v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-02-20 13:33:41    
পোষ্য প্রাণীদের রোগ থেকে রেহাই পাওয়ার পদ্ধতি

cri
    এখন বাড়িতে কুকুর ও বিড়ালের মত পোষ্য প্রাণী পালনকারী মানুষ ক্রমেই বাড়ছে। প্রাণীদের সঙ্গে খেলাধুলার আনন্দ উপভোগ করার সঙ্গে সঙ্গে তাদের কাছ থেকে রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও উপেক্ষা করবেন না। পোষ্য প্রাণীরা কি কি রোগ মানুষের কাছে এনে দিতে পারে? রোগ প্রচলনের পদ্ধতি কি? লোকেরা আবার কিভাবে এগুলো রোগ থেকে নিজেকে রক্ষা করবেন?

    সম্প্রতি ৬০ বছর বয়স্ক ছিন লিয়াংয়ের শ্বাস-নিশ্বাস একটু কঠিন হয়ে পড়ে। তিনি হাসপাতালে এক্স-রেই পরিক্ষা করে জেনেছেন যে, তাঁর ফুসফুসে প্রদাহ দেখা দিয়েছে এবং তার রক্তে পাখির সঙ্গে জড়িত এন্টিজেন আছে। মিস্টার ছিন একটি তোতাপাখি পালন করছেন বলে তাঁর এই সমস্যার হয়েছে। তোতাপাখির ডানায় সবসময় এপিফাইট আছে, উড়ার সময়ে এপিফাইটগুলো বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। মিস্টার ছিন এ এপিফাইট শ্বাস করে ফুসফুসে প্রদাহ দেখা দিয়েছে।

    মিস্টার ছিনের মতো মানুষ আরো অনেক আছে। পেইচিংয়ের হাসপাতালে এমন বহু রোগী এজন্যে চিকিত্সা নিয়েছেন। জানা গেছে, মানুষের আক্রান্ত রোগের মধ্যে প্রায় এক'শটি পোষ্য প্রাণীর সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে বিশটি রোগ সচরাচর দেখা যায়। এর মধ্যে রয়েছে জলাতঙ্ক, তোতাপাখি জ্বর ইত্যাদি।

    এ রকম রোগ আপনি উপেক্ষা করবেন না, তা মানুষের জন্যে গুরুতর পরিণতি ডেকে আনতে পারে। যেমন সার্স ও বার্ড-ফ্লু মানুষের জন্য বিরাট ক্ষতি এনে দিয়েছে। পশুরা প্রধানত চারটি পদ্ধতিতে লোকদের মধ্যে রোগ ছড়িয়ে দেন। এ সম্বন্ধে চীনের রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের গবেষক শাং তে ছিউ বলেছেন:

    "ভিন্ন রোগ ছড়িয়ে পড়ার পদ্ধতিও ভিন্ন। প্রাধনত চারটি পদ্ধতি রয়েছে। সেগুলো হল শ্বাস-প্রণালি, খাদ্যপ্রণালী, ত্বকের শ্লেষ্মল এবং মানুষের রক্ত খাওয়া কীটপতংক।"

    শ্বাস-প্রণালির মাধ্যমে প্রচলিত সবচেয়ে নিদর্শনমূলক রোগে হচ্ছে তোতাপাখির জ্বর। এই রোগে আক্রান্ত হলে গুরুতর জ্বর, কাশি, বুক ব্যথা এমনকি ফুসফুসের প্রদাহও হতে পারে। অন্যান্য পাখির মাধ্যমেও তা লোকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

    খাদ্য প্রণালীর মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া নিদর্শনমূলক রোগ হচ্ছে টাইফয়েড। প্রধানত পশুদের মলমূত্রে দুর্ষিত খাদ্য ও জল খাওয়ার কারনে লোকেরা এই রোগে আক্রান্ত হন। তার প্রধান লক্ষণ হলো পেটব্যথা, জ্বর ইত্যাদি।

    ত্বকের শ্লেষ্মলের মাধ্যমে আক্রান্ত রোগ প্রধানত জলাতঙ্ক। এই রোগে আক্রান্ত বিড়াল ও কুকুর মানুষকে কামড়ে দিলে বা আঁচড় দিলে ভাইরাস লোকদের গায় ছড়িয়ে পড়ে। এই রোগে আক্রান্ত হলে লোকদের জ্বর হয়, সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা, আলো এবং আয়ু ভয় লাগে।

    মাধ্যম কীট-পতংগের মাধ্যমে আক্রান্ত সবচেয়ে গুরুতর রোগ হচ্ছে প্লেগ। বিড়াল ও কুকুর প্লেগের মাইক্রেববাহী ইঁদুর খেলে প্লেগের মাইক্রোব তাদের দেহে জমে থাকবে। উপমক্ষিকার মত রক্তচুষী পতংগের মানুষ মধ্য প্লেগ ছড়িয়ে পড়তে পারে।

    এ সব দৃষ্টান্ত থেকে বোঝা যায়, পোষ্য প্রাণী পালনের সময়ে আমাদের ভালোভাবে তাদের দেখা শোনা করা প্রয়োজন। কিন্তু আসলে অনেক লোক জানেন না যে কিভাবে নিজেদের রক্ষা করা উচিত। মাদাম কুও কয়েক বছর ধরে একটি কুকুর পালন করে আসছেন। তাঁর রোগ রোধ করার প্রধান ব্যবস্থা হলো কুকুরকে স্নান করান। তিনি বলেছেন:

    "আমি সব সময় কুকুরকে স্নান করাই। প্রতি সপ্তাহে এক বার। সাধারণত দামী শেম্পু দিয়ে তাকে পরিষ্কা করি। আমি মনে করি এমন হলে আর কিছু সমস্যা হবে না।"

    আসলে শুধু স্নান করা যথেষ্ট নয়। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, নিয়মিত স্নান করা ছাড়াও পোষ্য প্রাণীদের লোম পরিষ্কার করতে হবে, তাদের থাকার জায়গা রোগজীবাণুনাশক করা, এবং তাদের মলমূত্র নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। পোষ্য পশুদের অবস্থা সর্বদাই পর্যবেক্ষণ করা উচিত। যদি তারা দেখতে নিস্তেজ অথবা অতি উত্তেজিত হয়, তাহলে সম্ভবত তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাছাড়া, যদি তাদের লোম ম্লান হয়ে যায় এবং খাওয়ার সময় লালা পড়ে তাহলে তাদের বিশেষ যত্ন নিতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে পশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ার লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে তাদের পশুচিকিত্সকদের কাছে পাঠাতে হবে।

    পোষ্য পশুদের রক্ষা করার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের রক্ষা করাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। চীনের রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের গবেষক ওয়াং ছেং সিন বলেছেন:

    "প্রথমে ব্যক্তি বিশেষ ও বাড়িকে নিয়মিত পরিষ্কার রাখা উচিত। দ্বিতীয়ত পশুদের সঙ্গে অতি সনিষ্ঠ হলে চলবে না। পশুদের মানুষের হাতে ও মুখে চুমু দিলে চলবে না। এবং ঘুমানোর সময়ে পশুদের কোলে নিলে চলবে না। তৃতীয়ত লোকের জলাতঙ্গ টিকার মত কিছু টিকা নিতে পারেন।