্লান্তি দূর হয় আর প্রাণ শক্তি সৃষ্টি করা যায় , তেমনি রোগ প্রতিরোধের শক্তিও জোরদার করা যায় । নিদ্রা কম হলে দেহের রোগ প্রতিরোধ শক্তি হ্রাস পাবে এবং ক্যান্সার আর হৃতপিন্ড ও মস্তিষ্কের রক্তশীলা রোগের আশংকাও বৃদ্ধি পাবে । মাঝ- বয়সে মুখে বুড়ো হবার লক্ষণ দেখা যায় । তখন মুখের উপযুক্ত প্রসাধন ব্যবহার করা হলে আপনার সৌন্দর্য আর যৌবন দেখা দেবে ।
ছয়, মূত্রাশয়ের পুষ্টি পূরণের জন্য খাওয়া দাওয়ার পুষ্টির উপর মনোযোগ দেয়া উচিত্ । মাঝ বয়সে মূত্রাশয়ের পুষ্টি পূরণের উপর গুরুত্ব দেয়া উচিত । এটা যেমন সুস্বাস্থ্য , তেমনি মুখের সৌন্দর্যের জন্য উপকারী ।
সাত, সুস্বাস্থ্যের জন্য শরীর চর্চায় অটল থাকুন । শরীর চর্চায় রক্ত-সঞ্চালন তরান্বিত করা যায় , হৃত্পিন্ড , ফুসফুস ও মস্তিষ্কের কার্যকরীতা উন্নত করা যায় , অতিরিক্ত চর্বি দূর করা যায় , ম্যাটাবলিজম্ দ্রুত করা যায় , যাতে দেহে প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত রক্ত পাওয়া যাবে , অক্সিজেন প্রচুর সরবরাহের দরুণ যৌবন স্ফুর্তিপূর্ণ হয়ে উঠবে এবং সুস্বাস্থ্য গড়ে উঠবে ।
তা ছাড়া মাঝ-বয়সী নারীদের উচিত উপযুক্ত পানি পান করা , সময়োচিতভাবে মল ত্যাগ করা , চোখ অতিরিক্ত ব্যবহার না করা , বাসী খাবার না খাওয়া আর মদ ও ধূমপান -মুক্ত জীবন-যাপনের উপরও গুরুত্ব দেয়া ।
|