v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-03-01 13:48:41    
পেইচিংয়ের বিভিন্ন দেশের বৈশিষ্ট্যময় খাবারের রেস্তোঁরা

cri
    পেইচিং চীনের রাজধানী আর রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র । পেইচিংয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের খাবার পাওয়া যায় । বর্তমানে পেইচিংয়ের ছোট- বড় রাস্তায় বিভিন্ন দেশের বৈশিষ্ট্যময় খাবারের রেস্তোরাঁ আছে ।

    কিছু দিন আগে তৃতীয় পেইচিং আন্তর্জাতিক পশ্চিমা খাবার উত্সব অনুষ্ঠিত হয়েছে । ২০০৮ সালের পেইচিং অলিম্পিক গেম্সে প্রস্তুতি নেয়ার জন্য এই উত্সবের আয়োজন করা হয়েছে । চীনের ও বিদেশের প্রায় দু শ'টি রেস্তোরাঁ এই উত্সবে অংশ নিয়েছে । তাই এই উত্সব চীনের রেস্তোরাঁ শিল্পের এক মহা সম্মিলনী বলা যায় ।

    বর্তমানে পেইচিংয়ে মোট ১৩ শ'রও বেশী বিদেশী রেস্তোরাআছে । এই সব রেস্তোরাঁয় রাশিয়া , ফ্রান্স , দক্ষিণ কোরিয়া , জাপান , ভিয়েতনাম ও আফ্রিকার খাবার পাওয়া যায় ।

    বিদেশী খাবার খাওয়ার কথা বললে বেশীর ভাগ পেইচিং নাগরিকের মনে মস্কো রেস্তোরাঁর কথা মনে পড়ে । পেইচিংয়ের অনেকে মস্কো রেস্তোরাঁকে' লাও মো ' ডাকেন । ১৯৫৪ সালে চালু করা এই রেস্তোরাঁ পেইচিংয়ের প্রদর্শনীভবণের পশ্চিম দিকে অবস্থিত । রেস্তোরাঁটির রুশ শৈলীর স্থাপত্যরীতি ও রাশিয়ার রাজপ্রাসাদের খাবারগুলো চীনারা পছন্দ করেন । পেইচিংয়ের নাগরিকরা মস্কো রেস্তোরাঁয় রাশিয়ার খাবার খাওয়ার সুযোগ পাওয়াকে গৌরব মনে করতেন । কেননা এই বিখ্যাত রেস্তোরাঁ অনেকের অতীতকালের স্মৃতি ও রোমান্টিক কাহিনীর সঙ্গে জড়িত । অনেক প্রেমিক-প্রেমিকা এই রেস্তোরাঁয় তাদের স্মরণীয় দিন কাটিয়েছিলেন ।

    পেইচিংয়ে নতুন স্থাপিত কিয়েফ রেস্তোরাঁও বিখ্যাত । এই রেস্তোরাঁ একটি জনবিরল লেনে অবস্থিত হলেও প্রতি দিন অতিথিদের ভীড় জমে । প্রতিদিন ইউক্রেনের বিখ্যাত গায়কগায়িকা সেখানে গান পরিবেশন করেন । কিয়েফ রেস্তোরার পরিবেশ আন্তরিকতাপূর্ণ । একদিন একদল পৌঢ নারী অতিথি ইউক্রেনের গায়কের সঙ্গে গান করেন এবং একসঙ্গে ছবি তোলেন । আমাদের সংবাদদাতা তাদের সাক্ষাত্কার নিয়েছেন । তারা আমাদের সংবাদদাতাকে বলেছেন ,তারা সবই মাধ্যমিক স্কুলের সহপাঠী , তারা স্কুলে রাশিয়া ভাষা শিখেছিলেন। স্নাতক হওয়ার ৪০ বছর পর আবার মিলনের জন্য তারা এই রেস্তোরাঁ বেছে নিয়েছেন । কারণ এই রেস্তোরাঁর পরিবেশ ভালো , গায়কগায়িকারা তাদের ছাত্রজীবনের প্রিয় গান পরিবেশন করেন । এই সব গান শুনে তাদের ছাত্রজীবনের কথা মনে পড়ে । মাদাম সুই আই ছিন যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করেন । এবার কিয়েফ রেস্তোরাঁয় এই ধরনের পরিবেশে সহপাঠীদের সঙ্গে আবার মিলিত হয়ে তিনি মুগ্ধ হয়েছেন । তিনি বলেছেন , আমরা এই সব গান শুনতে শুনতে বড় হয়েছি । মাধ্যমিক স্কুলে পড়ার সময় আমি রুশ ভাষার ক্লাসের প্রতিনিধি ছিলাম । আজকে রেস্তোরাঁর গায়করা যে সব গান গেয়েছেন , আমরা সব গাইতে পারি ।

    মেক্সিম রেস্তোরাঁও পেইচিংয়ের একটি বিখ্যাত বিদেশী রেস্তোরাঁ। পেইচিংয়ে এই রেস্তোরাঁ পশ্চিমা খাবারের প্রতিনিধি বলা যায় । বিশ্ববিখ্যাত পশ্চিমা রেস্তোরাঁ হিসেবে মাক্সিম রেস্তোরাঁর ইতিহাস এক শ' বছর উত্তীর্ণ হয়েছে । এই রেস্তোরাঁর মালিক হচ্ছেন বিখ্যাত পোশাক ডিজাইনার পিয়েরে কার্ডিন । পেইচিংয়ের মাক্সিম রেস্তোরাঁ ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় , এই রেস্তোরাঁ হচ্ছে চীনের সংস্কার অভিযানের পর খোলা প্রথম পশ্চিমা রেস্তোরাঁ । এই রেস্তোরাঁর ভাষ্কর্য , রঙীন কাচ , সুন্দর বাতি আর দেওয়াল চিত্র সব ফ্রান্স থেকে আনা হয়েছে । এই রেস্তোঁরায় প্রবেশ করে অতিথিদের মনে হয় যেন উনবিংশ শতাব্দীর ফ্রান্সের রাজপ্রাসাদে ঢুকেছেন । জানা গেছে , এই রেস্তোরাঁর যে কোনো জায়গায় ছবি তুললে প্যারিসের মাক্সিম রেস্তোরার সঙ্গে কোনো তফাত্ নেই । এই রেস্তোরাঁর পরিবেশ , মৃদু সুর আর কালো রঙয়ের পোশাকপরা ওয়েটার ফরাসী আবহের সৃষ্টি করে। এই রেস্তোরাঁর ম্যানেজার হো কুয়াং ইং বলেছেন , সমাজের যে কোনো পরিবর্তন হোক না কেন , আমাদের উদ্দেশ্য শুধু একটিই , তা' হলো ফরাসী স্টাইলের খাবার ভালো করে তৈরী করা , যাতে পেইচিংয়ে অবস্থানরত বিদেশীরা ও চীনারা বিদেশে না গিয়েই খাঁটি ফরাসী খাবার খেতে পারেন । জানা গেছে , এই রেস্তোরাঁ খোলার প্রথম দিকে অতিথিদের মধ্যে শতকরা ৭০জন বিদেশী ছিলেন , কিন্তু এখন অতিথির মধ্যে শতকরা ৭০জন চীনা । এই রেস্তোরাঁর দাম অপেক্ষাকৃত চড়া বলে সাধারণ নাগরিকরা কম যান । মাক্সিম রেস্তোরাঁর তুলনায় পেইচিংয়ের সাধারণ নাগরিকের চোখে পাইওয়ান চুয়ান ইউয়ান চেন দোকানের হ্যামবার্গার বেশী জনপ্রিয় । গত দশ বছরে সাবওয়ে স্টেশন , খাবার দোকান আর জল খাবার দোকানে এই মার্কার হ্যামবার্গার ও স্যান্ডউইচ পাওয়া যায় । ১৯৯৮ সাল থেকে পাইওয়ান চুয়ান ইউয়ান পেইচিংয়ে পশ্চিমা খাবারের চেন দোকান খুলতে শুরু করে । বর্তমানে পেইচিংয়ে এই কম্পানির মোট ১৬টি চেন দোকান খোলা হয়েছে । ২০০৮ সাল পর্যন্ত পেইচিংয়ে এই কম্পানির চেন দোকানের সংখ্যা ৭৭টি হবে ।

    সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাপানী খাবার ও দক্ষিণ কোরিয়ার খাবারও ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে । পূর্ব পেইচিংয়ের ছাও ইয়াং অঞ্চলে ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ একটি ছোট রাস্তায় কয়েক ডজন জাপানী রেস্তোরাঁ আছে । গোটা পেইচিংয়ে জাপানী রেস্তোরাঁর সংখ্যা দু শ'র বেশী । পেইচিংয়ের অনেক নাগরিক জাপানী রেস্তোরাঁর পরিস্কার পরিছন্ন পরিবেশ আর খাবারের রকমারিতা পছন্দ করেন । দক্ষিণ কোরিয়ার হান না সান বার্বেকিউ দোকানের সংখ্যা দশটি , প্রতিদিনই এই সব দোকানে অতিথিদের ভীড় জমে ।

    তা ছাড়া , পেইচিংয়ে স্পেন , মেক্সিকো , ভারত , থাইল্যান্ড , ভিয়েতনাম ও ইতালির খাবরের রেস্তোরাঁও আছে । পেইচিংয়ের পশ্চিমা খাবার সমিতির প্রধান ছেন লি ছুন সাংবাদিকদের বলেছেন , ২০০৮ সালের অলিম্পিক গেমসকে স্বাগত জানানোর জন্য পেইচিংয়ে অর্থবিনিয়োগ করে নতুন রেস্তোরাঁ প্রতিষ্ঠার জন্য এই সমিতি ইতিমধ্যে বিভিন্ন দূতাবাসের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে । জানা গেছে , চীনে নিযুক্ত মেক্সিকোর রাষ্ট্রদূত পেইচিংয়ে একটি মেক্সিকানরেস্তোরাঁ খোলার আশ্বাস দিয়েছেন ।