v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-02-23 15:40:38    
বিশ্বের তিনটি বৃহত্তম জলপ্রপাতের অন্যতম---হুয়াংগোসু জলপ্রপাত

cri
    হুয়াংগোসু জলপ্রপাত চীনের গুয়েচৌপ্রদেশের হুয়াংগোসু দশর্নীয়স্হানে অবস্থিত। এই দশর্নীয়স্থানে বেশ কয়েকটি জলপ্রপাত আছে। হুয়াংগোসু জলপ্রপাত এ সব জলপ্রপাতের মধ্যে সবচেয়ে বড়। এই জলপ্রপাতের চার দিকে আরও আছে অগণ্য ছোট ছোট জলপ্রপাত। যেমন হুয়াংগোসুর ভাটির টোপুটান জলপ্রপাত, হুয়াংগোসুর উজানের লোসট্যান জলপ্রপাত ইত্যাদি ইত্যাদি।

    হুয়াংগোসু জলপ্রপাতের ধারা ৭৪ মিটারে দাঁড়িয়ে প্রায় ২০ তালা ভবনের সমান । স্রোতস্বিনী নদীর পানি পাহাড়রের শৃংগ থেকে দ্রুত গতিতে পড়ে যায়। পাথরের সঙ্গে পানির আঘাতের আওয়াজ অনেক দূর থেকে শোনা যায়। জলপ্রপাতের চার দিকে ধোঁয়ার মত পানির বাস্পে আচ্ছন্ন। জলপ্রপাত থেকে ৫০ থেকে ৬০ মিটার দূরে থাকলেও জলপ্রপাতের ছোড়ানো পানি পযর্টকদের জামা-কাপড় একেবারে ভিজে করে। হুয়াংগোসু জলপ্রপাতে আসার পর অনেক পযর্টকের মনে প্রায় একটি প্রশ্ন উঠে। এই প্রশ্ন হল হুয়াংগোসু জলপ্রপাতের নাম কিভাবে দেওয়া হয়েছে? এই জলপ্রপাতের নিকটবর্তী জায়গায় কি ফুলের উদ্যান আছে? কারণ গোসু চীনা ভাষার অর্থ হল ফুল গাছ। এ প্রসঙ্গে হুয়াংগোসু জলপ্রপাতের গাইড জেন সিও শিয়েন ব্যাখ্যা করে বলেছেন, অনেক পযর্টক মনে করেন এই জলপ্রপাত নিশ্চয়ই কোন এক ধরনের ফুলের সঙ্গে সম্পর্কিত। আসলে তাই। এখানে হুয়াংগো নামে ফুল গাছ প্রচুর আছে। এই ফুল দেখতে খুব একটা কামলালেবুর মতো। এই ফুলের খোসা হলুদ , খেতে একটু তক লাগে। স্থানীয় লোক এই ফুল গাছকে হুয়াংগোসু ডাকে। হুয়াংগোসু জলপ্রপাত এই গাছের নাম থেকে নামকরণ করা হয়েছে।

    বিশ্বের বিখ্যাত জলপ্রপাতের তুলনায় জলের পরিমাণ হোক . জলপ্রপাতের আকার হোক হুয়াংগোসু জলপ্রপাত খুব বড় নয়। কিন্তু হুয়াংগোসু জলপ্রপাতের বৈশিষ্ট্য এই যে, পযর্টকরা সরাসরি পাহাড়ের গুহারে ঢুকতে পারেন এবং পিছনের দিকে জলপ্রপাতের দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন। এই গুহা জলপ্রপাতের মাঝারি অংশে অবস্থিত। গুহার দৈর্ঘ একশাতাধিক। গুহাতে ছ'টি ছিদ্র আছে ।এ সব ছিদ্র দিয়ে লোকেরা কেবল জলপ্রপাতের পিছনের দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন তাই নয়, জলপ্রপাতের সঙ্গে 'আন্তরিক স্পর্শও' করতে পারেন। পৃথিবীতে এটা অদ্বিতীয়।পেইচিং থেকে আসা পযর্টক মিস হান বলেছেন, যখন গুহার ভিতরে চলে যান তখন ' পশ্চিম যাত্রার' কথা তার মনে পড়ে। এই নাম-করা উপন্যসের প্রধান নায়ক বানর রাজা সেন উ খন ঠিক এ ধরনের গুহাতে থাকতো। তিনি বললেন,

    আমি যে সব জলপ্রপাত দেখেছি সেগুলোর মধ্যে হুয়াংগোসু জলপ্রপাত সবচেয়ে সুন্দর। হুয়াংগোসু জলপ্রপাতের সুয়েলিনডং অথার্ত পানির পর্দাসবচেয়ে সুন্দর জায়গা। ঐ জায়গা থেকে জলপ্রপাতের সমস্ত দৃশ্য দেখা যায়। মনে হয় বাইরের জলপ্রপাত এই গুহার পর্দা। মিস হান বলেছেন, জলপ্রপাতের চিত্তাকর্ষক দৃশ্য দেখে মানুষ আপনাআপনি মুগ্ধ হয়। কিন্তু যদি জলপ্রপাতের ভিতরে বেড়াতে যান তাহলে আপনাকে একটু সাহাস থাকতে হবে। পযর্টকরা হুয়াংগোসু জলপ্রপাতে পরিদর্শন করতে আসলে সশরীরে এই জলপ্রপাতের সঙ্গে স্পর্শ না করে হুয়াংগোসু জলপ্রপাতের আসল রহস্য অনুভব করতে পারেন নি।

    সুয়েলিডং অথবা পানির পর্দা গুহাতে উপস্থিত থাকলে লোকেরা একটি চমত্কার দৃশ্য দেখতে পারেন। প্রত্যেক গুহা থেকে লোকেরা বাইরের নানা রঙিন রংধনু উপভোগ করতে পারেন। মানুষ সামনে এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই রংধনুও আপনাআপনি পরিবর্তিত হয় ঘটে এবং সামনের দিকেও এগিয়ে যায়।

    আপনারা অনুমান করতে পারেন যে , পানির পর্দা গুহার ভিতর থেকে যখন বাইরের রঙিন রংধনু দেখেন এবং জলপ্রপাতেহাত দিয়ে বুলিয়ে দেন তখন কি মজার দৃশ্য! এক জন জাপানী পযটর্ক সংবাদদাতাকে বললেন, বতর্মানে পৃথিবীতে তিনটি বড় জলপ্রপাত আছে। এর আগে আমি তিনটির মধ্যের দুটো পরিদর্শন করেছি। কিন্তু হুয়াংগোসু জলপ্রপাত দেখার পর আমি মনে করি, হুয়াংগোসু জলপ্রপাত অন্য দুটো জলপ্রপাতের চাইতে কম সুমহান নয়। এখানকার জলপ্রপাত জলপ্রপাতের পিছনের পাথর গুহা দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। এই ধরনের জলপ্রপাত পৃথিবীর যে কোন দেশে দেখতে পাওয়া যায় না।

    দু:খের ব্যাপার হল, যে এলাকায় হুয়াংগোসু অবস্থিত থাকে সে এলাকা হল লাভা ভূ-সংস্থা । সুতরাং পানি সহজেই চলে যায়। সুতরাং বছরে জলপ্রপাতের পানি জমা রাখা একটু কঠিন। এখন অর্ধেক বছরে এই জলপ্রপাতের পানি বৃষ্টিপাতের উপর নির্ভর করা হয়, অর্ধেক বছরে অন্য জায়গা থেকে আনা হয়। এ সব উপাদান কোনো না কোনভাবে হুয়াংগোসু জলপ্রপাতের সৌদ্যর্য কমিয়ে দিয়েছে।